লেখক-কৃত্তিবাস ওঝা,ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক।
বাংলাদেশে নাকি ভারতের মতো সাম্প্রদায়িক নোংরামি নেই। দেশভাগের সময় হিন্দু নামধারী সেক্যুলার নেতারা চেয়েছিল, গোটা পশ্চিমবঙ্গকে পাকিস্তানে বিলীন করে দিতে। রুখে দাঁড়িয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। যোগেন মণ্ডল ও জ্যোতি বসুরা যখন পাকিস্তানীকরনেআংশিক সফল, তখন ডাইরেক্ট একশনের খুনি মুসলিম লীগ নেতারা, নেতাজীর আগ্রজ শরৎ বসুকে পাঠিয়েছিলেন জহরলাল নেহেরুর কাছে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অবিভক্ত বাংলাকে আপনারা স্বাধীন রাখবেন! পার্লামেন্টে মুসলিম লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ। আপনাদের মাথায় হাত বুলিয়ে ওরা অবিভক্ত বাংলা স্বাধীন বানিয়ে নিক; তারপর দেখবেন, স্বাধীন বাংলার প্রথম সংসদ অধিবেশনেই মুসলিম লীগ এমপিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অবিভক্ত বাংলাকে পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব পাস করিয়ে নিয়েছে…”
দেশভাগ
শরৎ বসু ক্ষুন্নমনে কলকাতায় ফিরে এলেন। পাকিস্তান না পেয়ে অসন্তুষ্ট বাংলার সমস্ত সেক্যুলার ও কমিউনিস্ট নেতারা। অগত্যা বিভক্ত বাংলায় পূর্ব পাকিস্তান কায়েম করে, সেক্যুলার নেতারা আনন্দে নাচানাচি করলো। কিন্তু বিধি বাম! যোগেন মণ্ডল – জ্যোতি বসুর মতো দালালরা পর্যন্ত পারলেন না পাকিস্তানে টিকে থাকতে। কার্যসিদ্ধির পর সমস্ত হিন্দু নামধারী সেক্যুলারদের পশ্চাৎদেশে লাথি মেরে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বের করে দিল, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা।ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক নির্যাতনে হিন্দুদের জন্য নরক হয়ে উঠলো পূর্ব পাকিস্তান। জীবন এবং নারীর সম্ভ্রম রক্ষা করতে বিষয়-সম্পত্তি সমস্ত কিছু ফেলে, হিন্দুরা চলে এলো পশ্চিমবঙ্গে। বাংলা ভাগ করে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যদি পশ্চিমবঙ্গ সৃষ্টি না করতেন, তাহলে পশ্চিম বঙ্গ থেকেও হিন্দুদের ওভাবেই তাড়ানো হতো – যেভাবে তাড়ানো হয়েছে পূর্ববঙ্গ থেকে।
সেকুলার
হিন্দু নামধারী সেকুলাররা আজও পাকিস্তানের মোহ ত্যাগ করতে পারে নি। আজও তারা সমানে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে – কিভাবে পশ্চিমবঙ্গকে পাকিস্তানে বিলীন করা যায়।
অমর্ত্য সেনের কথাই ধরুন; হিন্দুদের গণপিটুনিতে যদি কোন বিধর্মী গরু চোরও মারা যায়, এই ভদ্রলোক খুন খুনে বুড়ো বয়সেও গালি দিতে দিতে পৃথিবীর এমাথা থেকে ওমাথা করে বেড়িয়ে হিন্দু জাতির চরিত্রহনন করেন। অথচ এই ভদ্রলোক পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু গণহত্যা সম্পর্কে ছিলেন সম্পূর্ণ নীরব। কাশ্মীর থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দুকে মেরে-কেটে-ধর্ষণ করে তাড়িয়ে দেওয়া হলো, তখন ঔসব সেক্যুলার বুদ্ধিজীবীদের মুখে মুচকি হাসি।
অমর্ত্য সেনের বাপ-দাদারা, ঢাকা ও মানিকগঞ্জের কোটি কোটি টাকার বিষয়-সম্পত্তি ফেলে প্রাণ বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন।এই বেহায়া লোকটা মুখ বাঁকিয়ে বাঁকিয়ে বলেন, বাংলাদেশে নাকি ভারতের মতো সাম্প্রদায়িক নোংরামি নেই। বাংলাদেশে যদি সাম্প্রদায়িক নোংরামিই না থাকে, তাহলে সেখানে হিন্দু জনসংখ্যা ২৩% থেকে ৮%-এ নেমে এলো কেন? আর ভারতে যদি সাম্প্রদায়িক নোংরামিই থাকবে, তাহলে ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা ৮.৫% থেকে বেড়ে ১৫% হলো কিভাবে? তার মানে ভারতের সাম্প্রদায়িকতা হচ্ছে, উনাদের মতো নোংরা মানসিকতার মানুষদের অপপ্রচার।
পশ্চিমবঙ্গের সেক্যুলাররা ‘মিনি পাকিস্তান পক্ষ’ – তৈরি করে, সরাসরি পূর্ব পাকিস্তানের মতো ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিচ্ছে। এটা প্রচ্ছন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী উস্কানি। এই সেক্যুলাররা হিন্দিভাষীদের তাড়ানোর জন্য আন্দোলন করেছে, অথচ কলকাতা উর্দু নগরী হয়ে গেল – উর্দুর বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটিও করেনা, ওই সমস্ত তথাকথিত বাংলা-দরদি সেক্যুলাররা।
রোহিঙ্গাদ নাগরিকত্ব
পশ্চিমবঙ্গ-কে পাকিস্তানে পরিণত করতে সেক্যুলাররা যে সুদূরপ্রসারী সুগভীর ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়েছে – এই চক্রান্ত-জাল ছিন্ন করে পাকিস্তানিকরনের কবল থেকে বাঙালি হিন্দুদের রক্ষা করার একটাই উপায় আছে; উপায়টি হচ্ছে, হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধভাবে সেক্যুলারদের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে।
সেক্যুলারদের যদি ক্ষমতার বাইরে রাখা যায়,তাহলে তারা আর ‘জয় শ্রীরাম’ – বললে হিন্দুর টুঁটি চেপে ধরতে পারবে না; সনাতন ধর্ম শিক্ষার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবে না। সেই সঙ্গে এমন রাজনৈতিক দলকে নির্বাচিত করতে হবে – যারা অন্তত হিন্দুর কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকা শ্রাদ্ধ করে, একের পর এক জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করবে না।