যে ইতিহাস হয়নি জানা, টিপু সুলতান কি ইতিহাসের নায়ক, না খলনায়ক?

 

কিন্তু এখন করছেন, কারণ আপনাদের টিপু সম্পর্কে শুন্য জ্ঞানের জাগায় ইতি মধ্যে গিদওয়ানি কাহিনী ডুকিয়ে দিয়া হয়েছে। কথাই আছে প্রশ্ন বা সন্দ জ্ঞানের জননী । তাই আমি ধরেই নিচ্ছি যে আপনের মনেই আজ যে প্রশ্ন বা সন্দ তৈরি হয়েছে তা থেকে আর বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন।

 

 

জানি, লন্ডনে গিয়ে আপনার মতন বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের ঐ সকল চিঠি বা বই পুস্তক থেকে সত্য জানা সম্ভব না। তাই সম্ভবত আপনার মনের প্রশ্ন গুলো স্বাভাবিক?এবার যদি আমি বলি আপনাদের মতনি ঐ সকাল লেখকদের রং মাখানো কাহিনী আমাদের মতন চিন্তাশীল মানুষের পক্ষে মানা সম্ভব না।কি ভূল হবে পাঠক? আশা করি বুঝতে পেরেছেন আমি কি বলতে চেয়েছি।

এরার আমি আপনাদের একটা প্রশ্ন করি। যার ঐ সকাল লেখকদের প্রতি বিশ্বাসী তাদের লিখার প্রতি বিশ্বাস করাটা কি আপনাদের ঠিক হচ্ছে? কারণ আপনি নিজেই জানেন আপনার সকল আস্থা মাত্র একটি গ্রন্থর উপর। আপনাদের অন্য কোন গ্রন্থের উপর আস্থা না রাখাটাই স্বাভাবিক নয় কি? ও গিদওযানি কাহিনী আপনার পক্ষে তাই আস্থা রাখা যাবে, তাই না? আমি গায়েলে গান, আর আপনি গায়েলে গগ, তাই না? আমার টা হারাম, আপনারটা আ….বা, বা দারুন।

 

আসুন আপনাদের চিন্তা গুলোকে আমি আর বড় করতে চাই না। সি.এইচ রাও লিখিত “হিস্টোরি অব মাইসোর” গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডটি পড়তে হবে আপনাদের। কিছু করার নেই দাদা, কারণ আপনাদের মনে প্রশ্ন যেহেতু এসেছে। হ্যাঁ “হিস্টোরি অব মাইসোর” পড়লে আপনারা জানতে পারবেন। একটি শিলালিপি কথা, এটি টিপুর লেখা একটি ফার্সি ভাষার শিলালিপি।

যার নাম “সোর্ড অব টিপু সুলতান” আর এই স্থান থেকেই সেক্যুলার গিদওয়ানি নামটাকে কপি করে সামনে “দ্যা” বসিয়ে “দ্য সোর্ড অব টিপু সুলতান” নামে উপন্যাস চালিয়ে দিয়েছে। এই শিলালিপি ছাড়াও আর কয়টি শিলালিপি পাওয়া গিয়েছে। এখন প্রশ্ন শিলালিপি কথা আছে? আগেই বলেছি জানতে হলে “হিস্টোরি অব মাইসোর” গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডটি পড়তে হবে। যাদের আমার কথাই বিশ্বাস না হবে তাদের তো এটুকু কষ্ট করতে হবেই।শুধু কষ্ট করেই তো একটু পড়বেন, কি বলেন?

 

শিলালিপিতে কি লেখা আছে?

সরাসরি শিলালিপি থেকে “আমার জয় গৌরবের তরোয়াল এই দেশের কাফেরদের (হিন্দুদের) ধ্বংস করার জন্য বিদ্যুতের মতো ঝলকাচ্ছে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের প্রভু, কাফেরদের নির্মূল করতে আপনি আমাদের সাহায্য করুন। হে আল্লাহ, আমরা যারা মুহম্মদের সত্য ধর্মকে প্রসারিত করতে চাই, তাদের আপনি জয়যুক্ত করুন।

 

আর যারা মুহম্মদের সত্য ধর্মের বিরোধিতা করে তাদেরকে পরাজিত ও বিহ্বল করুন। তাদের বিরুদ্ধে বিশাল বিজয় হাসিল করতে, হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সাহায্য করুন।”খেয়াল করুন, শিলালিপির প্রথম বাক্যেই লেখা, “আমার জয় গৌরবের তরোয়াল এই দেশের কাফেরদের (হিন্দুদের) ধ্বংস করার জন্য বিদ্যুতের মতো ঝলকাচ্ছে।”

শিলালিপির লিখা বিশ্নেষণ

টিপু সুলতান মজিতদ

শিলালিপি তে “এই দেশের” দ্বারয় টিপু ভারতকে বুঝিয়েছে। পাঠক এখানেই টিপুর মানুষিকতা পরিষ্কার হয়ে গেছে। যদি তিনি ভারত কে নিজের দেশ মানতেন তবে অবশ্যই “আমার দেশের” বলত। পরিষ্কার লিখা তার তরোয়ল কাফের অর্থাৎ হিন্দুদেরকে ধ্বংস করার জন্যই।

 

এই শিলার লিখা থেকে আরো যে বিষয় গুলো পরিষ্কার হয়। তা হলো মুসলমানরা যে ভারতে বহিরাগত আরোব ঝাণ্ডা ধারি, তাদের লক্ষ্য একমত্র ভারতের হিন্দুদের মুসলিম বানানো বা খতম করা। আর এই সত্যতা বুঝার জন্য বেশি কষ্ট করতে হবে না। শুধু বাংলাদেশ আর পাকিস্থানে দিকে তাকান, তাতেই তাদের মানসিকতা দেখে বুঝতে পারবে। প্রেসিডেন্ট কালাম বা সম্রাট আকবর এদের কে তো চেনেন? দেখবেন মুসলিম সমাজে এদের কোন দাম বা কদর নাই।

 

 

কদর না থাকার কারণ বুঝার জন্য বেশি কষ্ট করতে হবে না। কারণ এনারা ছিলো অপেক্ষত উদার মুসলিম। যারা হিন্দু বিরোধীতা যথেষ্ট করেনি। আকবর তো নিজেই “দ্বীন-ই-এলাহী” নামে একটি ধর্ম চালু করেছিল। আপনারা যদি লক্ষ্য করেন দেখবেন, বাংলাদেশ এবং পাকিস্থানে টিপুর কদর ব্যপক, কারণটা আর কিছুই না শুধু তাদের হিন্দু বিরোধীতা। তাই “টিপু” শব্দটা আরবী না হওয়া শতেও বংশ পদবী যেটাই হোক, অন্তত লক্ষ্য মানুষের নাম টিপু পাওয়া যাবে। আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নাম তো ভুরিভুরি।

 

উদাহরণ হিসাবে বেশ কয়েকটি বেসরকারী জাহাজের কথা বলা যেতে পারে। তা টিপুর স্মৃতি স্মরণ করে রাখা হয়েছে। পি.এন.এস টিপু সুলতান নামে পাকিস্থান সরকারের একটি যুদ্ধ জাহাজ এবং অস্ত্রও আছে। অতচ এই টিপু নাম বা টিপু সুলতানে সাথে বাংলাদেশ এবং পাকিস্থানে উল্লেখযোগ্য তেমন কোন সম্পর্ক নাই।

আশা করি বুদ্ধিমানদের জন্য ইশারায় ই যথেষ্ট। টিপুর চার স্ত্রীর সহ হেরেমে হিন্দু মেয়ে তো ছিলোই। সেই সাথে আরোব্য কালচার বহুন করে ১৫ পুত্র এবং ৮ মেয়ে সন্তান জন্ম দেন। টিপুর ১৪ নম্বার সন্তান টিপুর নামে কলকাতাই বিখ্যাত “টিপু সুলতান শাহী মসজিদ” স্থাপন করে। যদিও টিপু যে এলেকা জয় করেছে সেই এলেকার হিন্দুদের গনিমতে মাল বানিয়েছিল।

 

তবু ইংরেজরা টিপুর পরজয়ের পরে তার পরিবারকে তেমন কিছু না করে সম্মানে সাথে ভেলোরের একটি দুর্গে বন্দী করে রাখে। দেশপ্রেমিক এবং প্রজা দরদী টিপুকে শুধুই ইতিহাস বইয়ে পাওয়া যায়। বাস্তাবে তিনি কি ছিলেন তা মনে হয় আর বলার দরকার নাই। যুক্তিছাড়াই অন্ধের বিশ্বাস যাদের একান্ত অনুচেতনা তাদের কাছে টিপুর হিন্দুদের হত্যা,ধর্ষন,অপহরন,ও জোর পূর্বক ধর্মান্তরিত ইত্যাদি আশা করি অলিক গল্পে ছাড়া আর কিছু মনে হবে না। ধন্যবাদ

লেখক- অভিরুপ বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিহাস এবং ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

(লেখাটি দায়ভার সম্পূণ লেখকের)

লেখাটি পড়ার পর অবশ্যই লাইক করতে ভূলবেন না।

সূত্র:-

https://www.outlookindia.com/magazine/story/the-tyrant-diaries/284803

https://kolkata24x7.com/violation-spread-in-karnataka-on-tipu-jayanti-issue.html

https://bn.wikipedia.org/wiki/টিপু_সুলতান

https://www.youtube.com/watch?v=PdZVWUqPR5k

https://bn.wikipedia.org/wiki/টিপু_সুলতান_মসজিদ

www.somewhereinblog.net/blog/massud1/30029612

www.somewhereinblog.net/blog/bengavai/29659066

https://roar.media/bangla/main/history/tipu-sultan-new-perspective/

https://www.anandabazar.com/topic/টিপু-সুলতান

Rule of Tipu Sultan

India history

The Sword of Tippu Sultan

পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-তৃতীয় খণ্ড.pdf/২৮৬ –

টিপু সুলতানের জীবনী-www.Tipusultan.org

হিস্টোরি অব মাইসোর

খন্দকার জাহিদ মুরাদ (সেপ্টেম্বর ১৯৯২)। “ইতিহাস:বাঘ ও টিপু সুলতান”। নতুন ঢাকা ডাইজেস্ট (প্রিন্ট)। ঢাকা। পৃষ্ঠা ৪৫-৪৭।

ধর্ম অবমাননার দায়ে দায়ী, আসিয়া বিবি পাকিস্থানে এক হতভাগীর নাম………………।

ঐতিহাসিক পানাম নগর কি জন্য প্রসিদ্ধ ?