আশীর্বাদ

ধান, দূর্বা ও উলুধ্বনী দিয়ে আশীর্বাদ করা হয় কেন আমাদের সমাজে?

ধান, দূর্বা ও উলুধ্বনী দিয়ে আশীর্বাদ করা হয় কেন আমাদের সমাজে? আশীর্বাদ করার সময় ধান, দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করার রীতি, বহুকাল আগে থেকেই চলে আসছে। সময়ের সাথে সাথে আমরা অনেক আধুনিক হয়ে উঠেছি।

ল্যান্ডফোন চলে গিয়ে হাতে উঠে এসেছে স্মার্টফোন। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস আজ ও অপরিবর্তনীয় রয়ে গেছে।

যুগ যতই পরিবর্তন হোক না কেন আর আমরা যতই আধুনিক হই না কেন হিন্দুদের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে আজ ও ধান দূর্বা দিয়েই আশীর্বাদ করার রীতি প্রচলন আছে।আর যে কোন আধুনিক পরিবারেও ধান দূর্বা দিয়েই আশীর্বাদ করা হয়।কিন্তু এই আশীর্বাদ এর পিছনে কী কারণ তা না জেনে আশীর্বাদ করলে আশীর্বাদের কোন মূল্যই থাকে না।

হিন্দুদের বিভিন্ন মাঙ্গলিক অনুষ্টানে কেন ধান-দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করা হয় এই বিষয়ে বিভিন্ন মানুষের মনে বিভিন্ন রকমের কৌতুহল দানা বাঁধে। তাই এই বিষয়েই আজকের প্রতিবেদনে সবিস্তারে আলোচনা করা হলো।

ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ রয়েছে সেটি কী জানেন?

কেন ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়?

প্রাচীন আর্যসমাজে ধানই ছিল ধন-সম্পদের প্রতীক। আর এখনও বর্তমান ভারতীয় সমাজ কৃষিপ্রধান তাই কৃষকদের প্রধান সম্পদই ধান। অন্যদিকে দূর্বা হচ্ছে দীর্ঘায়ুর প্রতীক।

দূর্বা সহজে মরে না,প্রচন্ড রোদ বা বর্ষায় পঁচে গেলেও আবার দূর্বা বেঁচে ওঠে। আর একারণে দূর্বার আরেক নাম অমর।ধান-দূর্বা মস্তকে দেওয়ার অর্থ হলো সম্পদশালী ও দীর্ঘায়ুর আশীর্বাদ দেওয়া। কিন্তু যিনি আশীর্বাদ করবেন তিনি এই প্রতীকের মর্ম না বুঝলে এই আশীর্বাদ আনুষ্ঠানিকতায় পর্যবসিত হয়।

তাই, আশীর্বাদ করার সময়, ধান, দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করার মাধ্যমে, যাঁকে আশীর্বাদ করা হচ্ছে, তাঁর সম্পদশালী জীবন এবং সুদীর্ঘ জীবনের কামনা করা হয়।

ধান, এবং দূর্বাকে, এই শুভ কামনার প্রতীক হিসেবেই মানা হয়।

ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ
ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ

উলুধ্বনী

উলুধ্বনী হল সনাতন ধর্মের একটি মাঙ্গলিক ধ্বনি। সকল মঙ্গল জনক কাজের শুরুতে বা শেষে উলুধ্বনি দেওয়া হয়। উলু ধ্বনি শুনে বোঝা যায় কোন মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। এটি মহিলাদের সৃষ্ট ধনী। যেমন মুসলমানদের আজান শুনলে বোঝা যায়। নামাজের সময় হয়ছে বা বিশেষ বিশেষ সময় আজান দেয়া হয়। তদরুপ সনাতন ধর্মে উলুধ্বনি দিয়ে মাঙ্গলিক অনুষ্টানাদি বুঝানো হয়।

কোন কোন ক্ষেএে উলুধ্বনী সংকেতেরও কাজ করে যা থেকে অনুষ্ঠানের প্রকৃতি সম্পর্কে দূর থেকে অনুমান করা যায় যেমন পার্শ্ববর্তী কারো বাচ্ছা ভূমিষ্ট, বিয়ে, গায়ে হলুদ ইত্যাদি উলুধ্বনীর মাধ্যমে জানা যায়।

আমরা সনাতনীরা কোন কারন ছাড়া কিছু করি না। যা কিছু করি প্রতিটির কারণ উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য আছে। তাই এই তাৎপর্য্য গুলো জেনে ও বুঝে যদি আর্শীবাদ করা হয় বা যে কোন মাঙ্গলিক অনুষ্টানগুলো করা হয় , তখনই আর্শীবাদ বা মাঙ্গলিক কার্যাদি সার্থক হবে।

আর পড়ুন….