“হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠিত হলো, ইন্দোনেশিয়ায় সরকারী ভাবে।

বিশ্বের বহু দেশে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ দেখা যায়। এমনকি বর্তমান ভারতবর্ষের বহুসংখ্যক ইসলামী স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে বিশ্বের কোন দেশে  ইসলাম বাদে ধর্মভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় দেখা যায় না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের সবচাইতে বৃহত্তম মুসলিম  দেশ ইন্দোনেশিয়াতে সর্বপ্রথম বিশ্বের প্রথম ভারতবর্ষের বাইরে হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

 

এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায় এদিকে তাদের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে দেখছে। এখানে ছোট্ট করে বলে রাখা দরকার আফগানিস্তান থেকে ইন্দোনেশিয়া এই অংশটা একটা সময় সনাতন সভ্যতার পূণ্যভূমি ছিল। এখনো ইন্দোনেশিয়া বালিতে মেজরিটি পার্সেন্ট হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক বাস করে।

এখানে বলে রাখা ভালো বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাজে হিন্দু সম্প্রদায় থেকে বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন। তবে ইন্দোনেশিয়ার তাদের পূর্বপুরুষের  সংস্কৃতিকে ভুলে যায়নি। তাই তারা এখনও তাদের পূর্বপুরুষের সেই ধর্মের অস্তিত্ব ধারণ করে চলেছে।

 

ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো “জোকোভি” উইদোডো (Joko “Jokowi” Widodo) একটি প্রেসিডেন্সিয়াল রেগুলেশন (পেপারস ) জারি করেছেন যা বালির ডেনপাসার হিন্দু ধর্ম স্টেট ইনস্টিটিউটকে (আইএইচডিএন) দেশের প্রথম হিন্দু রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করেছে। এই বিধিমালায় বলা হয়েছে যে আই গুস্তি বাগস সুগ্রিভা স্টেট হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএনএইএন)/ I Gusti Bagus Sugriwa State Hindu University (UHN) নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি “হিন্দুদের জন্য উচ্চশিক্ষার পথ উন্মুক্ত করবে “। 

সেই সাথে হিন্দুদেন উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি অন্যান্য ধরণের আধুনিক উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত করবে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কার্যকর করা প্রবিধানের মাধ্যমে, মূলত আই এইচ ডি এন সমস্ত শিক্ষার্থী ইউএনএইচ শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। সেই সাথে আই এইচ ডি এন  ইনস্টিটিউটের সমস্ত সম্পদ এবং কর্মচারী নবগঠিত  ইউএনএইচ  বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়েছে ।

 

“নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি পেপারসের  মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার থেকে ইতিমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর সুডিয়ানা বলেন, আমি খুব খুশি এবং কৃতজ্ঞ সরকারের প্রতি,” শুক্রবার আইটিএইচডিএন রেক্টর আই গুস্টি নাগুরাহ সুদানা ইনস্টিটিউটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলেন।

 

হিন্দু ধর্মের শিক্ষকদের জন্য রাষ্ট্রীয় একাডেমী হিসেবে 1993 সালে এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু হয়। সেই ধারাবাহিকতা ধরে 1999 সালে হিন্দুধর্ম টেস্ট কলেজ নাম নামকরণ করা হয়। পরবর্তীতে 2004 সালে আইএইচডিএন বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। তারপরের থেকে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। 2020 সালে এসে এটিকেই রুপান্তরীত করা হলো ।Gusti Bagus Sugriwa State Hindu University (UHN) 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর সুডিয়ানা বলেন,  “Clearly this shows that President Jokowi has given special attention to Hindu educational institutions in Bali in order to improve the quality of our human capital,” he said. “Because of that, we should use this moment to move toward excellent human capital in Bali in the future.”

অর্থাৎ, সুডিয়ানা বলেছিলেন যে এই আইনটি ইন্দোনেশিয়ার হিন্দুদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। “স্পষ্টতই এটি দেখায় যে আমাদের মানব রাজধানীর মান উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রপতি জোকোয়ালি বালির হিন্দু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন।” ” সে জন্যই  আমাদের এই মুহুর্তটি ভবিষ্যতে বালিতে দুর্দান্ত মানব রাজধানীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা উচিত।”

এখানে একটা বিষয় বলে রাখা ভালো ইন্দোনেশিয়ার বালিতে প্রায় ৯০% হিন্দু বসবাস করে। এখানকার সকল ধরনের প্রশাসনিক কাজে হিন্দু কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। ইন্দোনেশিয়ার সবচাইতে আকর্ষণীয় জায়গার মধ্যে বালি অন্যতম। রাজ্যটি আকর্ষণীয় যে সমস্ত স্থাপনা আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুন্দর সুন্দর মন্দির। আমরা জানি বিশ্বের সবচাইতে বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। সেই ইন্দোনেশিয়ার একটা রাজ্যের ৯০% হিন্দু সম্প্রদায় বাস করে। 

 

এটা হয়তোবা আমরা সকলেই কম-বেশি জানি কিন্তু এখানে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটা সম্পর্কে হয়তো আমাদের কারো জানা ছিল না। এই রাজ্যের অপরূপ সৌন্দর্য দেখার জন্য প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী আসেন। ইন্দোনেশিয়ার সবচাইতে আকর্ষণীয় পর্যটক এরিয়া হলো এই বালি। মন্দির ও দেব তোর এই রাজ্যে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ভিজিটর আসে যা, ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কয়েক বছর আগে সৌদি আরবের রাজার দীর্ঘসময় এখানে অবকাশ যাপন করে গিয়েছেন।

তিনি তার ভ্রমণ কালে বালির সব হিন্দু প্রতিমা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু বালির প্রশাসন (হিন্দু) তা অস্বীকার করে। পরে সৌদি বাদশা হিন্দু মন্দির ও প্রতিমা শোভিত বালি ভ্রমণ করে বিমোহিত হন। হিন্দু  একতাই বালির হিন্দুদের সবচেয়ে বড় শক্তি। ইন্দোনেশিয়া সরকার হিন্দুদের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। লেখাটি ভিতরে ভিতরে বিভিন্ন সোর্স দিয়ে দেয়া হয়েছে।

ভালোলাগলে একটি লাইক………………..

 

সূত্রঃ The Jakarta Post