বাংলা সনের প্রবর্তক

বাংলা সনের প্রবর্তক কে? সম্রাট আকবর নাকি রাজা শশাঙ্ক? (পর্ব ১ম)

বাংলা সন বা সালের প্রবর্তক কে?  এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা সবাই এক বাক্যে বলব,সম্রাট আকবর? বাংলা সনের প্রবর্তক সম্রাট আকবার সেই শিশুকাল থেকেই তো পাঠ্যপুস্তকে আমরা পড়ে আসছি । এর পিছনে যুক্তি হিসাবে বলা হয়ে থাকে, ফসল তুলার সময় কর আদায়ের সুবিধার জন্য সম্রাট আকবার বাংলা সনের প্রবর্তন করেছিলেন।

হিজরী ৯৬৩ সনের সাথে মিল রেখে না কি সম্রাট আকবর অনেকটা বাধ্য হয়ে ওই সালকে বাংলা ৯৬৩ হিসেবে ঘোষণা করে। আর তা থেকেই বাংলা সনের সময় শুরু হয়।যেহেতু এই বাংলা সন কৃষকদের ফসল তোলার সময় সম্পর্কে জানার সুবিধার জন্য চালু করেন সেহেতু এই সন কে আবার ফসলী সনও বলা হয়ে থাকে।

ঠিক এই মতটাই আমাদেরকে অনেক দিন ধরে গিলিয়ে মূলধারায় আনার খুব চেষ্টা চলছে। ওপার বাংলার একটা মোটা অংশের লেখক এই মতের পৃষ্ঠপোষক হলেও মজার বিষয় এপার বাংলায় এর মূল পৃষ্ঠপোষক বা মদতদাতারা হলেন বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা।

বাংলা সনের প্রবর্তক
বাংলা সনের প্রবর্তক কে?

বাংলা সনের ইতিহাসে সংরক্ষন

কথায় আছে,যারা ইতিহাসে নিজেকে খুজে পাই না তারা নাকি ইতিহাস ধ্বংস করে। তার বড় উদাহরণ আফগানিস্তানের বামিয়ান। ইতিহাস না জানা বাঙালি আজ নিজস্ব নববর্ষের এই বিকৃত ইতিহাসই সাদরেই গ্রহণ করছে করেছে বলে মনে হয়।  

বাঙালির ইতিহাস  থাকলেও তার সঠিক সংরক্ষনের অভাবে  সেই সাথে সহজলভ্য না হওয়াতেই । আজ বাঙালির তার  নিজের অজান্তেই নিজের মনে ইতিহাস নিয়ে একটা শূন্যস্থান তৈরি করে ফেলেছে। আর ঠিক সেই শূন্যতাকে কাজে লাগিয়ে কিছু জ্ঞানপাপি বুদ্ধিজীবী বাঙ্গালির বঙ্গ সন শূন্য ইতিহাস “আকবর_বঙ্গাব্দের_প্রতিষ্ঠাতা” তত্ত্ব দিয়ে ভরত্তি করতে চাই।

আকবর যে বঙ্গাব্দ প্রচালন করেনি সেটা বুঝবার বা ধরার জন্য আপনাকে বড় ইতিহাসবিদ হতে হবে না। এই কাণ্ডজ্ঞানহীন মিথ্যার পাঁচিল হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়বে যদি আপনার মধ্যে সামান্য তম বোধশক্তি  এবং তার প্রয়োগ জ্ঞান থাকে। আসুন আজ সেই মিথ্যার পাঁচিল ভেঙ্গে চুরমার করে দি।

আমরা জানি পয়লা বৈশাখ বঙ্গাব্দ অনুযায়ী নববর্ষ পালিত হয়। ইংরেজির ১৪ই এপ্রিল আবার কখনো পড়ে ইংরেজির ১৫ই এপ্রিল এই পয়লা বৈশাখ । এবার যদি আমরা দেশের প্রতিবেশি রাজ্য গুলোর দিকে নজর দি। দেখব ঠিক একই সময়ে বিভিন্ন রাজ্যে নববর্ষের উৎসব পালিত হয়।

উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে তামিলনাড়ুতে পুথান্ডু, কেরালাতে যার নাম বিশু, পাঞ্জাবে বৈশাখী, কামরূপে (বর্তমান নাম- আসাম) ভাস্করাব্দ শুরুর উৎসবে পালিত হয় রঙালী বিহু, ত্রিপুরার উপজাতিদের মধ্যে বৈসাগু ইত্যাদি। কি এবার প্রশ্ন আসছে না। ঠিক একই সময়ে প্রায় একই দিনে দেশের এতরকম জাতির নববর্ষ কিভাবে পড়ছে? যদি আকবর কেবলমাত্র বঙ্গাব্দ টুকুই চালু করে থাকেন?

আকবর কেবলমাত্র বঙ্গাব্দ টুকুই চালু করে থাকেন?

আমরা জানি  আকবরের রাজধানী দিল্লির কাছেই পাঞ্জাব  অথচ পাঞ্জাবের বৈশাখী-র প্রচলন আকবর করেছেন, এমন কোন মত প্রচলিত নেই। মজার বিষয় হলো আকবর  দিল্লি থেকে কাছে  পাঞ্জাবে বৈশাখী চালু না করে উত্তর ভারত বাদ দিয়ে, মধ্য ভারত পেরিয়ে সোজাসাপ্টা বাংলায় এসে বঙ্গাব্দ চালু করলেন কেন?

তার  রাজধানীর কাছের অঞ্চল বাদ দিয়ে বাংলায় কেন? এখানে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল দিল্লি এবং তৎসংলগ্ন উত্তর ভারত এবং মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় বর্ষপঞ্জি হিসেবে বিক্রম সম্বত বা বিক্রমাব্দের ব্যবহার রয়েছে।

আকবর গোটা ভারতের বাদশা হয়ে সম্পূণ ভারতে এক বর্ষপঞ্জি প্রচালোন না করে শুধুমাত্র বাংলার জন্য কেন আলাদা এমন একটা বঙ্গাব্দ চালু করতে গেলেন? দেশের অন্য অংশ কেন নয়? এটাই সাবাকি ভাবে আসে যে কোন রাজা যখন কোন নতুন বর্ষপঞ্জি চালু করবেন, তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই গোটা রাজত্বে জুড়েরই একই বর্ষপঞ্জি চালু করবেন।

অতএব, নিজের রাজত্বের বাকি মোটা অংশের জন্য আকবর রাখলেন একরকম বর্ষপঞ্জি, আর শুধু দেশের মাঝখানে বাংলার জন্য বানিয়ে দিলেন বঙ্গাব্দ- এটা মারাত্মক রকম কষ্টকল্পনা হয়ে যাচ্ছে নয় কি? বিক্রমাদিত্যের  রাজ্যত্ব ভারতবর্ষ ছাড়িয়ে এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ হয়ে এমনকি ইউরোপের কিছু অংশে পৌঁছে গেছিল তাঁর শাসনের সীমা। আর সেই সম্পুর্ন রাজত্বের জন্য বিক্রমাদিত্যের  প্রচলন করেন একটিই বর্ষপঞ্জি, যার নাম বিক্রম সম্বত।

ঠিক মল্লরাজ আদিমল্ল তাঁর গোটা রাজত্বের জন্য প্রচালন করেছিলেন মল্লাব্দ। রাজ ভাস্কর্বর্মন তাঁর গোটা কামরূপ রাজত্বের জন্য যে বর্ষপঞ্জি চালু করেছিলেন, তার নাম ভাস্করাব্দ। এখন আপনি বলতে পারেন, আকবর ব্যতিক্রম হতে যাবেন কেন? কারণ রাজত্বের একেক জায়গায় একেক রকম বর্ষপঞ্জি প্রচালন থাকলে তা তো রাজকর্মচারীদের পক্ষেও দিন গণনা করা মুশকিল হয়ে পড়বে।

ঠিক এই প্রশ্ন গুলো আসাতেই ভিত দুর্বল হতে শুরু করেছে যে “আকবর বঙ্গাব্দ চালু করেছিলেন”। তাই যুক্তিবাদির কাছে  যেহেতু এসব প্রশ্নের কোন গ্রহণযোগ্য উত্তর নাই সেহেতু  “আকবর_বঙ্গাব্দের_প্রতিষ্ঠাতা” তত্ত্বের তাত্ত্বিকরা এখনো মানিয়ে উঠতে পারেননি।

বঙ্গ সন প্রবর্তক কে ছিলেন
বঙ্গ সন প্রবর্তক কে ছিলেন

ইতিহাস থেকে

তবে আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পাই, এক নতুন বর্ষপঞ্জি সত্যই চালু করেছিলেন আকবর । আকবরের সমসাময়িক জীবনী এবং ঐতিহাসিকদের লেখা থেকে যার কথা আমরা জানতে পায়। কিন্তু সেটা বঙ্গব্দ নয়, সেই বর্ষপঞ্জির নাম ছিলো “তারিখ-ই-ইলাহী”! আমরা ইতিহাস ঘেটে দেখতে পাই ,সেই বর্ষপঞ্জির সাথে বঙ্গাব্দের গণনাপদ্ধতির বিন্দুমাত্র মিল নাই।

এমনকি আমরা আকবরের জীবনীমূরক সকল ইতিহাস ঘেটে কোথায় বাংলার জন্য একটি আলাদা বঙ্গাব্দ বর্ষপঞ্জি তৈরি করেছে, তেমন কোন ইতিহাস দেখতে পাই না। আকবর যদি আজ বেচে থাকতেন তবে তিনি নিশ্চয়ই অবাক হতেন, এই ভেবে যে তার মৃত্যুর কয়েক শতক পরে তার রাজ্যত্বের কোন এক প্রান্তে, তার নামে নববর্ষ প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব  কৃতিত্ব তিনি পেয়েছেন।

আকবরের প্রধান রচয়িতারাও আইন-ই-আকবরী’র বিন্দুমাত্র ছিটে ফুটা নাই বঙ্গাব্দ কথা। যার বিন্দুমাত্র জ্ঞান আছে সেও জানে যে, কোন কোন ঘটনা ঘটার পূবে বা আগে  তার ইতিহাস থাকা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। আর সেটা ধরেই যদি দেখি তবে দেখতে পাই আকবরের সম্রাট হওয়ার পূবেই  অথ্যাৎ ১৫৫৬ সালে আগেই বাংলার বিভিন্ন মন্দিরের গায়ে বাংলা সনের প্রতিষ্ঠফলক, শুধু মন্দিরের নয় তৎকালিন বহু পুঁথি বা বইপুস্তকে বাংলা সন ও তারিখের উল্লেখ পাওয়া গেছে।

আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গের মৃন্ময়ী মাতার মন্দির ৪০৪ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠিত যা শুধু আকবর নয়, বখতিয়ার খিলজিরও বাংলা দক্ষলের পূবেই। সাবাবিক ভাবেই  এখন প্রশ্ন আসে, আকবর যদি সত্যই বাংলা সনের প্রতিষ্ঠাতা হন, তাহলে আকবরের  সম্রাট হওয়ার বহু শতাব্দী পূবে মন্দির গাত্রে এবং তাম্রলিপিতে বঙ্গাব্দের উল্লেখ কোথা থেকে এল?

আদৌ কি আকবর বঙ্গ সনে প্রতিষ্ঠিতা কি?

কিন্তু মজার বিষয় হলো, সেই সকাল তাত্ত্বিকদের এসব প্রশ্ন “আকবর_বঙ্গাব্দের_প্রতিষ্ঠাতা”-র বিপক্ষে টলাতে পারেনি। তেনাদের বক্তব্য অনুযায়ী দিল্লির সিংহাসনে বসার পরই সম্রাট আকবর বঙ্গাব্দ চালু করেন। এ বার আসি কেন এই মতের কোন বিত্তি নাই সেই বিষয়ে। ১৫৫৬ সালে সম্রাট আকবর সিংহানে বসেন এবং তার রাজ্যত্ব কাল শেষ হয় ১৬০৫ সালে, আর আমরা আছি ২০১৯ সালে । এবার একটু অংক করে দেখি আদৌ কি আকবর বঙ্গ সনে প্রতিষ্ঠিতা কি?

যদি সম্রাট আকবর ১৫৫৬ সালেই বঙ্গা সন চালু করেন, তাবে ইংরেজি ১৫৫৬ সাল বাংলা ০ সন হওয়া উচিত। আর সেই ভাবেই ইংরেজি ১৫৫৭ সাল বঙ্গাব্দ-১ হওয়া উচিত তাই নয় কি? এবার একটু অংক করে দেখি, ইংরেজি ২০১৯ সাল সমান বাংলা হয় ৫৬৩ (2019-1556= 563) বঙ্গাব্দ।

অথচ আমরা সকলেই দেখলাম ইংরেজি ২০১৯ সালের ১৫ই এপ্রিল পালিত হলো ১৪২৬ বঙ্গাব্দ। ঠিক এবার আপনার মনে প্রশ্ন আসা সাবাবিক নয়কি, তাহলে আকবর বঙ্গাব্দের প্রতিষ্ঠিতা হলে, প্রায় হাজার বছরের পার্থক্য হলো কিভাবে?  কি এবার সেই তাত্ত্বিকরা কি বলবেন, জানি মাথা চুলকানবেন।

জানি এই হিসাবে এত বড় গোঁজামিল আপনাদের ঢাকা সম্ভব নয়। জানি এর বিকল্প পদ্ধতির আশ্রয় ইতি মধ্যে আপনার নিয়ে রেখেছেন। কি সেটা? সম্রাট আকবর নাকি বঙ্গাব্দ চালু করেন ইসলাম ধর্মের আরব্য নবী হজরত মহম্মদের হিজরত সন-এর বছর অনুসারে। হিজরী সাল গণনা শুরু হয়, যখন হজরত মহম্মদ মক্কা থেকে মদিনার দিকে যাত্রা বা হিজরত করেন, সেটা ছিলো ইংরেজি ৬২২ সাল।

এবার একটু অংক করে দেখি, ৬২২ খ্রিস্টাব্দকে যদি ০ বঙ্গাব্দ এবং ৬২৩ বঙ্গাব্দকে বঙ্গাব্দ-১ ধরে সম্রাট আকবর বঙ্গাব্দ  সন গণনা শুরু করেন। তাহলে ২০১৯ সালে হওয়া উচিত ২০১৯-৬২২= ১৩৯৭ বঙ্গাব্দ। অথচ  আমরা ২০১৯ সালে দেখলা ১৪২৬ বঙ্গাব্দ। তাহলে প্রায় তিরিশ বছরের পার্থক্য হলো কিভাবে?

 বঙ্গাব্দ কে চালু করেন
বঙ্গাব্দ কে চালু করেন?

পৃথিবীর সকল সাল চালু হয়েছে ১ থেকে

অনেকেই বলে থাকেন, সম্রাট আকবরা ইংরেজি ১৫৫৬ সাল, হিজরি ৯৬৩ সনকে বঙ্গাব্দ ৯৬৩ সন ধরে বঙ্গাব্দ সন চালু করেন। এখন প্রশ্ন বাংলা সন ১ থেকে শুরু না হয়ে ৯৬৩ থেকে শুরু হবে কেন?পৃথিবীর সকল সাল চালু হয়েছে ১ থেকে আর এক থেকে ১ থেকে শুরু হওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত। যদি সম্রাট  আকবর বাংলা সন চালু করেই থাকে, তবে কেন ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দকেই বঙ্গাব্দ ১ সন হিসেবে ধরে হিসেব করতে অসুবিধে কোথায় ছিল?

এবার দেখি,বাংলা দিন ও মাসের নামগুলো এসেছে ভারতীয় জ্যোতিষ বিজ্ঞানের দেওয়া বিভিন্ন গ্রহ ও নক্ষত্রের নাম থেকে। রবি, সোম বা বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, এই নামগুলো কি সম্রাট আকবরের সময় কাল থেকে প্রচলিত হয়েছে, না অনেক আগে থেকেই ভারতে প্রচলিত আছে?

যদি আকবরের সময় থেকেই এগুলো প্রচলিত হয়ে থাকে, তাহলে মহাভারতে উল্লিখিত মহর্ষি জৈমিনী এবং পরে বরাহ, মিহির, খনার মতো বিখ্যাত জ্যোতিষীগণ কিভাবে এবং কোন ক্যালেণ্ডার অনুযায়ী তাদের হিসেবে নিকেশ করত? এখানে আরো একটা প্রশ্ন থেকে যায়, আরবি হিজরী সন দিয়েই যদি আকবর বঙ্গাব্দ গণনা শুরু করে থাকেন, তাহলে বঙ্গাব্দের গণনাপদ্ধতি হিন্দু সূর্যসিদ্ধান্ত মতে কিভাবে হল?

বঙ্গাব্দের গণনাপদ্ধতির সাথে ইসলামী হিজরী বর্ষপঞ্জির কোন সঙ্গতি নাই কেন?

সম্রাট আকবর হিজরতের মত গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে বঙ্গাব্দ প্রচালন করলেন, সেই বঙ্গাব্দের গণনাপদ্ধতির সাথে ইসলামী হিজরী বর্ষপঞ্জির কিছু সঙ্গতি থাকা উচিত নয় কি।

শুধু এটাই নয়, বঙ্গাব্দের মাসের নাম বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ এবং বারের নাম সোম, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি ইত্যাদি কিভাবে হতে পারে যদি আরবি সন ফলো করে? মাজার বিষয় হলো এই সমস্ত মাসের নাম এবং বারের নাম ভারতের প্রায় সমস্ত রাজ্যের হিন্দু বর্ষপঞ্জিতেই এক।

আমরা জানি হিজরী সন চান্দ্রমাস অনুসারে হয়ে থাকে। কিন্তু সম্রাট আকবর এ কেমন বর্ষপঞ্জি চালু করলেন যার গণনাপদ্ধতি চান্দ্রমাস অনুসারে হল না। বারের নাম কেন শুক্র-শনি থেকে জুম্মা-আল সাবাত হল না, মাসের নামগুলেঅ বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য থেকে মাহে রমজান-রবিউল আওয়াল ইত্যাদি হল না কেন, কেন বঙ্গাব্দের মাস, বার সব কিছুই ভারতের অন্যান্য হিন্দু বর্ষপঞ্জির মতোই রইল? এর বড় প্রমান তামিল নববর্ষ পুথান্দু থেকে মালোয়ালি নববর্ষ বিশু, কামরূপের নববর্ষ ভাস্করাব্দ ইত্যাদি।

সবচেয়ে গুরুত্বপূণ বিষয় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের এতগুলো হিন্দু নববর্ষ একই সময়ে পড়তে পারে। তাহলে, এ কেমন বঙ্গাব্দ প্রচালন করলেন সম্রাট আকবর, যার সাথে কোনকিছুই বাকি ভারতের অন্যান্য রাজ্যত্বে হিন্দু বর্ষপঞ্জির থেকে আলাদা হল নয়। এখন প্রশ্ন হল, কিছু যদি নাই পাল্টায় তাহলে আলাদা বর্ষপঞ্জি তৈরির মানে কি?

দ্বীতিয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

তথ্যসূত্র-

লেখক,

সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়।