আবারো পশ্চিমবাংলা শিক্ষা পর্ষদ বাংলা শব্দের স্থলে আরবি-ফারসী বা বিদেশি শব্দ ব্যবহার করল। যে শব্দের সাথে বাংলা শব্দের কোন মিল নাই। ইতিপূর্বে পশ্চিমবাংলা শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে বাংলা শব্দের স্থলে বিদেশি শব্দের ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। যেমন রামধনু রং এর পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছিল রংধনু রং। পূর্বের এত সমালোচনা সত্ত্বেও আবার একই পথে হাঁটল পশ্চিমবাংলা শিক্ষা পর্ষদ। সামনে আসলো আবারও বাংলা শব্দকে হেওয় করার মতন খবর। খবরটি সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বাঙালিরা এটাকে স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছে না, সেটা সোশ্যাল মিডিয়ার ঝড় থেকে স্পষ্ট। আর দেখতে-(দিদির রাজ্যে রাম এবার বিদেশী আক্রমণকারীর তকমা পেলন, হলেন অসুর।)
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ প্রকাশিত তৃতীয় শ্রেণীর ‘আমাদের পরিবেশ’ বইটির একটি পৃষ্ঠা – বিষয় ‘পোশাক’। এখানে পাঁচজন ছাত্রছাত্রীকে উদ্ধার উদ্ধৃত করা হয়েছে, যাদের তিন জনই নাম মুসলমান(আরবি)। এখানে ”খালু”- নামক আত্মীয় সম্পর্কটির সাথে পরিচিত করানো হয়েছে। যে শব্দটা বাংলা ভাষার অভিধান এর কোন শব্দ নয়। কোনো বাংলা আত্মীয় শব্দ দ্বারা সম্পর্কটির সাথে পরিচিত করানো হয়নি। ২০১১ সালের জনগননা অনুযায়ী পশ্চিম বঙ্গে মুসলমান ২৭% ; অথচ এখানে পাঁচজন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে তিনজনের আরবি-ফারসী শব্দের নাম দেখানো হয়েছে, দু’জনের বাঙলা নাম। অর্থাৎ এর থেকে প্রতীয়মান হয় যে – ছাত্র সংখ্যার ৬০% মুসলমান বা আরবি ফারসি ভাষী,বাদবাকি বাঙালি। যে কারণে সাধারণ সরলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা মনে করবে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের খালু সম্পর্কটি ব্যবহারযোগ্য এবং বলা বাহুল্য যে – হিন্দু ছাত্রছাত্রীরা ‘খালু’ শব্দটির মধ্য দিয়ে বাংলা শব্দ টা হারিয়ে ফেলবে।
ধর্মনিরপেক্ষতার নামে বাঙালি ছাত্রছাত্রীদের মগজ ধোলাই করে বাংলা শব্দ কে পঙ্গু করে দেওয়ার এখানে কেবলমাত্র একটি দৃষ্টান্ত মাত্র। পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে শাসক দল বাঙ্গালীদের অবদমিত করে রাখতে ষড়যন্ত্রের জাল অত্যন্ত গভীরে বিস্তৃত করেছে। কিছুদিন আগে অন্য আরেকটি বইয়ে রামকে অসুর আর রাবনকে ভালো চরিত্রে দেখানো হয়েছে। পশ্চিমবাংলার বামপন্থী সরকার যতটা না 34 বছরে বাঙালির অস্তিত্ব শেষ করার জন্য কাজ করছে তার থেকেও ভয়ঙ্কর বাংলা বাঙালি বিরুদ্ধে কাজ করছে বর্তমান শাসক দল।
দেশভাগের পরে হিন্দুরা একসময় বিশ্বাস করে কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে, কংগ্রেসের প্রতি হিন্দুরা অবিচল আস্থাশীল ছিল। হিন্দুদের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে কংগ্রেস ইমার্জেন্সি দিয়ে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করেছে। সেই ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল হিন্দুদের সাথে চরমতম প্রতারণা। যে ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্ম শিক্ষার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু সংখ্যালঘুদের ধর্ম শিক্ষায় প্রণোদনা দিয়েছে। যার ফলাফল আপনি আমি দেখতে পাচ্ছি আজ। পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলমান ছাত্রছাত্রীদের বিরাট অংশ মাদ্রাসায় পড়ে তারা আধুনিক শিক্ষা বিমুখ। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ছাত্র ছাত্রীরা স্কুল কলেজে ধর্ম শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায় না।
যার ফলে কোন হিন্দু ছাত্র-ছাত্রী দেশ, জাতি নিজের সংস্কৃতি এবং ধর্মের প্রতি গভীর মমত্ববোধ তৈরি হচ্ছে না। এর সুযোগ নিয়েছে শাসক দল। তারা বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব প্রদানের CAA আইনের বিরোধিতা করছে ; ‘বাংলা পক্ষ’ – এর মতো তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো, পশ্চিমবঙ্গ থেকে অবাঙালি হিন্দুদের তাড়ানোর দাবী তুলছে। বাংলাদেশ থেকে আসা বিশাল সংখ্যক হিন্দুর যদি নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া যায় এবং অবাঙালি হিন্দুদের যদি পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাড়ানো যায়, তাহলে হিন্দুরা পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে এবং পশ্চিমবঙ্গকে সহজেই দ্বিতীয় কাশ্মীর-এ পরিণত করা যাবে। পশ্চিমবঙ্গে যেসব অঞ্চলে হিন্দুরা সংখ্যালঘু, ইতোমধ্যেই সেখানে নেমে এসেছে পাকিস্তানী অন্ধকার। কলকাতা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফিরহাদ হাকিম কলকাতাকে ‘মিনি পাকিস্তান’ বলেছেন।
- মনুষত্ব আজ লুন্ঠিত, স্বামীর সৎকারে পেল না পাশের আত্মীয়-স্বজন স্বজাতিকে, স্ত্রী একাই করলো সৎকার।
- দক্ষিণ জার্মানিতে উদ্ধার ৩২ হাজার বছরের পুরনো নৃসিংহ অবতারের মূর্তি।-সোজাসাপ্টা
- বিস্ফোরক কানেরিয়া, আফ্রিদির চক্রান্তের শিকার, তবে কি তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব নেবেন?
- মহাভারতের এই পাঁচটি শিক্ষা প্রতিটি যুগে সত্য প্রমাণিত হয়েছে!-সোজাসাপ্টা
- এক বাঙালির জাপান জয়, জাপান কেন ভারত-বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু?
- কেন শিবের মূর্তি সুইজারল্যান্ডের বিশ্বের বৃহত্তম পরীক্ষাগারের সামনে স্থাপন করা হয়?
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বাঙালি হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য পশ্চিম বঙ্গ নামক রাজ্যটি সৃষ্টি করেছিলেন। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যদি পশ্চিমবঙ্গ সৃষ্টি না করতেন, তাহলে বাঙালি হিন্দুরা এতদিনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। অথচ অবুঝ বাঙালি হিন্দুরা শ্যামাপ্রসাদকে ভুলে গিয়ে দীর্ঘদিন ভোট দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সৃষ্টির বিরোধিতাকারী তথা পাকিস্তান আন্দোলনের অগ্রপথিক জ্যোতি বসুর কমিউনিস্ট পার্টিকে। হিন্দুরা শাসক নির্বাচনে এমন ভুল ও বোকামি করেছে – তার ফলে হিন্দু নামধারী সেক্যুলার শাসকদের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বাধীন ভারতে হিন্দু জনসংখ্যা হার ৭% কমে গেছে। এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে অচিরেই ভারতে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে। ভারতে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মতো ভারতভূমি হিন্দু শূন্য হয়ে যেতে সময় লাগবে না। সুতরাং হিন্দুদের সমস্ত মান-অভিমান ভুলে যে কোন মূল্যে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে, হিন্দুদের প্রতি বৈষম্যমূলক সমস্ত আইন বিলুপ্ত করতে হবে। নতুবা পৃথিবী থেকে মুছে যেতে হবে।
আমাদের পাশে থাকতে একটি লাইক দিয়ে রাখুন..
লেখক-কৃত্তিবাস ওঝা