আবারো,পাকিস্তানে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভয়ঙ্কর চিত্র সামনে আসলো। গুড়িয়ে দেয়া হলো বেশ কিছু বাড়ি।

আবারো পাকিস্তানে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভয়ঙ্কর চিত্র সামনে আসলো। গুড়িয়ে দেয়া হলো বেশ কিছু বাড়ি।  গত কিছুদিন আগে বাংলাদেশের প্রথম সারির পত্রিকা প্রথম আলো লকডাউন এর মধ্যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের একটা চিত্র তুলে ধরেছে। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর করোনা কালীন সংখ্যাগরিষ্ঠদের নির্মম নির্যাতনের চিত্র। ভয়ঙ্কর সেই সমস্ত চিত্র মানুষের মন থেকে মুছে না যেতেই, আবার পাকিস্তানের কাছ থেকে আসলো তার থেকেও ভয়ঙ্কর চিত্র। বিবিসি উর্দু একটা ভিডিও ফাঁস করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে একটা ট্রাক্টর দিয়ে সেখানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

 এই ঘটনা সামনে আসার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার পাকিস্তানের হাইকমিশনারের কাছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে নিয়মমাফিক তাদের আবাসস্থল গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ডিমার্শে দিল ভারত। ডিমার্শেতে পঞ্জাবের বাহাওয়ালপুরের চক ৫২/ডিবি ঠিকানায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ঘরবাড়ি ভাঙার নিন্দা করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে দিল্লির এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন  পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর যে জাতিগত নিপীড়ন চলছে তাতে ভারতের নাগরিক সমাজ বিদ্বজনেরা গভীর উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে সেখানকার সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি বাড়ির মালিক ঘরের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও তা রক্ষার  জন্য দেশের প্রচলিত আইন থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন সেই আইন ভ্রুক্ষেপ না করে টার্গেট করে সংখ্যালঘুদের ঘর গুড়িয়ে দিচ্ছে। করোনা কালিন সময়ে অনেকগুলো সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র পাকিস্তানের থেকে বিশ্বের সামনে উঠে এসেছে। যা দেখে গোটা বিশ্ব স্তম্ভিত। বিশ্ব মানবতা বাদী সংগঠনগুলো এর তীব্র প্রতিবাদ ইতিমধ্যে জানিয়েছে। এরপরও প্রতিনিয়ত পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চলছে।

তিনি আরো বলেছেন, আমরা পাকিস্তানি হাইকমিশনের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছি যাতে দ্রুত সুরাহার জন্য পাকিস্তান সরকারের সংশ্লিষ্ট গোচরে বিষয়টি আনা হয়। পাকিস্তান সরকার যেন দায়দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে সংখ্যলঘু গোষ্ঠীগুলির নিরাপত্তা, সুরক্ষা, তাদের স্বাধীনতা, অধিকার রক্ষায় নজর দেয়। ভারত সরকার কাশ্মীরের 370 ধারা বাতিল এবং রাম মন্দির নির্মাণের আইনি প্রক্রিয়ায় রাম মন্দির পক্ষে গেলে পাকিস্তান সরকার  ভারতের মুসলমানদের উপর নির্যাতন চলছে বলে প্রায়ই উদ্বেগ প্রকাশ করে। অথচ পাকিস্তানের সৃষ্টিলগ্ন থেকেই এখন পর্যন্ত সে দেশের সংখ্যালঘু দিয়েছে সেটা গোটা বিশ্ব জানে।

পাকিস্তানের অভিযোগের মুখে প্রায়ই ভারত উল্লেখ করে যে, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির সময় সেখানকার জনসংখ্যার ২০ শতাংশের ওপর ছিল সংখ্যালঘুরা। কিন্তু ক্রমাগত তা কমতে কমতে এখন মাত্র ৩ শতাংশে এসে ঠেকেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান সম্প্রতি তথ্যানুসন্ধান চালিয়ে বাহাওয়ালপুরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হিন্দুদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর হওয়ার জন্য দায়ী বলে জানায়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, অতীতে নানা সময় হুমকি, ভীতিপ্রদর্শনের পর এমনটা হওয়ার আশঙ্কায় হিন্দু সম্প্রদায় বাহাওয়ালপুর আদালতের বেঞ্চের এক সিনিয়র দায়রা বিচারপতির কাছে পিটিশন দিয়েছিল।

যাতে এই জাতীয় কোনও পদক্ষেপে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তা সত্ত্বেও ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। গত ২০ মে ঘরবাড়ি ভাঙা থেকে বিরত থাকার আদেশ জারি হওয়ার পরও ২৫টি বাড়ি ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হয়, ১০টি অন্য বাড়ি আংশিক ভাঙা পড়ে। ফলে কাচ্চাবাচ্চা সমেত সেখানকার বাসিন্দারা বেঘর হয়েছে। গভীর উদ্বেগ নিয়ে কমিশন বলেছে, হিন্দু সম্প্রদায় এমনিতেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু বলে কোণঠাসা, তার ওপর স্থানীয় জমি মাফিয়াদের স্বার্থরক্ষায় ধর্মীয় কারণে নিশানা করা হচ্ছে তাদের। এই করোনা কালীন সময়ে পাকিস্তান তার স্বভাবসুলভ সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা ভুলেনি। ইতিমধ্যে ধর্মান্তকরণ, জমি দখল, বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া সহ অনেকগুলো বিষয় সামনে এসেছে কোরোনা কালীন সময়ে।