ভারত স্বাধীন হবার পরে জনসাধারণকে ইংরেজ বিরোধী লাণ্ডু এমন ভাবে খায়ানো হয়েছে। যে শুধুই ইংরেজরাই ভারতকে শোষন করেছে বাকি ৮০০ বছর ভারতের জনগন খুব শান্তিতে ছিলো। যার ফলে কি হয়েছে, টিপু যে ইংরেজদের সাথে বুক ফুলিয়ে যুদ্ধ করে মারা গেছে জনসাধারণ এই বিষয় ভালভাবেই গিলেছে। সেই সাথে ৮০০ বছরে পরাধীনতার নাম গন্ধ ভূলিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছে।
পাশা-পাশি একটা মোটা সংখ্যা মানুষকে তার মূল চেতনা থেকে যেহেতু আলাদা করা সম্ভব হয়েছে। সেহেতু এই পরাধীনতার ১০০০ বছরে সেই মানুষ গুলোকে আজ তাদের আপন শিকড়ের বিরুদ্ধে দাড় করাণ সম্ভব হয়েছে।
পূর্ণাইয়া পণ্ডিত
আমি আপনাদের আস্তে, আস্তে নিচেই টিপু হিন্দু বিরোধীতা তুলে ধরব। আমারা যদি মূল কাহিনী দিকে তাকায় দেখব যে কাহিনীতে একজন হিন্দু পণ্ডিত যার নাম পূর্ণাইয়া পণ্ডিত। সমাজে একটা ধারণা আছে যে হিন্দু পণ্ডিরা জ্ঞানি হয় এবং পূবে রাজার তাদের কাছ থেকে শলাপরামর্শ নিতেন। জনসাধারণে সেই দুর্বল ধারণা কে পুঁজি করে লেখক এই পুরো কাহিনীতে পূর্ণাইয়া পণ্ডিকে টিপুর শলাপরামর্শ দাতা হিসাবে দেখিয়েছেন।
কিন্তু বাস্তবিক অর্থে টিপুর সেই হিন্দু বিরোধীতা যদি দেখানো হত তবে এই পণ্ডিতের কোন ভেলু থাকত না। যেহেতু কাহিনীতে হিন্দু বিরোধীতা দেখানো যায়নি তাই যতটা সম্ভব ইংরেজদের বিরোধীতা দেখানোর চেস্টা হয়েছে। আর এটাই হলো এই ধান্ধাবাজির মূল কাহিনী।
নেট দুনিয়া টিপু
আমরা যদি নেট দুনিয়া দেখি, তবে দেখা যায়- উইকিসহ বেশির ভাগ স্থানে একই কাহিনী ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে দেখানো হয়েছে। সে গুলো কি? কত সালে জন্ম, পিতা কে, রাজ্য কোথায় ছিলো,বীরত্বগাতা বীর, বাঘ, গ্রামের নাম, দুর্গ, ভারতের কর্নাটক, মীর সাদিক বিশ্বাসঘাতকতা, যুদ্ধে ১৭৯৯ সালের ৪ মে তিনি নিহত, পরিবারকে দূর্গে বন্দী, প্রিয় পশু, প্রিয় উক্তি, ব্যস এতটুকুই।
কিন্তু টিভির কাহিনীর সাথে বাস্তব কাহিনী সম্পূর্ণ ভিন্ন। আগেই বলেছি হায়দার আলী কি ছিলো আর কিভাবে সেনাপতি থেকে রাজা হলেন। “তোমরা কাফেরদের আনুগত্য করো না” এই লাইনটা কি কখনো শুনেছেন বা পড়েছেন? হ্যাঁ, হায়দার আলী কেবল সেটাই করেছেন।
হায়দার আলীর অনৈতিকভাবে ক্ষমতা দখলে
কোন ভেগ ধারি সেকু-মাকু হায়দার আলীর এই অনৈতিকভাবে ক্ষমতা দখলে কথা বলে না। কারণ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যে দরবেশের দোয়ায় টিপু জন্ম সেই দরবেশ হায়দারকে বলেছিল। তোমার প্রথম ছেলেকে আল্লাহর রাহে কোরবানী করবে? তার উত্তরে হায়দার বলেছিল- হ্যাঁ, আমি তাকে আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করবো। তখন দরবেশ বলেছিল তুমি তা হলে ফিরে যাওয় তোমার ছেলে আল্লাহর খিদমতগার ও ঈমানী ঝাণ্ডা বহন করে সে এগিয়ে যাবে।
যার ফলে কি হয় টিপুকে ছোট বেলা থেকে এমন ভাবে মানুষ করা হয়। সে কেবলি আল্লাহর হুকুম মানবে আর কোন ব্যাক্তির না। এবার আপনাদের কাছে প্রকাশ করার সময় এসেছে টিপু কিভাবে খোদার হুকুম পালন করে। বন্ধুরা আপনারা হয় তো জানেন, আলেকজান্দ্রিয়ারবিখ্যাত গ্রন্থাগার মিশর দখল করে আলী পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিল। পরে সকল মিশরীরা ইসলাম গ্রহন করার ফলে, যে মিশরা ইতিহাসের জ্ঞানে আধার ছিলো,পরে হলো ভিখারী।
আজ যদি আমরা সেই মিশরে দিকে তাকাই তবে দেখি তারা এখনো সেই জ্ঞনের দৈন্য থেকে বের হতে পারিনি। ভূরে গেলে চলবে না এই মিশরীযেদের ৫ হাজার বছর আগে মমি তৈরির মতন জ্ঞান ছিলো, যা আজ শুধুই ইতিহাস। যখন পতাকা পাল্ট নতুন পতাকা ধরল মিশরীরা তার পর থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞান-দর্শনের তার এটাও আর বাতি জ্বালাতে পারেনি।
আরবরাদের দিক জয়
আমরা ইতিহাসে থেকে দেখতে পাই। আরবরা যে জাতীকে জয় করেছে প্রথমে ঐ জাতীকে পূর্বের ইতিহাসকে ভূলিয়ে দিয়া আর সাথে, সাথে আরোব থিক চাপিয়ে দিয়েছে। যাতে করে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম তার পূর্বসূরী ঘৃনা করতে শুরু করে। ঠিক নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস পিছনে বখতিয়ার খিলজির একটাই করণ ছিলো। যারা মনে মূল্য বোঝে না, তারা কি ভাবে বোঝবে জ্ঞানের মূল্য। তাদের কাছে জ্ঞান মানে একক কেন্দ্রকতা। এর বাইরে আর কিছু না।
সব জ্ঞান ওখানেই আছে। যার ফলে তারা মানুষকে নতুন জ্ঞানের সন্ধানে সব সময় বাধা সৃষ্টি করে। এই ধ্বংসলীলা মানুষিকতার কারণে আরোবরা ব
র্তমান মানব সভ্যতাই কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। কেবল তাদেরকেই দেখা যায় ইতিহাসে যারা গ্রন্থ পুড়িয়ে সভ্যতার অগ্রগতিরকে পিছনের দিকে ঠেলে দেয়েছে। আমরা ভারতীয়রা জ্ঞানের জন্য, জ্ঞানের দেবী সরস্বতীর পূজা বা প্রার্থনা করি।আর পশ্চিমেরা জ্ঞানে জন্য এমন প্রার্থনা না করলেও তার জ্ঞানের প্রতি খুবই শ্রদ্ধাশীল।
কেন শ্রদ্ধাশীল বললাম জানেন, কারণ তারা পৃথিবীল বহুদেশ জয় করেও কোন দিন কোন গ্রন্থগার জ্বালিয়ে দেওয়নি। বড় প্রমাণ হলো যে ইংরেজরা ২০০ বছর শাসন করে যে বই তার পেয়েছে তা সংক্ষরণ করেছে। তাই আমাদের অনেক গুরুত্বপূণ বই আমরা পশ্চিমাদের কাছে আজও দেখেতে পায়। এক সাথে ঐ সকাল বই থেকে তারা যেমন জ্ঞান আহরণ করেছে।
তেমন তা ইতিহাসের উপদান হিসাবে রক্ষা করেছে। টিপুর রাজ্যত্ব শেষে হলে ইংরেজরা মহীশূর থেকে অনেক চিঠি,পুস্তক ব্রিটেনে নিয়ে গেছে।তার বেশির ভাগ এখন সংরিক্ষত লণ্ডনের ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরীতে। আর সেই চিঠির মধ্যে থেকে কিছু চিটি কে.এম পানিকর আবিষ্কার করে যাতে টিপুর হিন্দু হত্যার ভংষ্কর ইতিহাস দেখতে পাওয়া যায়।
চিঠি থেকে-
- ১৭৮৮ সালের ২২ মার্চ টিপু তার সেনাপতি আব্দুল কাদেরকে চিঠিতে লেখে, “১২ হাজার এর বেশি হিন্দুকে মুসলমান করা হয়েছে। তার মধ্যে অনেক নাম্বুদ্রী ব্রাহ্মণ আছে। এই সাফল্যের খবর হিন্দুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করা দরকার। স্থানীয় হিন্দুদের মুসলমান করার জন্য তোমার কাছে ধরে নিয়ে এসো। একজন নাম্বুদ্রীও যেন বাদ না যায়।”
- ১৭৮৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর তার এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে টিপু লেখে, “আমি দুজন বিশ্বস্ত লোককে হুসেন আলীর সাথে পাঠাচ্ছি। এদের সাহায্যে সমস্ত হিন্দুদের ধরবে আর হত্যা করবে। যাদের বয়স ২০ বছরের কম তাদের জেলে ঢোকাবে এবং এই সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি হলে বাকিদের গাছের সাথে ঝুলিয়ে দেবে। এটা আমার আদেশ।”
- শূন্য প্রথম আবিষ্কার করেন কে বা কারা?
- যত গপ্পো জুতো নিয়ে।
- জীবনে এমন একটা বই, যার লক্ষ্য পাতা হয়তোবা আপনার এখনো পড়ে ওটা হয়নি।
- শিকড়ের টানে মূলে ফেরার ডাক,করমর্দন ও আলিঙ্গন নয়, অঞ্জলি মুদ্রায় প্রণাম জানানো বিজ্ঞানসম্মত অভিবাদন পদ্ধতি।
- ভারত ভাগের কারণ।
- ১৭৯০ সালের ১৯ জানুয়ারি, কর্মকর্তা বদ্রুস সামান খাঁকে টিপু লেখে, “তুমি কি জানো না যে, সম্প্রতি মালাবারে আমি বিশাল সাফল্য অর্জন করেছি এবং ৪ লক্ষেরও বেশি হিন্দুকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করেছি। আমি খুব শীঘ্রই অভিশপ্ত রমন নায়ারের বিরুদ্ধে অগ্রসর হচ্ছি। এই সব প্রজাদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করাটা জরুরী। তাই আমি বর্তমানে শ্রীরঙ্গপত্তনমে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা আনন্দের সাথে স্থগিত রেখেছি।”
আরো কিছু মন্তব্য দেখা যাক…..
- স্যার হায়াবাদানা রাও তাঁর “হিস্ট্রি অব মহীশূর”- এ লিখেছেন, “১৭৯০ সালের দীপাবলী অর্থাৎ কালীপূজোর সময় এক রাতে টিপু ৭০০ জন হিন্দুকে হত্যা করে।”
- টিপু সুলতানের জীবনী লেখক, এম.এফ.কে.এফ.জি এর মতে, “ত্রিবাঙ্কুরের যুদ্ধে টিপু ১০ হাজার হিন্দু ও খ্রিষ্টানকে হত্যা করে। যুদ্ধের পর ৭ হাজার হিন্দুকে বন্দী করে এবং সেরিনাগাপত্তমে নিয়ে গিয়ে পুরুষদের খতনা করিয়ে এবং নারীদের ধর্ষণ ও পরে সবাইকে গরুর মাংস খাইয়ে মুসলমান বানায়।”
- টিপুর সমসাময়িক লেখক, কিরমানি তার “নিশান-ই-হায়দারী” গ্রন্থে লিখেছেন, “টিপু সুলতান তাঁর জীবদ্দশায় কমপক্ষে ৭০ হাজার বিধর্মীকে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে বাধ্য করায়।”
লেখাটির বাকি অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।৩