ক্ষুদিরাম বসু

ক্ষুদিরাম বসু: অগ্নিযুগের মশাল, যিনি ১৮ বছর বয়সে ফাঁসির দড়িতে চুমু খেয়েছিলেন।

ক্ষুদিরাম বসু: অগ্নিযুগের মশাল, যিনি ১৮ বছর বয়সে ফাঁসির দড়িতে চুমু খেয়েছিলেন। 1889 সালে, 3রা ডিসেম্বরের দিনে, স্বাধীনতা সংগ্রামের অমর সৈনিক ক্ষুদিরাম বসু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। 18 বছর বয়সে ক্ষুদিরাম বসু দেশের স্বাধীনতার জন্য ফাঁসির মঞ্চে চুমু খেয়েছিলেন।

বয়স ছোট কিন্তু চিন্তা বড়

তিনি একবার বলেছিলেন, ‘দাসত্বের চেয়ে খারাপ কোনো রোগ কি হতে পারে?’ ক্ষুদিরাম বোস 18 বছর বয়সে শহীদ হয়েছিলেন কারণ তিনি একটি মুক্ত ও সামগ্রিক ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কল্পনা করুন, 18 বছর বয়সের মধ্যে বেশিরভাগ ছেলে-মেয়ে আজ কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবছে। একটি পার্টি পরিকল্পনা করছে, বন্ধুদের সাথে একত্রিত হবেন। আজ সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ অর্থাৎ কে কোথায় ঘুরছে, কে কার সাথে সেলফি আপলোড করেছে এবং কার ছবিতে কত কমেন্ট এসেছে। আজকের যুবকরা যখন এসব করছে, তখন এই বয়সে ক্ষুদিরাম বসু দেশের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন।

ক্ষুদিরাম বসু  নাম সম্পর্কিত আকর্ষণীয় গল্প

ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মেদিনীপুর শহরের কাছাকাছি (বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা) কেশপুর থানার অন্তর্গত মৌবনী (হাবিবপুর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ত্রৈলোক্যনাথ বসু ছিলেন নাড়াজোলের তহসিলদার। তার মার নাম লক্ষ্মীপ্রিয় দেবী।

তিন কন্যার পর তিনি তার মায়ের চতুর্থ সন্তান। তার দুই পুত্র অকালে মৃত্যুবরণ করেন। অপর পুত্রের মৃত্যুর আশঙ্কায় তিনি তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তার পুত্রকে তার বড়ো দিদির কাছে তিন মুঠো খুদের (চালের খুদ) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল বলে শিশুটির নাম পরবর্তীকালে ক্ষুদিরাম রাখা হয়। ক্ষুদিরামের বয়স যখন মাত্র পাঁচ বছর তখন তিনি তার মাকে হারান। এক বছর পর তার পিতার মৃত্যু হয়। তখন তার বড়ো দিদি অপরূপা তাকে দাসপুর থানার এক গ্রামে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। অপরূপার স্বামী অমৃতলাল রায় ক্ষুদিরামকে তমলুকের হ্যামিল্টন হাই স্কুলএ ভরতি করে দেন।

মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে আন্দোলনে যোগ দেন ক্ষুদিরাম

মাত্র ৬ বছর বয়সে তিনি তার পিতামাতাকে হারান এবং তার লেখাপড়ার খরচ বহন করতেন তার বোন। তিনি যখন ৯ম শ্রেণীতে পড়েন, তিনি ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিপ্লবী সংগঠন ইয়ুঙ্গাতার পার্টিতে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নেন এবং দেশের স্বাধীনতার জন্য তার পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দেন। সে সময় ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন সংগঠিত হয়, যার অধীনে বিদেশী পণ্যের পোড়ানো হয়।

সংবাদপত্র পড়ার উদ্দেশ্য

স্বাধীনতার পর সংবাদপত্রের কলমও মাথা নত করতে থাকে নেতাদের সামনে। কিন্তু স্বাধীনতার আগে তখনকার দিনে সংবাদপত্র মানুষের মনে বিপ্লবের আগুন জ্বালিয়ে দিত। ক্ষুদিরাম বসু এবং তাঁর অন্যান্য বিপ্লবী সঙ্গীরা প্রায়ই ইংরেজ অফিসারদের কাছ থেকে লুকিয়ে এক জায়গায় জড়ো হতেন এবং আজকালকার পত্রপত্রিকায় তাদের সম্পর্কে যা লেখা আছে তা পড়তেন। সেই সময় বাংলার মহান দার্শনিক অরবিন্দ ঘোষ বন্দে মাতরম নামে একটি পত্রিকায় বিদেশী পণ্যের পোড়ানোর খবর প্রকাশ করছিলেন এবং এই খবরগুলি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করেছিল।

ব্রিটিশ বিচারকের অত্যাচার

যাইহোক, এই আন্দোলনের সময় একজন ব্রিটিশ বিচারক বিপ্লবীদের উপর অনেক অত্যাচার করেছিলেন। এই বিচারকের নাম ডগলাস কিংসফোর্ড। এই ব্রিটিশ বিচারক আন্দোলনকারী বিপ্লবীদেরকে বেত্রাঘাত  থেকে অনেক কঠোর শাস্তি দিয়েছিলেন এবং এর পরে বিপ্লবীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তারা ডগলাস কিংসফোর্ডকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেবেন এবং তা ঘটেছিলেন।

কিংসফোর্ডকে গুপ্তহত্যার প্রচেষ্টা

প্রথম প্রচেষ্টা
হেমচন্দ্রের তৈরি করা বোমা দিয়ে কিংসফোর্ডকে হত্যার প্রথম প্রচেষ্টা করা হয়। একটা ক্যাডবেরি কোকোর খালি টিনে এক পাউন্ড পিকরিক অ্যাসিড এবং তিনটে ডেটোনেটর। এবার এটা হার্বার্ট ব্রুমএর কমেন্টারিজ অন দ্য কমন ল বইয়ের ফাঁপা অংশে প্যাক করা হয়েছিল এবং বাদামি কাগজ দিয়ে মুড়ে নবীন বিপ্লবী পরেশ মল্লিক কিংসফোর্ডের বাড়িতে দিয়ে আসেন। কিংসফোর্ড প্যাকেটটা না-খুলে পরে দেখবেন বলে তার সেলফে রেখে দেন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের মার্চে বিচারকের নিরাপত্তার ভয়ে, কিংসফোর্ডের পদোন্নতি করে সরকার তাকে বিহারের মুজাফফরপুর জেলার বিচারপতি হিসেবে বদলি করেন। তার সঙ্গে যায় আসবাবপত্র, লাইব্রেরি এবং ঐ বই বোমা।

মুজাফফরপুরে পরিদর্শন-পরিক্রমা

অনুশীলন সমিতি কিংসফোর্ডকে হত্যা করার প্রচেষ্টা জারি রেখেছিল। এপ্রিলে দুই সদস্যের একটা পরিদর্শক দল মুজাফফরপুর সফর করে, যাতে যুক্ত ছিলেন প্রফুল্ল চাকি। তাদের ফিরে আসায় পর বোমা তৈরি করেছিলেন হেমচন্দ্র, যেগুলো বানানো হয়ছিল ৬ আউন্স ডিনামাইট, একটা বিস্ফোরক এবং কালো পাউডার ফিউজ। প্রফুল্ল চাকি মুজাফফরপুরে ফিরেছিলেন একটা নতুন ছেলেকে নিয়ে, যার নাম ক্ষুদিরাম বসু।

পুলিশের সন্দেহ

অরবিন্দ ঘোষ, বারীন্দ্র ঘোষ এবং তাদের সহযোগীদের কাজকর্মে পুলিশের সন্দেহ হতে থাকে। কলকাতা পুলিশ কিংসফোর্ডের জীবন বাঁচানোর জন্যে সচেতন হয়ে ওঠে। কমিশনার এফ এল হলিডে মুজাফফরপুর পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্টের উপেক্ষার বদলে সতর্ক হয়েছিলেন। যাইহোক, চারজন লোককে ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়ি পাহারা দেওয়ার জন্যে ব্যবস্থা করা হয়।

ইতিমধ্যে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি নতুন নাম ধারণ করে যথাক্রমে হরেণ সরকার ও দীনেশ চন্দ্র রায় হয়েছেন, এবং কিশোরীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত এক দাতব্য সরাইখানায় (ধর্মশালা) তারা বাসা নেন। তাদের অজ্ঞাতবাসের দিনগুলোতে ওই বিপ্লবীদ্বয় তাদের লক্ষ্যের কার্যকলাপ এবং দৈনন্দিন রুটিনের ওপর নজরদারি করতেন।

দুই বিপ্লবী সফলভাবে তিন সপ্তাহের ওপর তাদের পরিচয় গোপন রাখতে পেরেছিল। মুজাফফরপুরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট আর্মস্ট্রঙের কাছ থেকে একটা চিঠি নিয়ে সিআইডি অফিসার কলকাতায় ফিরে এসেছিল, যাতে বলা হয়েছিল যে, বিপ্লবীদ্বয় ওখানে পৌঁছায়নি। ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ক্ষুদিরাম এবং প্রফুল্ল তাদের পরিকল্পনা কার্যকর করার জন্যে জায়গামতো হাজির হয়েছিল। স্কুল ছাত্রের ভান করে মুজাফফরপুর পার্কে তারা সমীক্ষা করেছিলেন যে, এটা ব্রিটিশ ক্লাবের উলটো দিকে, যেখানে কিংসফোর্ড ঘনঘন আসেন। একজন কনস্টেবল তাদের দেখেছিল।

মুজাফফরপুরে কিংসফোর্ডকে গুপ্তহত্যার প্রচেষ্টা

ভাগ্য ভালোর দিনে, প্রিঙ্গল কেনেডি নামে একজন ব্রিটিশ ব্যারিস্টারের মেয়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গে কিংসফোর্ড এবং তার স্ত্রী ব্রিজ খেলছিলেন। তারা রাত ৮.৩০ নাগাদ বাড়ি ফিরতে মনস্থ করেন। কিংসফোর্ড এবং তার স্ত্রী একটা গাড়িতে ছিলেন যেটা কেনেডি এবং তার পরিবারের গাড়ির মতোই দেখতে ছিল। কেনেডি মহিলাগণ কিংসফোর্ডের বাড়ির চত্বর থেকেই যাচ্ছিলেন।

যখন তাদের গাড়ি ওই চত্বরের পূর্ব ফটকে পৌঁছায়, ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল গাড়িটার দিকে দৌড়ে যান এবং গাড়িতে বোমাগুলো ছোড়েন। একট প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে এবং গাড়িটা সঙ্গে সঙ্গে কিংসফোর্ডের বাড়িতে আনা হয়। গাড়িটা ভেঙে গিয়েছিল এবং কেনেডি মহিলাগণ ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। মিস কেনেডি এক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান এবং মিসেস কেনেডি গুরুতর আঘাতের ফলে ২ মে তারিখে প্রয়াত হন।

পলায়ন

ক্ষুদিরাম এবং প্রফুল্ল নিজেদের রাস্তায় পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন। মধ্যরাতের মধ্যে সারা শহর ঘটনাটা জেনে গিয়েছিল, এবং খুব সকাল থেকেই সমস্ত রেলস্টেশনে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল যাতে প্রত্যেক যাত্রীর ওপর নজর রাখা যায়। সকাল পর্যন্ত ক্ষুদিরাম ২৫ মাইল পায়ে হেঁটে ওয়াইনি নামে এক স্টেশনে পৌঁছান। যখন একটা চায়ের দোকানে তিনি এক গ্লাস জল চেয়েছিলেন, তখন তিনি ফতে সিং এবং শিউ প্রসাদ সিং নামে দুজন কনস্টেবলের মুখোমুখি হন, যারা তার ময়লা পা এবং বিধ্বস্ত ও ঘর্মাক্ত চেহারা দেখে কিছু সন্দেহ করেছিল।

কয়েকটা প্রশ্ন করার পর তাদের সন্দেহ বেড়ে যায় এবং তারা ক্ষুদিরামকে আটক করার সিদ্ধান্ত নেয়। ক্ষুদিরাম তাদের দুজনের সঙ্গে সংগ্রাম শুরু করে এবং তৎক্ষণাৎ দুটো রিভলভারের একটা পড়ে যায়। অন্য রিভলভারটা দিয়ে কনস্টেবলদেরকে গুলি করতে উদ্যত হওয়ার আগেই কনস্টেবলদের একজন ক্ষুদিরামকে পিছন দিক থেকে মজবুত আলিঙ্গনাবদ্ধ করে ধরে ফেলে।

নবীনতর এবং হালকা চেহারার ক্ষুদিরামের পক্ষে নিজের প্রতিরক্ষা অথবা অব্যাহতি পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিলনা। তার কাছে ৩৭ রাউন্ড গোলাগুলি, ৩০ টাকা নগদ, একটা রেলপথের মানচিত্র এবং একপাতা রেলের সময়সারণি ছিল। ক্ষুদিরাম চিরকালের জন্যে ধরা পড়ে গেলেন!  ওয়াইনি রেল স্টেশনটা বর্তমানে নাম বদল করে হয়েছে ক্ষুদিরাম বোস পুসা স্টেশন।

অন্যদিকে প্রফুল্ল কয়েক ঘণ্টা কষ্ট করে অনেকটা হেঁটেছিলেন। দিনের মাঝামাঝি ত্রিগুণাচরণ ঘোষ নামে এক নাগরিক লক্ষ করলেন যে, একজন যুবক তার দিকেই আসছেন। তিনি বোমা বিস্ফোরণে ভীত হয়েছেন এবং অনুভব করেছেন যে, প্রফুল্ল চাকি হলেন সেই অন্য বিপ্লবী। ত্রিগুণাচরণ ঘোষ তার জীবন রক্ষা করে তাকে তার বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে বাঁচাতে চাইছেন। তিনি সেই রাতেই প্রফুল্লর কলকাতায় ফেরার ব্যবস্থা করেছিলেন।

তিনি সমস্তিপুর থেকে মোকামাঘাট যাওয়ার এবং পরবর্তী যাত্রায় হাওড়া যাওয়ার ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা করেন। ট্রেনের একই বগিতে ব্রিটিশ পুলিশের একজন সব-ইন্সপেক্টর নন্দলাল ব্যানার্জি সফর করছিলেন। একটা কথোপকথনে তিনি ধরে ফেলেন যে, প্রফুল্লই হচ্ছেন সেই অন্য বিপ্লবী। শিমুরিঘাট রেল স্টেশনে প্রফুল্ল যখন জল খাওয়ার জন্যে ট্রেন থেকে নামেন, তখন মিস্টার ব্যানার্জি মুজফফরপুর থানায় একটা টেলিগ্রাম পাঠান।

মোকামাঘাট রেল স্টেশনে প্রফুল্লকে পাকড়াও করার চেষ্টা করেন মিস্টার ব্যানার্জি। প্রফুল্ল তার কাছে থাকা রিভলভার দিয়ে নিজের মতো লড়াই করার চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষে যখন দেখেন যে, রিভলভারে একটামাত্র গুলি আছে, তখন তিনি নিজের মুখের মধ্যে গুলি করেন।

হাতে হাতকড়ি লাগানো ক্ষুদিরামকে পয়লা মে মুজফফরপুর থেকে আনা হয়। পুরো শহর থানায় ভিড় করেছিল একদল সশস্ত্র পুলিশকর্মীর ঘিরে থাকা একটা কিশোর ছেলেকে শুধু একপলক দেখার জন্যে। জেলাশাসক মিস্টার উডম্যানের বাড়িতে ক্ষুদিরামকে আনা হয়েছিল। পরের দিন, অর্থাৎ ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ২ মে, ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টেটসম্যান লিখেছিল:

বিচারকের সঙ্গে ঐতিহাসিক সংলাপ

1908 সালের 13 জুন, যখন এই মামলায় ক্ষুদিরাম বোসকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, তখন 18 বছর বয়সী ক্ষুদিরাম বোসের মুখে একটি বলিও ছিল না। যা দেখে সে সময় যে বিচারক তাকে সাজা দেন তিনিও অবাক হয়ে যান। সে সময় বিচারক এবং তার মধ্যে এমন একটি সংলাপ হয়েছিল, যা বহু বছর ধরে মনে ছিল। ফাঁসির রায় ঘোষণার পর বিচারক ক্ষুদিরাম বোসকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘রায় বুঝেছেন?’ এর জবাবে ক্ষুদিরাম বললেন, ‘হ্যাঁ তবে আমি কিছু বলতে চাই’। কিন্তু বিচারক বললেন, ‘এটার জন্য আমার সময় নেই।’

আমৃত্যু দেশকে দেখাশোনা

সেদিন বিচারকের বক্তব্যে ক্ষুদিরাম বোসের শেষ কথা ছিল, ‘যদি সুযোগ দেওয়া হয়, তিনি ব্যাখ্যা করতে পারবেন কীভাবে বোমা তৈরি হয়েছিল’। যাতে বাকি বিপ্লবীরাও স্বাধীনতা সংগ্রামে দুর্বল না হয়ে ঘরে ঘরে বোমা মেরে বধির ব্রিটিশদের স্বাধীনতার আওয়াজ শোনা যায়।

ক্ষুদিরাম বসু সম্পর্কে আরেকটি বিষয় খুব কম লোকই জানেন তা হল বাল গঙ্গাধর তিলকও তাঁর সমর্থনে অনেক নিবন্ধ লিখেছিলেন এবং এর জন্য তাঁকে ১৯০৮ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ৬ বছর বার্মার জেলে রাখা হয়েছিল। সেই সময়ে, তিলকের মামলা মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ আদালতে লড়েছিলেন, যা পরে ভারত ভাগের একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আর পড়ুন….