“স্ট্যাচু অফ ইউনিটি”
দেশর মানুষের মিথ্যা সহনভূতি আদায় করার জন্য হাজার, হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিজেপি সরকার এমন এক জন ব্যাক্তির ভাস্কর্য বানালো যাকে কেউ চেনে না। যে টাকা দিযে গরীবে জন্য হাজার, হাজার প্রকল্প করা সম্ভব চিলো । এমন একটা খাতে টাকা ব্যায় করার জন্য নির্মাতাদের তীব্র ঘৃণা জানায়। ভাবা যায় ৩০০০ হাজার কোটি টাকা! একটা নয়, দুইটা নয়, ৩ হাজার কোটি টাকা। ভারতের এখনো হাজার,হাজার মানুষ অর্ধাহারে বা অনাহারে দিন অতি বাহিত করছে। সেখানে ৩ হাজার কোটি টাকা নয়ে সামান্য বেপার। যে দেশের গরীব চাষি প্রতি বছর ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে রিনের ভারে জীবন দিচ্ছে, সে দেশে এমন বিলাসিতা মানায় না। দেশর প্রতিটা মানুষ আজ স্বাধীন ভাবে চিন্তা করে দেখবেন, যে দেশে টাকার অভাবে বাজেটের মাত্র ২.৭% খরচ হয় শিক্ষা খাতে। সেখানে এই বিপুল পরিমান টাকা খরচ করে মূর্তি বানানো দেশের কোন কাজে আসবে? অতি নিন্ম মানের মানসিকতার কিছু উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দরুণ “বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের” এমন জায়গায় পিঁছেচে গিয়ে সেটা আজ মূর্তি হয়ে গেছে! তাই আজ সারা পৃথিবীর কাছে বর্তমান ভারতবর্ষের রুপরেখা তুলে ধরা চেষ্টা করা হচ্ছে STATUE OF UNITY বানিয়ে।
এই ৩ হাজার কোটি টাকা দিয়ে কি কি করা যেত দেখুন-
- কৃষি কাজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা যেত।
- শিক্ষাখাতে এখনো আমাদের দেশ অনেক পিছিয়ে, সেখানে বড় ধরণের অগ্রতি আনা যেত।
- প্রায় ১০ টা বড় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান করা যেত, যেখানে হাজার হাজার মানুষের উপকার হত।
- প্রায় ১০ টা আই .আই. টি প্রতিষ্ঠান করা যেত, যার ফলে উচ্চ শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘোটত।
- শিশু শিক্ষার প্রসারের জন্য প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার প্রায়মায়রি স্কুল প্রতিষ্ঠতা করা যেত।
- পৃথিবী প্রতিটি দেশ মহাকাশ নিয়ে ব্যবক কাজ করছে। এই টাকা দিয়ে প্রায় ৫টা মঙ্গল অভিযান করা যেত।
- ইলিশ মাছ বা গলদা-বাগদা দিয়ে প্রায় দেশর প্রতিটা স্কুলে মাস খানিক মিড ডে মিল চালানো যেত।
- স্টেট অফ দ্য আর্ট নামে্ প্রতিটা রাজ্য দশটা করে মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র বানানো যেত।
- হাজার হাজার হেক্টর জমির চাষের জন্য সেচের কাজ করা যেত।
- প্রায় ৫০ হাজার টাকা ১০ হাজার ছাত্র-ছাত্রিকে স্কলারশিপ দাওয়া যেত।
- অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের নামে ক্যাম্পাস তৈরি করা যেত প্রায় দুইটি।
- ৩৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পূর্ণ একটি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করা যেত।
এই প্রশ্ন রাখা নিশ্চয় সঙ্গত-
সত্য আমিও এই একটা জগায় এক মত। কিন্ত শুধু কি বিরোধীতার সাথে আজ বামতি সহ দেশর সকল অবিজেপিদের এই চিল্লা-পাল্ল? স্ট্যাচু অফ ইউনিটি এতো টাকায় অনেক কিছুই হতে পারতো। যারা এই অতিবিপ্লব করছেন, তাদের কাছে এই প্রশ্ন রাখা নিশ্চয় সঙ্গত
- মনে কি পড়ে পোখরা পরমাণু পরীক্ষার কথা? ঐ পরীক্ষার জন্য হাজার, হাজার কোটি টাকা খরচ করার কোন প্রযোজন কি ছিল?
- দেশের বড় তথা এশিয়া বড় ইকোপার্ক তৈরি করতে কত টাকা খরচ হয়েছে তার খবর কি রাখে?
- দেশের যে সব রাজ্য গুলো ইতোপূর্বে বামাতিরা শাসন করেছে সেখানে লেনিনের মূর্তি অভাব নাই। একবারের জন্য কি মনের মধ্যে প্রশ্ন আসেনা এই লেনিন মূর্তিতে আমাদের কি লাভ বা কত খরচ হয়েছে?
- পৃথিবীল পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য একটি তাজমহল এটা তৈরি তে কতটা খরচ হয়েছে? এ টাকা কি বিদেশ থেকে এসেছে? এই তাজমহল দিয়ে দেশর গরীব চাষীদের কোন উপকার হয়েছে শুনি?
- দেশ জুড়ে নেহেরু-ইন্দিরা-রাজীবের যত গুলি মূর্তি সেই টাকা দিযে হাজারো মানুষের জন্য কর্মসংস্থান করা যেত। প্রত্যেক স্থানে একটা করে দিদির ভাষায় চোপের দোকান বানালে লক্ষ, লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান করা যেত।
- দেশের যুবরাজ প্রতি বছর মামার বাড়ি বেড়ানোর জন্য যে টাকা খরচ করে, সেই টাকা দিয়ে হাজার মানুষের বাসস্থন তৈরি করা যেত।
- দেশর বড় বামাতি নেতা শিবদাস ঘোষের বাণী প্রচারের জন্য বামতিরা যত লিফলেট বিলি করে সেই টাকা দিয়ে হাজার, হাজার বর্ণপরিচয় বই টা হাজার হাজার শিশুদের কাছে পৌছিয়ে দিয়া যেত।
- রাজ্যের রাস্ত-ঘাটে অলিতে গোলিতে পিসির যে ছবি বিশ্ববাংলা নামে শোভ পাচ্ছে তা দিয়ে রাজ্য সবার একশতটা পাসপোর্ট সাইজ ছবি তৈরি করা যেত।
- দেশের রাজধানি জমির দাম কেমন? সেটা কি বলার দরকার আছে অতচ দিল্লীর প্রধান,প্রধান স্থানে গান্ধী-নেহেরু-ইন্দিরা-রাজীবের স্মৃতি রক্ষার নামে কত বিঘা জমি ব্যবহারিত হচ্ছে তার খবর রাখে কি? সেই স্থানে প্লট করে যদি ঘর তৈরি করা যেত তবে রাজধানিতে কোন ঘর হারা মানুষ থাকত না।
- বামতিরা আজ অবধি যত ঝান্ডা বানিয়েছে, তা দিয়ে বিশ্বের সব বামাতিদের একজোড়া করে চোটি দিতে পারত।
- সপ্তাহে না হোক, মাসে একবার আপনি সিনেমা দেখার জন্য মাল্টিপ্লেক্সে যে টাকা খরচ করেন সেই টাকা দিয়ে দশ জন গরীবের পেট পুরে এক বেলা খাবার হয়ে যায়।
- মনের শক মিটাবার জন্য হেব্বি বাইক কেনেন। সেই বাইক বা তার তেলে জন্য কতটা খরচ হয় সেটার কি খোজ রাখেন? তা দিয়ে কত গুলা বাই সাইকেল হয় সেটা কি জানেন?
- যেখানে ৫০০ টাকার জিন্স প্যান্ট হলে চলে যায় সেখানে ব্রান্ডডেড জিন্স জন্য ৩ হাজার খরচ করছে। এই টাকা কত গুলি লঙ্গি বা ধূতি হয় সেটা কি জানেন।
- ৮৬০০০০০ কোটি টাকা কয়লা কেলেঙ্কারি কথা কি মনে আছে? তা দিয়ে কি করা যেত ভেবে দেখুন।
- ২জি কেলেংকারী ২০০০০০ কোটি টাকা। ভূলে গেছেন? না ভূলের ভান করছেন?
- যারা মায়বতীকে প্রধান মন্ত্রী করার জন্য জোট বেধেছিলেন। তারা কি ভূলে গেছিন তিনি পার্ক এবং মূর্তি তৈরিতে কত খরচ করেছিলেন? না, তখন মঙ্গলে কোন গরীব ছিলো না?
বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য কার টাকায় তৈরি
বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য সহ অন্যন যে সকল আশ্চর্য স্থান আছে এদের বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের করের টাকায় তৈরি করা হয়েছে। যা আজ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে শোভা বাড়াচ্ছে এবং গর্বের ব্যাপারও।আমাদের একটা মনে রাখতে হবে যে প্রয়োজনীয়তা ও গর্ব এক জিনিস নয়। দু:খের বিষয় আজ কিছু ঢেমরা মার্কা নির্বোধ মানুষ তা বুঝতে পারছে না। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসবে তাহলে মহত্মাগান্ধী, নেহেরুর, দেশর প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেতাজি, বাবা সাহেব আম্বেদকর এনাদের স্ট্যাচু কি তৈরি হবে না? দাড়ান,দাড়ান এক বারে এতো চাপ নিবেনা।আপনারা হয় তো পেট মিডিয়া কারণে জানতেই পারেনি যে এই স্ট্যাচুর বেশির ভাগ টাকা গুজরাটের সরকার দিয়েছে। গুজরাটের জনসাধারণ তাদের ভূমি পুত্রকে সম্মান জানানোর জন্য এই টাকা খরচ করেছে। আপনারাও নিজ ভূমি পুত্র নেতাজির জন্য কি কখনো কোন চিন্তা করেছেন? বরং তাকে বানিয়েছেন কুকুর। গৌতম বুদ্ধ এবং গান্ধী ছিলেন সর্বকালের সেরা দেশের নাগরীক। তাদের কে সমগ্র বিশ্ব চেনে, জানে।৪০ বছর ক্ষমতায় থেকে কংগ্রেস গান্ধী এবং নেহেরুর নামের যা কিছু চালিয়েছে তা কম কি?
স্ট্যাচুর বানানোর জন্য যে প্রায় ৫০-৭০ হাজার লোকে কাজ করা সুযোগ পেয়েছে।যে কারখানা থেকে লোহা, সেমেন্ট সহ অন্যন জিনিস নিয়া হয়ছে সেখানে হাজার, হাজার শ্রমিকের কাজ করার সুযোগ হয়ছে।ড্রাইভারের, আর্কিটেক্ট, #ইন্জিনিয়াররা, #ধাবা,#হোটেলের কর্মচারীদের একটা বড় কাজের ক্ষত্রে হয়েছিল। তারা ভবিষ্যতে এখানে বিভিন্ন কাজের সাথে থেকে জীবিকা অজন করতে পারবে।
খুব টাকার দরদ
আজ আপনারা খুব টাকার দরদ দেখিয়ে মায়া কান্ন দেখাছেন। কই কাশ্মীর জন্য দেশের কত কোটি টাকা প্রতি বছর ক্ষতি হয় তার কি কোন খোজ রাখেন? অতচ এই কাশ্মীরের সমস্যার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী নেহেরু। পিসি দরদের ভাই রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতি মাসে কত খরচ হচ্ছে সেটা কি খোজ রাখেন? কমিউনিস্ট, ইসলামিক, সামবাদী,মাওবাদী জন্য এখন পযন্ত কত টাকা খরচ হয়ছে তার খোজ রাখেন? হজ টায়র, হজের জন্য কতটা খরচ হয়েছে বা হচ্ছে তার হিসাব কি রাখেন? দেশর শিক্ষা ব্যবস্থার থেকে ভিন্নি এবং সম্পর্কহীন শিক্ষা মাদ্রাসা শিক্ষা টিকিয়ে রাখার জন্য কত খরচ হয়। তার হিসাব রাখেন কি এবং তা থেকে দেশকে কি রিটার্ন আসে?
কি লাভ এই “স্ট্যাচু অফ ইউনিটি” থেকে-
কবিগুরুর কথা ধার করেই বলি, দারিদ্র দুর্দশাত পৃথিবীতে থাকবেই-তাই বলে কি ১০০০ কোটি টাকা বাজেটের অভতার বা বাহুবলির মতন সিনেমা তৈরী হবে না? যারা বলতে শুরু করেছেন গেল,গেল তাদেকে বলি এই মূর্তির বানানোর জন্য যে টাকা খরচ হয়ছে তা মঙ্গল গ্রহে চলে যায়নি। এই টাকা দেশের মধ্যেই আছে।১৯৩২ থেকে ১৯৩৩ রাশিয়া তৎকালী সোভিয়েত ইউনিয়ানে চলছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্ভিক্ষ। যার ফলে প্রায় ৭০ হাজারে উপরে মানুষ মারা য়ায়। ঐ দুর্ভিক্ষ মধ্যেই কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ানে বামাতি গড লেনিনের স্ট্যাচু বানিয়েছিল। কিছু পেড় মিডিয়া একটা খবর ছুডিয়েছে স্ট্যাচুটি নাকি মেইড ইন চাইনা। খবরটা কতটা ঠিক দেখি এবার এই স্ট্যাচুটি ডিজাইনার লার্সন এন্ড টুব্রো এটা ভারতের। ব্রোঞ্জ কাস্টিং চীনের ফাউন্ড্রি থেকে করিয়ে আনাতে হয়েছে, কারন অত বড় ফাউন্ড্রি ভারতে নেই। লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। কিছু সহযোগি প্রতিষ্ঠান ছিলো তার মধ্যে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানও ছিলো। আমাদের ভূলে গেলে চলবে না যে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো মোড়ের কোন চপ ভাজা প্রতিষ্ঠান না। তাই তার যে দেশের বাইরে কোন পার্টনার থাকবেনা।কিছু মানুষ এমন ভান করছে যেন চীনের পণ্য এই প্রথম ভারতে ব্যবহার করা হচ্ছে।স্ট্যাচুটি তৈরি ফলে ভারতিয় ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটা বিজ্ঞাপনও হলো বটে। ১৫০ বিলিয়ান ডলার আউটসোর্সিং মাধ্যমে দেশের আয় হয়েছে বটে। তবে মোট টাকার ০.৩% মাত্র। ৩ হাজার কোটি টাকা কম কথা! আরে দাদা ভূলে যাচ্ছেন কেনা, লোকটা না নরেন্দ্র মোদী এবং ভূমিটা গুজরাটে। কিভাবে ৩ হাজারকে ৩০,০০০ কোটি করাতে হয় সেটা সে ভালোই জানে। যে ভীড়টা হত আমিরেকাতে সেটা হবে এখন ভারতে। আর এর থেকে পর্যটন এবং বৈদেশিক মূদ্রা উভায়ী আসবে।
“স্ট্যাচু অফ ইউনিটি” এটা শুধু ভাতীয় ভাস্কর্য নয়
“স্ট্যাচু অফ ইউনিটি” এটা শুধু ভাতীয় ভাস্কর্য নয়। এটা এখন আন্তর্জাতিক একটা ভাস্কর্য। এটা কাররী অশিকার করার উপায় নাই, যে এটা তৈরিতে বিপুল টাকা খরচ হয়েছে বা এটা রক্ষার জন্য বিপুল টাকা খরচ হবে। কিন্তু এটা ভূলে গেলে চলবে না এর থেকে বিপুল পর্যটক আনার ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে। যার থেকে বছরে একটা বড় অংকের বৈদেশিক টাকা আয় করার পথ সুগম হয়েছে।”স্ট্যাচু অফ ইউনিটি” আসলে সমস্যা না। মূল সমস্যা হলো গান্ধী-নেহেরুর লতাপাতার বাদে অন্য কাউকে কংগ্রেস সম্মান দিতে শিখেনি। কদিন আগে নেতাজীকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে সর্বোচ্চ সম্মান, শ্যামাপ্রসাদেকে বাববার সাধারণের সামনে তুলে ধারা ইত্যাদি কংগ্রেস সহ সকল বিরোধীদের গায়ে চুলকানী রোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। আর বামাতিদের কথা না হয় বাদি দিলাম যাদের জন্ম হয়ছে দেশের কৃতিত্ব ধারী মানুষ গুলোকে অসম্মান করা। তাদের বাপ থেকে ঠাকুদা সবই তো চীন, কিউবার, জার্মানি, সোভিয়েতে।বামাতি দাদারা যেমন প্রতিমা দর্শন করে না, দিদি তেমান সিঙ্গুরের সময় টাটার গাড়ি-নুন ব্যবহার করতেন না। কংগ্রেস যেমন নেতাজী বা লালবাহাদুর শাস্ত্রীর নাম নেয় না, জামাতিরা যেমন ‘বন্দে মাতরম’ বলে না, বিশ্ববাঙালিরা যেমন শ্যামাপ্রসাদকে চেনে না, তেমনি যার দেখতে সমস্যা আছে তিনি দেখবেন না। কিন্তু মূর্তি ওখানেই থাকবে।
[kkstarratings]