ইসলামে সঙ্গীত

সঙ্গীত: ‘ভারতে মানুষ পা ছুঁয়ে সম্মান দেয়, কিন্তু আমার দেশে আমাকে কাফের বলা হয়’।-পাকিস্তানের বিখ্যাত গায়ক

সঙ্গীত: পাকিস্তানে মৌলবাদী ও মৌলবাদীদের কারণে শিল্পীদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয় এবং এমন ঘটনা প্রতিদিনই সামনে আসছে। এবার পাকিস্তানের বিখ্যাত গায়ক ও সুরকার ফারাজ আনোয়ার নিজের কষ্ট শেয়ার করলেন এবং জানালেন পাকিস্তানে শিল্পী হওয়া কতটা কঠিন।

পাকিস্তানে সম্মান নেই

‘এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’-এর খবর অনুযায়ী, ফারাজ জানিয়েছেন, প্রায় তিন দশক ধরে তিনি পাকিস্তানে সঙ্গীত রচনা করছেন, তবুও সেখানে তিনি কোনো সম্মান পান নি। তিনি বলেন, ইসলামে গান হারাম বলা খুবই দুঃখজনক। পাকিস্তান তারকা আলি হায়দার, সাজ্জাদ আলীর মতো অনেক নামের সঙ্গে কাজ করেছেন ফারাজ।

পাকিস্তানে একজন শিল্পী কী ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছিলেন যে তিনি 2005 সালে পাকিস্তানে একটি স্টুডিও শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু লোকেরা তাকে স্থান দিতে অস্বীকার করে কারণ তিনি একজন সঙ্গীত রচয়িতা এবং কোন রক্ষণশীল এই ধরনের কাজের জন্য ফারাজকে স্থান দিতে প্রস্তুত ছিল না।

শিল্পীকে কাফের বললেন

স্টুডিও ছাড়াও করাচিতে বাড়ি নিতে যাওয়ার সময় তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়েছিল। ব্যক্তিগত জীবনেও তাকে একই ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে বহু বার।

এ ছাড়া ফারাজ বলেন, আমাকে আমার দেশে আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে কারণ ব্যাংক কর্মচারীর মতে আমি একজন সঙ্গীত শিল্পী। ফারাজ বলেন, আমি যখন তাকে জিজ্ঞেস করি আমি পাকিস্তানে কাফির কিনা, তখন সে হ্যাঁ বলেছিল।

ফারাজ আনোয়ার বলেন, রক্ষণশীলরা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় এবং এ কারণেই প্রতিদিন শিল্পীদের ওপর হামলা হয়। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, জুনায়েদ জামশেদকে বিমানবন্দরে থাপ্পড় মারা হয়েছিল এবং লোকেরা দাঁড়িয়ে দেখেছিল। একইভাবে আমজাদ সাবরিকে প্রকাশ্যে বাজারে খুন করা হলেও তার পক্ষে কেউ আওয়াজ তোলেনি।

ভারতে পা ছুঁয়েছেন ভক্তরা

ভারতের উদাহরণ দিয়ে ফারাজ বলেন, ভারতে ভক্তরা আমার পা স্পর্শ করে কিন্তু পাকিস্তানিরা গান শুনে আমাকে গালি দেয়।

তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন ভাষায় ৫ বার কোরআন পড়েছি, কোথাও লেখা নেই ইসলামে গান হারাম। এই জিনিসগুলি রক্ষণশীলরা তৈরি করেছে কারণ আমরা তাদের প্রকাশ করতে দিয়েছিলাম, যার পাপ আমরা ভোগ করছি। পাকিস্তান এখন একটা নরকে পরিপূর্ণ হয়েছে।

এখানে প্রথমে ভিন্ন ধর্মের লোকেদের উপর হামলা হয়েছিল তখন আমাদের মতন প্রগতিশিলরা চুপ ছিল। এখন ভিন্ন ধর্মের লোকেদের সংখ্যা শেষে প্রায়। এবার পালা আমাদের এ পাপের ফল আমাদের ভোগ করতে হবেই সে দিনের নিরবতার জন্য।

আর পড়ুন……