সীমান্তে চরম উত্তেজনা সত্ত্বেও চীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদী- কৃত্তিবাস ওঝা

সীমান্তে চরম উত্তেজনা সত্ত্বেও চীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদী। সীমান্তে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ‍্যেও চীনের সরকারি মুখপাত্র গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, চীনের অর্ধেক মানুষের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

গ্লোবাল টাইমস-এর সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করা ৫০ শতাংশ চীনা নাগরিকই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষে রায় দিয়েছেন। সমীক্ষায় আরও জানা গিয়েছে, চিনের ৭০ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, বিগত কয়েকদিনে ভারত-চীন সম্পর্ক খারাপ হয়েছে।

 

চীনের প্রতি ভারতীয় নাগরিকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ভবিষ্যতে ভারত-চীন সম্পর্ক ভালো হওয়ার আশা করছে ৩০ শতাংশ চাইনিজ নাগরিক। ৯ শতাংশ চীনা নাগরিকের ধারণা, ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক ভাল হলেও তা খুব বেশিদিন টিকবে না। কিন্তু ২৫ শতাংশ মানুষের আবার বিশ্বাস, ভবিষ্যতে ভারত ও চিনের সম্পর্ক আরোও মজবুত হবে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আজ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘১৯৬২ সালের পর চীন-ভারত সীমান্তে নিশ্চিত ভাবেই সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজমান। ৪৫ বছর পর সীমান্ত সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রাণহানি ঘটেছে। কিন্তু সম্প্রতি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় দু’পক্ষ যে ভাবে সেনা মোতায়েন করেছে, তা অভূতপূর্ব। গত সাড়ে তিন মাস ধরে সেনা এবং কূটনৈতিক স্তরে দফায় দফায় আলোচনার পরেও পূর্ব লাদাখে দু’দেশের বাহিনী মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছে।’’

 

উল্লেখ্য,গত ১৫ই জুন চীন ও ভারতের মধ‍্যকার সীমান্ত সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা এবং অজ্ঞাত সংখ্যক চাইনিজ সৈন্য নিহত হয়। তার পর থেকেই নয়াদিল্লি এবং বেজিংয়ের মধ্যে তিক্ততা চরমে পৌঁছেছে। উত্তেজনা প্রশমনে দু’দেশের মধ্যে সেনা এবং কূটনৈতিক স্তরে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।

কিন্তু তাতে পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন ঘটেনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়ে দিয়েছেন,চীনকে পরিস্কার ভাষায় সীমান্তে শান্তি এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখার বার্তা দেওয়া হয়েছে। একতরফা ভাবে স্থিতাবস্থা না ভেঙে চীনের উচিত, দু’দেশের সমস্ত চুক্তি এবং সমঝোতাকে সম্মান জানানো।

 

গত সোমবার ভারতের চীফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত সরাসরি চীনকে হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন,আলোচনায় কাজ না হলে চীন সীমান্তে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের পথ খোলা রয়েছে। লাদাখে চীনা অনুপ্রবেশের জেরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় নজরদারি বাড়াতে ইজরায়েল থেকে আরও দু’টি ফ্যালকন (এয়ারবোর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম) কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।

গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পরই ভারতে চীনা পণ্য বয়কটের আওয়াজ জোরালো হয়েছে। এর ক্ষতিকর প্রভাব চীনের অর্থনীতে বেশ ভালভাবেই পড়েছে। ভারত সরকার শতাধিক চাইনিজ আ্যাপস নিষিদ্ধ করার- ডিজিটাল স্ট্রাইক ছাড়াও, সারা ভারতে চীনাপণ্য বয়কটের জেরে, ভারতে যথেষ্ট পরিমাণে কমেছে চীনা পন্যের আমদানি৷ চীনের আবগারি দপ্তরের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী – গত দেড় মাসে প্রায় ২৫ শতাংশ চীনা পণ্য আমদানি কমিয়েছে ভারত। এর ফলে চীনের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩২.২৮ বিলিয়ন ডলার। ভারত যেরকম চাইনিজ পণ্য বয়কট করেছে, তেমনই ভারত থেকেও আমদানি কমানোর চেষ্টা করছে চীন৷ তবে তাদের এই পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত তেমন ফলপ্রসূ হয়নি।

 

ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ মাত্র ৬.৭ শতাংশ কমাতে পেরেছে চীন। যা কিনা ভারতের চাইনিজ পণ্য আমদানি হ্রাসের ৩০ ভাগেরও কম। সবমিলিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের ব্যবসায়িক লেনদেন কমেছে ১৮.৬ শতাংশ। যা ভারতীয় অর্থনীতির তুলনায় অনেক বেশি ধাক্কা দিয়েছে চাইনিজ অর্থনীতিকে।

চীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদী চীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদী চীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদীচীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদী,চীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদীচীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদীচীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নরেন্দ্র মোদীচীনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে

লেখক-কৃত্তিবাস ওঝা,ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক।
লেখকের আরো লেখা……