রাফাল

কেন সব রাফাল আম্বালায় রাখা হয়েছে?

কেন সব রাফাল আম্বালায় রাখা হয়েছে? এই প্রশ্নটি যদি একটু চিন্তাভাবনা করে বিবেচনা করা হয়, তবে এটি বেশ সহজ। দেখুন, 12টি মিরাজ 2000 বিমান গোয়ালিয়র বিমান ঘাঁটি থেকে রাতারাতি উড্ডয়ন করেছে এবং 26 ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক 2.0 করেছে । 

সঙ্গে শুধু একটি মধ্য বায়ু Rifulr ট্যাঙ্কার আগ্রা থেকে ছিল। এখন বুঝুন কেন শুধু আম্বালায় রাফালে বিমান মোতায়েন করা হয়েছে:

কেন সব রাফাল আম্বালায় রাখা হয়েছে?
কেন সব রাফাল আম্বালায় রাখা হয়েছে?

 

হরিয়ানা রাজ্যের আম্বালা জলপ্রপাত দেখুন, যা ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগত জায়গা।

  1. আগামীকাল যদি পাকিস্তান আমাদের আক্রমণ করে, আম্বালা এমন একটি জায়গা যেখান থেকে রাফালে পাঠিয়ে তার উদ্দেশ্য অবিলম্বে ভেস্তে যেতে পারে কারণ এটি পাকিস্তানের সীমান্ত থেকে মাত্র 220 কিলোমিটার দূরে। এর দূরত্বে রয়েছে।
  2. চীন ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তাপ যদি ভবিষ্যতে কোনো রুদ্র রূপ নেয়, তবে আম্বালা এমন একটি জায়গা যেখান থেকে রাফালে অবিলম্বে চীন ও ভারতের উত্তর সীমান্তে পৌঁছে সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে পারে।
 স্কোয়াড্রন আম্বালায়।
স্কোয়াড্রন আম্বালায়।

 

এখন আপনি ভাববেন যে তাহলে সীমান্তের কাছের জায়গায় কেন রাফালে মোতায়েন করা হল না? দেখুন, এটা সত্য, কিন্তু এটাও ভাবুন যে আপনি 59000 কোটি টাকার এত দামী এবং মূল্যবান বিমান শত্রুদের এত কাছে রাখতে চান না, যা তারা সহজেই মিসাইল বা অন্যান্য অস্ত্র দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।

এই কারণেই রাফালে বিমানগুলিকে আম্বালায় মোতায়েন করা হয়েছিল যাতে ভারতীয় বিমান বাহিনী এটির সম্পূর্ণ সুবিধা নিতে পারে এবং এটি নিরাপদও হওয়া উচিত কারণ যদি কোনও ক্ষেপণাস্ত্র বা বিমান তাদের ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়ে আসে তবে সেনাবাহিনীর কাছে যথেষ্ট সময় থাকবে। সেই অভিপ্রায়গুলোকে পরাস্ত কর

একই সঙ্গে পাকিস্তান ও চীন উভয়েরই আশঙ্কা থাকবে যে, তারা কোনো ভুল পদক্ষেপ নিলে ফল ভালো হবে না।

সেনাবাহিনী যখনই কোনো পদক্ষেপ নেয়, তখনই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা করেই সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কারণ সেনাবাহিনীর ভুল করার সুযোগ থাকে না।

প্রথম রাফালে স্কোয়াড্রন আম্বালায়।
প্রথম রাফালে স্কোয়াড্রন আম্বালায়।

 

আমি আশা করি এই উত্তরটি আপনার প্রশ্নের সমাধান করবে। ভারতের প্রথম রাফালে স্কোয়াড্রন থাকবে আম্বালায়। দ্বিতীয় স্কোয়াড্রন পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হবে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরই আম্বালায় বায়ুসেনা ঘাঁটি তৈরি করে ব্রিটিশরা। সেখানে মোতায়েন করা হয় ব্রিটেনের রয়াল এয়ারফোর্সের ৯৯ স্কোয়াড্রনের ব্রিস্টল যুদ্ধবিমানগুলিকে। আজ হাস্যকর মনে হলেও, তখনকার দিনে প্রপেলার বিশিষ্ঠ এই যুদ্ধবিমানগুলিকেই অত্যন্ত আধুনিক মনে করা হত।

তারপর থেকে আর ঘুরে দেখতে হয়নি আম্বালাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও ব্যবহার করা হয় ওই বিমানঘাঁটিকে। স্বাধীনতার পর ভারতের প্রথম বায়ুসেনা ঘাঁটি হিসেবে স্বীকৃতি পায় আম্বালা। এর আগে ভারতীয় বায়ুসেনার জাগুয়ার বোমারু বিমান, মিগ-২১ বাইসন বিমানগুলির অন্তর্ভুক্তিও এখানেই হয়। এছাড়া, সুখোইয়ের মতো অত্যাধুনিক ফাইটার জেট রয়েছে এই বেসটিতে।

আম্বালা বিমানঘাঁটির কাছেই রয়েছে আর্মির ২ কোরের সদরদপ্তর। ফলে নিরাপত্তার দিকটিও এখানে যথেষ্ট মজবুত। এছাড়া, কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা ও লাগাতার পরিকাঠামো উন্নয়নের জেরে রাফালে মোতায়েন করতে আম্বালায় বিশেষ নির্মাণের প্রয়োজন হয়নি।

১৯৪৭ সাল থেকে কারগিল যুদ্ধ পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াইয়ে বেশ কিছু গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করছে আম্বালা। ১৯৬৫’র ভারত-পাক যুদ্ধের সময় আম্বালায় হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানের বি-৫২ বোমারু বিমান। যদিও ওই হামলায় বেসের কোনও ক্ষতি হয়নি।

আম্বালায় রাফালে (Rafale) মোতায়েন করার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে এয়ারবেসটির কৌশলগত অবস্থান। এই ঘাঁটি থেকে ভারতের পশ্চিম ও উত্তরে একইসঙ্গে অপারেশন চালাতে সক্ষম বায়ুসেনা। অর্থাৎ পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আম্বালা।

তাই এখানেই বায়ুসেনার সবথেকে ঘাতক হাতিয়ারটিকে মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া, আম্বালা রাডার, নজরদারি ব্যবস্থা ও রীতিমতো মজবুত অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট সিস্টেম রয়েছে। ফলে শত্রু দেশের পক্ষে সেখানে হামলা চালানো অত্যন্ত কঠিন।

পাশাপাশি চিন থেকে অনেকটাই দূরে হওয়ায় বিমানঘাঁটির উপর লালফৌজ সেভাবে নজর রাখতে সক্ষম হবে না। সব মিলিয়ে রাফালে মোতায়েনের পক্ষে আম্বালা আদর্শ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আমাদের পাশে থাকতে একটি লাইক দিয়ে রাখুন।-ধন্যবাদ

আর পড়ুন…