৫০ বছর পর শ্রী শ্রী রমনা কালী মন্দির পুনরুদ্ধার ও শুভ উদ্বোধন। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কবিন্দ শুক্রবার ১৭ই ডিসেম্বর ২০২১ রমনা কালীমন্দির উদ্বোধন করবেন। ভারত সরকারের টাকায় এটি পুনর্নির্মিত হয়েছে। ভারতের প্রয়াত বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজ এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
ঢাকার রমনা শ্রী শ্রী কালী মন্দির শুভ উদ্বোধন
রমনা কালী মন্দিরটি ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরসমূহের মধ্যে অন্যতম ছিল। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। কিছু মানুষ বিশ্বাস করে এটি প্রায় এক হাজার বছরেরও পুরাতন বলে বিশ্বাস করা হয় কিন্তু ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি আবার নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রমনা পার্কের (যার বর্তমান নাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বহির্ভাগে অবস্থিত।বর্তমানে বাংলার সংস্কৃতিতে এ মন্দিরের উল্লেখ্য ভূমিকা আছে।
১৯৬৭ সালে রমনা কালীমন্দিরের সুউচ্চ চূড়া, ১৯৭১ সালে এটি পাকিস্তানিরা ধ্বংস করে। পরে ২০০৬ সালেনতুনভাবে নির্মাণ করা রমনা কালী মন্দির।
রমনা কালী মন্দির পুনরুদ্ধার
জনশ্রুতি, প্রায় ৫০০ বছর আগে বদরীনাথের যোশীমঠ থেকে গোপালগিরি নামে এক উচ্চমার্গের সন্ন্যাসী প্রথমে ঢাকায় এসে সাধন-ভজনের জন্য উপযুক্ত একটি আখড়া গড়ে তোলেন।
সেখানেই আরও ২০০ বছর পরে মূল রমনা কালীমন্দিরটি নির্মাণ করেন আর এক বড় সাধু হরিচরণ গিরি। তবে পরবর্তী সময়ে এই মন্দিরের প্রধান সংস্কারকার্য ভাওয়ালের ভক্তিমতী ও দানশীলা রানি বিলাসমণি দেবীর আমলেই হয়।
১৯৭১ সালের ২৬ ও ২৭ মার্চ। এই দুটো দিন রমনা কালীমন্দিরের পবিত্র ভূমি ঘিরে পাকিস্তানি সেনারা যে বিভীষিকার রাজত্ব তৈরি করেছিল তার করুণ কাহিনি ইতিহাসের পাতায় চিরদিন লেখা থাকবে। সেই ইতিহাস এখানে পড়ুন।
এক তীর্থভূমি রাতারাতি পরিণত হয়েছিল বধ্যভূমিতে। রমনা কালী মন্দিরের অধ্যক্ষ স্বামী পরমানন্দ গিরি সহ সেখানে উপস্থিত প্রায় ১০০ জন নারী ও পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাক সেনারা। শিশুরাও রেহাই পায়নি।
এই হত্যাকাণ্ডের সময় রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম দাউ দাউ করে জ্বলেছিল। রমনা কালীমন্দিরের চূড়া ছিল ১২০ ফুট, যা বহুদূর থেকে দেখা যেত।
সেটিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় ওই বর্বর সেনারা ২০০৬ সালে রমনা কালীমন্দির আবার নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়। পুজোর্চ্চনাও শুরু হয়।
বর্তমানে নতুন করে ভারত সরকারের অর্থায়নে নবনির্মিত মন্দিরটি শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ১৭ ডিসেম্ব,২০২১খ্রিঃ। শুভ উদ্ভোধন করবেন ভারত সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাম কোবিন্দ।।
মন্দির ও আশ্রমের ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি
রমনা কালী মন্দির এবং মা আনন্দময়ী আশ্রম ঢাকায় ২.২২ একর জমিতে উপর নির্মিত হয়েছিল। এই জমিটি তৎকালীন রেসকোর্স গ্রাউন্ডের (বর্তমানে Presently Surawardi Garden) দক্ষিণ দিকে এবং বাংলা একাডেমির বিপরীত দিকে অবস্থিত।
মুনতাশির মামুনের মতে, কালী মন্দিরটি দার্শনার্থীদের দানের টাকায় নির্মিত হয়েছিল, যারা শঙ্করাচার্যের অনুসারী ছিল। বদ্রি নারায়ণ জোশী মঠের স্বামী গোপাল গিরি প্রায় ৫০০ বছর আগে ঢাকায় এসে প্রথমে রমনায় একটি মঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই সময় বিহারটি “কাটঘর” নামে পরিচিত ছিল।
পরবর্তীকালে, প্রধান মন্দিরটি এখানে হরিচরণ গিরি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। প্রায় ৩০০ বছর আগে নির্মিত এই মন্দিরটি ১৯ ৭১ সালের ২৭শে মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছিল। শ্রীমঠ স্বামী পরমানন্দ গিরি মন্দিরটি যখন ধ্বংস হয়েছিল তখন মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন।
রমনা কালী মন্দির পুনরুদ্ধার
পুনর্নির্মিত জন্য ভারত সরকার ৭ কোটি টাকা দিয়েছে। তবে কেন বাংলাদেশ সরকার এ সামান্য টাকাটা দিলোনা ? সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত তো অনেকদিন আগেই বলেছেন, ৪হাজার কোটি টাকা কোন টাকাই না!
তাহলে মাত্র ৭ কোটি টাকা না দেয়ার কারণ কি? বৈমাত্রেয় সুলভ আচরণ? বাংলাদেশ সরকার ৫৬০টি আধুনিক মসজিদ বানাচ্ছে, জনসংখ্যা হিসাবে অন্তত: ১০টি মন্দির এবং ১টি প্যাগোডা ও ১টি গীর্জা নির্মাণ করা দরকার,
সরকার তা করছেন না, এতে সংখ্যালঘুদের প্রতি সরকারে ‘অগাধ ভালবাসা’ প্রমান হয়? সরকারের ভালোবাসায় হিন্দুরা অস্থির হয়ে উঠেছেন কি?
তিন দিনের বাংলাদেশ সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আয়োজনে অংশ নিতে এবং সেইসাথে ঢাকার রমনা কালী মন্দির পরিদর্শনে যাবেন ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি। সেখানে মন্দিরের সদ্য সংস্কারকৃত অংশ উদ্বোধনও করবেন তিনি।
আমাদের পাশে থাকতে একটি লাইক দিয়ে রাখুন।-ধন্যবাদ
আর পড়ুন….
- হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত: ঘর ওয়াপসি অভিযানের অধীনে 1200 জন হিন্দু ধর্মে ফিরে এলেন।
- পাকিস্তানে কি মন্দির আছে?
- ভক্তের আকুতি: নৃত্যশিল্পী জাকির হুসেনকে কি তার প্রিয় মন্দিরে আবার প্রবেশ করতে পারবে?
- সনাতন ধর্মে চার যুগের এই রহস্য অত্যন্ত গভীর।
- ২১ বছর পর বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতা জিতে মিস ইউনিভার্স হলেন ভারতীয় মেয়ে।