মিনি পাকিস্তান ও মমতা ব্যানার্জীর দ্বিতীয় স্বাধীনতার ডাক। ভারত ভেঙে দু’টি পাকিস্তান সৃষ্টি করার জন্য কংগ্রেস গর্ব করে। কিন্তু হিন্দু বিদ্বেষী উগ্র সাম্প্রদায়িক দল কংগ্রেস – ধর্মনিরপেক্ষতার ইন্দ্রজাল বিছিয়ে ভারতের ভিতরেই তৃতীয় আরেকটা শক্তিশালী অঘোষিত পাকিস্তান সৃষ্টি করে ফেলেছে।
কংগ্রেসের খণ্ডাংশ তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর,টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন,”মনে হচ্ছে যেন দুই বাংলা এক হয়ে গেছে…”
এরপর তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা ফিরহাদ হাকিম ববি, পাকিস্তানের ডন পত্রিকার সাংবাদিক মলিহা হামিদ সিদ্দিকিকে বলেন,”আমার সঙ্গে আসুন, আমি আপনাকে কলকাতার মিনি পাকিস্তানে নিয়ে যাচ্ছি।” নিজের বিধানসভা নির্বাচনি এলাকা ‘গার্ডেনরিচ’-কে, মিনি পাকিস্তান বলেছিলেন ফিরহাদ হাকিম ববি।
কয়েকটি যুবক ‘জয় শ্রীরাম’ – বলছে শুনে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী গাড়ি থেকে নেমে তাদের তেড়ে যান এবং পুলিশ দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করান। সঙ্গত কারণেই মমতা ব্যানার্জীর এহেন আচরণে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা মনে ভীষণ ব্যথা পায়। কারণ শ্রী রামচন্দ্র হিন্দুদের অবতার। সেই ভগবান রামচন্দ্রের নামে কেউ জয়ধ্বনি দিলে, মমতা ব্যানার্জী তাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করাচ্ছেন;
অথচ আমরা টেলিভিশন ও সামাজিক মাধ্যমে দেখতে পাই, স্বয়ং মমতা ব্যানার্জী হরহামেশা আল্লাহর নাম নিচ্ছেন। মমতা ব্যানার্জী নিজে আল্লাহর নামে জিগির করবেন, আর হিন্দুরা ‘রাম’-নাম উচ্চারণ করলে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করাবেন! সংখ্যগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে এ কেমন ন্যাক্কারজনক জুলুম! এটা কি ধরনের ধর্মনিরপেক্ষতা!
এটা তো হিন্দু-বিদ্বেষী সাম্প্রদায়িকতার চরমতম নিদর্শন! মমতা ব্যানার্জীর এরকম হিন্দু-বিদ্বেষী চরম সাম্প্রদায়িক আচরণ, ইতিহাস ক্ষমা করবে না।
‘সর্বধর্ম সমন্বয়’, মানবিক ধর্ম কখনও অমানবিকদের সাথে সমন্বয় করতে পারে না।-কৃত্তিবাস ওঝা
মমতা ব্যানার্জী তার অনুগতদের বলেছেন, হিন্দুদের ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনির বিরুদ্ধে, ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান দিতে। কিন্তু ‘জয় বাংলা’ – তো পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার স্লোগান। ব্রিগেড জনসভায় মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন,”২০১৯-এর ভোট দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ।” স্মরণ করা যেতে পারে,১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, ‘জয় বাংলা’ – স্লোগান দিয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিতীয় স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।
মিনি পাকিস্তান
বিহারের ক্ষমতাসীন জেডিইউ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মমতা ব্যানার্জীর জমানায় বাংলা ‘মিনি পাকিস্তান’-এ পরিণত হচ্ছে। বিহারিদের তাড়িয়ে জায়গা দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের।’জেডিইউ মুখপাত্র অজয় আলোক বলেন,”মমতার রাজ্য থেকে বিহারিদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আর বিহারিদের তাড়াচ্ছে বাঙালিরা নন, রোহিঙ্গারা।”মিয়ানমার থেকে আসা ইসলাম ধর্মালম্বী রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য সেক্যুলার দলগুলো মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বে আন্দোলন করছে।
বিশাল সংখ্যক অনুপ্রবেশকারী অবৈধ পন্থায় ভোটার লিস্টে নাম লিখিয়ে, বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজ-কারবার করে বেড়াচ্ছে। সম্ভাব্য ‘NRC’ – আতঙ্কে উৎকন্ঠিত অনুপ্রবেশকারীদের মমতা ব্যানার্জি অভয়বাণী শোনাচ্ছেন, বুক দিয়ে আগলে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আসা অসহায় হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য প্রণীত ‘CAA’ – আইনের বিরুদ্ধে মমতা ব্যানার্জি জিহাদ ঘোষণা করেছেন।
‘দুই বাংলা এক হয়ে গেছে’ – মনে হওয়া; মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলকে ‘মিনি পাকিস্তান’ – আখ্যায়িত করা;
জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সূচক ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি- জোরপূর্বক বন্ধ করে দিয়ে, বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘জয় বাংলা’ – স্লোগান দিতে বলা; লোকসভা নির্বাচনকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ’- বলা; অনুপ্রবেশকারী তথা রোহিঙ্গা প্রীতি বনাম হিন্দু উদ্বাস্তুদের প্রতি সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ―ইত্যাদি ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখার সুযোগ নেই এবং সেটা পাকিস্তানের মিডিয়ার দিকে চোখ রাখলেই সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়। পাকিস্তান নিজের দেশের সেক্যুলারদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে অনেক আগেই, অথচ তারা ভারতের সেক্যুলারদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবীরা মমতা ব্যানার্জি, সোনিয়া গান্ধী,রাহুল গান্ধী প্রমুখের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে, যথেষ্ট উৎসাহ-উদ্দীপনা অনুভব করার পাশাপাশি,না না ধরনের স্বপ্ন দেখছে।
সেই স্বপ্নগুলো যে ভারতকে ধীরে ধীরে ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করা, খণ্ড-বিখণ্ড করা, খণ্ডিত অংশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা – সে কথা বলাই বাহুল্য।
উল্লেখ্য, সেক্যুলারিজমের মুখোশ পরে ষড়যন্ত্রকারীরা পার্টিশনের আগ থেকেই পশ্চিমবঙ্গকে পাকিস্তানে বিলীন করে দেওয়ার না না ধরনের ফন্দিফিকির করে আসছে।
ধর্মনিরপেক্ষতার নামাবলি গায় দিয়ে,বাটপাড়গুলো একদিকে ব্রিটিশের দালালি করেছে, নৃশংস জাপানি সাম্রাজ্যবাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে, ভারতকে চীন ও রাশিয়ার উপনিবেশ বানাতে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে; সর্বোপরি ইসলামী খেলাফতের সঙ্গে সেক্যুলারদের দোস্তি ছিল ভীষণ খতরনাক। সহজ-সরল হিন্দুরা বুঝতে পারেনি, যেসব ধর্মনিরপেক্ষ নেতাদের তারা দেবতার আসনে বসিয়েছে, তারা ছিল আদতে মুসলিম লীগের দালাল।
এই সেক্যুলার দালালচক্র, ‘অখণ্ড স্বাধীন বাংলা’-র নামে, অবিভক্ত বাংলাকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়ার জঘন্য ষড়যন্ত্র করেছিল। কেননা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অবিভক্ত বাংলার পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ ছিল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ।
চক্রান্তকারীরা যদি ব্রিটিশদের কাছ থেকে ‘অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা’ – আদায় করে নিতে পারত,তাহলে প্রথম অধিবেশনেই ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে “পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব পাশ করিয়ে নিত”।
যদি সেটা ঘটতো,তাহলে মুসলিম লীগ পূর্ব বাংলা থেকে যেভাবে হিন্দুদের মেরে-কেটে-রেপ করে তাড়িয়েছে, একই প্রক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ থেকেও হিন্দুদের তাড়াতো।
পশ্চিমবঙ্গকে ‘মিনি পাকিস্তান’ বানাচ্ছেন মমতা
পাকিস্তানের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রেখে সেক্যুলাঙ্গাররা এখনো সেই বিষাক্ত ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এরা হিন্দিভাষী ও বাংলাদেশ থেকে আগত অসহায় হিন্দু উদ্বাস্তুদের তাড়িয়ে, পশ্চিমবঙ্গকে কাশ্মীরের মতো হিন্দু সংখ্যালঘু রাজ্যে পরিণত করতে চায়।
যদি সেকুলাঙ্গাররা সেটা করতে পারে, তাহলে তা হবে পশ্চিমবঙ্গ-কে পাকিস্তানিকরনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার বিরাট অগ্রগতি।পশ্চিমবঙ্গে যদি হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে কাশ্মীরের মতো হিন্দুদের পক্ষে আর পশ্চিমবঙ্গে টিকে থাকা সম্ভব হবে না।
আরব দেশগুলো থেকে আসা জেহাদিদের অর্থে, টালির ঘরে রাতারাতি রাজপ্রাসাদ উঠে যায়। স্মাগলিং-এর গোল্ড ধরা পড়লে,ক্ষমতার অপব্যবহার করে চোরাইপণ্য ছিনিয়ে নেওয়া হয়। যৌবনের তাড়নায় বোপিত অবৈধ পাপের বীজ, আজ মহীরুহ সদৃশ্য দুর্নীতির বিশাল বিষবৃক্ষে পরিনত হয়েছে। অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গাদের অসাধু পন্থায় ভোটার বানানোর ফলে, দুধেল গাইরা এখন মোট ভোটারের ৩৪% হয়ে গেছে – যাদের উপর ভরসা করে পাকিস্তানপন্থীরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।
আমাদের সাথে থাকতে একটি লাইক দিয়ে রাখুন।-ধন্যবাদ