ভণ্ডের ভগবান

এদের পাল্লায় পড়েই ভক্তের ভগবান ভণ্ডের ভগবান হয়েছে। পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত ভক্তির সাইনবোর্ড।

এদের পাল্লায় পড়েই ভক্তের ভগবান ভণ্ডের ভগবান হয়েছে। পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত ভক্তির সাইনবোর্ড। আমরা পারি। শুধু আমরাই পারি। বীর, তেজস্বী, অসাধারণ, রাজনীতিবিদ, দূরদর্শী, ধর্মরক্ষাকারী ও দুস্কৃতির বিনাশকারী হিসাবে যার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, যিনি নিজে সারাজীবনের বেশীর ভাগ সময় লড়াই আর যুদ্ধ করে কাটিয়েছেন, একের পর এক দুবৃত্তকে বিনাশ করেছেন, গত ৫০০ বছর ধরে তার লীলাকে এমনভাবে আমরা কীর্তন করতে শুরু করলাম যাতে বর্তমান যুবসমাজ ভাবে গাছের ডালে বসে পা দোলাতে দোলাতে মেয়েদের চান করা দেখা আর মেয়েদের সঙ্গে ফস্টিনষ্টি করা ছাড়া তার কোনও কাজ ছিল না। 

 

জীবন যার বীরত্বময় আর যুদ্ধময় আমাদের পাল্লায় পড়ে সেই জীবন হয়ে উঠল প্রেমময়, লীলাময় আর নারীময়। সারা জীবনে একটা নারীকে, নিজের স্ত্রীকে যিনি ঠিকমত সময় দিতে পারেননি তাকে ষোলো হাজার নারীর সঙ্গে নাচিয়ে দিলাম। তিনি নিজে কখনো কাউকে খোল-করতাল নিয়ে নাচগান করার পরামর্শ দেননি অথচ সেটাকেই মূখ্য করে আমরা কাঁদতে লাগলাম। সেই যে কান্নার শুরু সেই কান্না আজও সমানে চলছে। অলীক অবাস্তব আর যুক্তিহীন কল্পনা মানুষকে কাঁদতে শেখায়। আমরা ভণ্ড। তাই ভক্তের ভগবান যখন ভণ্ডের ভগবান হয়ে ওঠে তখন কেঁদেই কেটে যায়। আমরা কাপুরুষ এবং দুর্বল চিত্ত। 

 

যৌনতা আমাদের মজ্জায় মজ্জায়। ভক্তের ভগবানকেও আমরা আমাদের মত বানিয়ে নিয়েছি। আমাদের ভণ্ডামির পাহাড় সমান ছাই-এর আড়ালে চাপা পড়ে গেছে ভগবান। আর কিছুতেই মাথা তুলতে পারছে না। | আমি কেষ্টঠাকুর, নাড়ুগোপাল বা গোপালঠাকুর নয়—আমি শ্রীকৃষ্ণের কথা বলছি। ভারতের ভগবানকুলের অন্যতম চরিত্র। অসাধারণ বীর এবং বাগ্মী। দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনৈতিক নেতা। অত্যন্ত যুক্তিবাদী।

জীবন ও সমাজ কেমন হবে তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে গীতায়। প্রচণ্ড অস্থির সময়েও কি করে মাথা ঠান্ডা রাখতে হয় তা বলেছেন কুরুক্ষেত্রের মত এক যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে। তার এই চরিত্র আমাদের পছন্দ হয়নি। ভক্ত নয় বলে হয়নি। আমরা ভণ্ড। ষণ্ড মানে যদি ষাঁড় হয়, তাহলে ভণ্ড মানে ভাড় হতে পারে। কৃষ্ণকে নিয়ে আমাদের সেই ভণ্ডামো বা ভঁড়ামো চলছে দীর্ঘদিন ধরে।।

আমরা জানি ভাবনা আমাদের প্রভাবিত করে। কেউ যদি সর্বদা ভাবে আমি চোর হবো সে চোর হবেই। কেউ যদি ভাবে আমি ভালো হবো, আমাকে ভালো হতে হবে তাহলে সে ভালো হবেই। গত ৬০০ বছর ধরে একদল মানুষ ভাবছেন জগতে একমাত্র কৃষ্ণই পুরষ আর সব নারী। এরকম ভাবতে ভাবতে গোটা ভারতের বেশীর ভাগ অংশ নারীতে পরিণত হয়েছে। দেখতে শুনতে পুরুষের মতে কিন্তু পৌরুষ নেই, তেজ নেই, দীর্ঘদিন ধরে ভাবছে আমরা তাে কেউ পুরুষ নই কৃষ্ণ একমাত্র পুরুষ। 

এরকম ভাবতে ভাবতে নিজেরাই কখন পৌরুষ হারিয়েছি সে হুঁশ নেই। পুরুষ যদি নারী হবার চেষ্টা করে তাহলে নারীও হয় না পুরুষও হয় না। এই মাঝামাঝি লোকের ভিড়ে ভরে গেছে ভারতবর্ষ।

চারপাশের অন্যায় সয়ে সয়ে আমাদের পিঠেঘা। চারপাশে ভন ভন করে বেড়াচ্ছেবিষাক্তমাছি।তবুও আমাদের চিন্তা নেই চেতনা নেই। আমরা শুধু কৃষ্ণের নামে হাউ হাউ করে কাঁদছি। ঠাকুরের সামনে দাঁড়িয়ে সেকি হাপুস নয়নে কান্না, দুহাত তুলে কঁদছি। সেই সুযোগে আমাদের কাপড় খুলে নিয়ে পালাচ্ছে দুষ্কৃতিরা। 

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানের অর্ধেকটাই দুষ্কৃতিরা দখল করে নিয়েছে। তবুও আমরা কঁদছি, ভাবছি কৃষ্ণ বড় খুশি হচ্ছেন। কৃষ্ণ জানেন এরা কাপুরুষ। এদের দিয়ে কিছু হবে না। তিনি মুচকি হাসছেন এদের ভণ্ডামো আর নপুংসতা দেখে। | এইসব কৃষ্ণ ভক্তরা মিথ্যার জাহাজ। বীর আর সাহসী কৃষ্ণের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পুরো জীবনটাকেই ভণ্ডামি দিয়ে আর মিথ্যা দিয়ে চাপা দিয়েছেন।

যে কোন টিকিধারী নামাবলীধারী কপালে রস তিলকধারী কৃষ্ণ ভক্তকে জিজ্ঞাসা করুন—আচ্ছা পৃথিবীতে কৃষ্ণ জন্মেছিলেন কেন—অমনি চটপট জবাব কেন লীলাময় এসেছেন লীলা করার জন্য। এই চূড়ান্ত মিথ্যাটি বহুবার বহুজনকে বলতে শুনেছি। প্রেমাবতার প্রেম ছড়াবার জন্য অবতীর্ণ হয়েছেন। মানুষও গোগ্রাসে গেলে এসব, অথচ শ্রীকৃষ্ণ নিজে কি বলেছেন তা আমরা পাত্তাই দি নাই।

কেন ভগবান জন্ম নেন স্পষ্ট করে বলা আছে গীতায়। শ্রীকৃষ্ণ নিজে বলেছেন—দুষ্কৃতির বিনাশ আর সাধুদের পরিত্রাণ করার জন্য তিনি জন্ম নেন। অধর্ম নাশ করে ধর্ম সংস্থাপন করার জন্য তিনি আসেন। কোন ভণ্ডামো নেই, কোন লুকোছাপা নেই, শ্রীকৃষ্ণ যা বলেছেন স্পষ্ট বলেছেন, বলেছেন বীর অর্জুনকে, 

তাহলে কোন বৈষ্ণব ভক্তের কানে কানে তিনি বলতে গিয়েছিলেন যে, আমি লীলা করতে আসি। অথচ কৃষ্ণের এ কথাটা আমরা প্রচার করিনি কারণ দুষ্কৃতিবিনাশ বা ধর্মসংস্থাপন করতে গেলে সাহস দরকার পৌরুষ দরকার। তার চেয়ে লীলা অনেক সহজ। রস আছে, তাই বার বার লীলার মতো মিথ্যাকথা আওড়ে চলি।।

শ্রীকৃষ্ণের ছোটবেলা নিয়েও আমাদের ভণ্ডামোর শেষ নেই। বিভিন্ন বাড়ির দেওয়ালে টাঙানো থাকে নাদুস-নুদুস গোপালের ছবি। কোথাও ননী চুরি করছে। কোথাও মাখন চুরি করছে। হাতে মুখে লেগে আছে চুরি করে খাওয়া ননী আর মাখন। বাড়ির ছোটছেলেরা আচার বা বিস্কুট চুরি করে খেলে বকুনির অন্ত নেই, 

অথচ ঘরের দেওয়ালে টাঙানো চোর কৃষ্ণের ছবি, বিভিন্ন মন্দিরেও, যেন চুরি করে খাওয়াটাই কৃষ্ণের ছোটবেলার প্রধান ঘটনা। আমরা আমাদের স্মরণীয় ঘটনাগুলিকেই ছবি করে তুলে ধরে রাখি। কৃষ্ণের ছোটবেলার ছবি দেখলে মনে হবে ননী আর মাখন চুরিই তার শিশুকালের প্রধান ঘটনা। 

অথচ বাস্তববুদ্ধি অন্য কথা বলে। ছোটবেলাতেই পুতনা বধ, বকাসুর বধ, যমুনায় কালীয় দমন করে রমনক দ্বীপে পাঠানো, তৃণাবর্ত বধ। এমন নানা বীরত্বব্যঞ্জক ঘটনা জড়িয়ে আছে শিশু কৃষ্ণের জীবনের সাথে। অথচ আমরা এগুলিকে পাত্তা দিই না। তার চেয়ে যশোদা ভগবানের কান ধরে আছে এ ছবি আমাদের অনেক বেশি পছন্দ। আর আমাদের সবচেয়ে পছন্দের নাড়ুগোপাল গোপালঠাকুর।

হাতে মণ্ডা, নিদেনপক্ষে নকুলদানা নিয়ে বসে আছেন। আমরা ভণ্ড এবং কাপুরুষ তাই কৃষ্ণের শিশুকালের বীরত্ব ব্যঞ্জক জীবনকে ঢেকে দিয়েছি নাডু আর ননী মাখন দিয়ে,বীরত্বকে ঢেকে দিয়েছি দুর্বলতা আর কাপুরুষতা দিয়ে, মেয়েলি ন্যাকামো দিয়ে। | কৃষ্ণের জন্ম নিয়ে আমাদের হাজার গালগল্প। 

সেইসব গল্পে আমরা বুদ হয়ে থাকি। বাস্তবটাকে এড়িয়ে চলি, সত্যকে খোঁজার কোনও চেষ্টাও করি না। আমরা কিছুতেই বুঝিনা যে শুধুমাত্র লীলা করার জন্য টুক করে ভগবান আকাশ থেকে ঝরে পড়েননি।

অন্যান্য আর পাঁচটা শিশুর মত নিয়ম মেনেই তার জন্ম হয়েছে। দেবকীকেও ১০ মাস ১০ দিন গর্ভধারণ করতে হয়েছে। নিদারুণ দুঃখ আর যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে কারাগারের মধ্যে, পৃথিবীতে আসতে গেলে ভগবানকেও যে পৃথিবীর নিয়ম মেনে চলতে হয় এটা তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। কংসের হাত থেকে বাঁচাতে রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে যমুনা পার করে গোকুলে লুকিয়ে রেখে আসতে হয়েছে। 

 

অথচ এই বাস্তবকে ভুলে তার যাবতীয় দুঃখ কষ্টকে ভুলে আমরা মনে রাখলাম ননী চোরা কৃষ্ণকে, তাকে পৃথিবীতে আনার জন্য কারাগারের মধ্যে দিনরাত কাটারো গর্ভবতী দেবকীকে ভুলে গেলাম। মনে রাখলাম যশোদাকে। যাকে তেমন কোনও কষ্টই করতে হয়নি। হাতে পায়ে শিকল বাঁধা বসুদেবকে ভুলে গেলাম। মনে রাখলাম বর্ধিষ্ণু নন্দরাজকে। কৃষ্ণ বসুদেবের পুত্র এই পরিচয় ভুলিয়ে দিলাম অর্ধেকের বেশি লোককে। 

কৃষ্ণ হয়ে গেলো নন্দলালা, আর যশোদা নন্দন আমাদের ভণ্ডামি আর গালগল্পের পরিমাণ বেশি বলে। দেওয়ালের গোপালঠাকর আর ননীচোরার ছবি দেখিয়ে এমন করলাম যে তার ছোটবেলার বীরত্বের কথাগুলি ভুলেই গেলাম।।  এখন ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে জন্মাষ্টমী হয়। সরকারিভাবে ছুটি থাকে অনেক জায়গাতেই, বিভিন্ন জায়গায় যে উৎসব হয়, তার মূলে হরিনাম আর দইয়ের হাড়ি ভাঙা। ছোট ছোট ছেলেদের হাতে বাঁশি আর মাথায় ময়ূরের পালক গুঁজে ননী মাখন খাওয়ানো হয়। এমন হোপালঠাকুর এখন ঘরে ঘরে।

হরিনামের চোটে উঠোন কাদা। দই হলুদে মাখামাখি। অথচ কৃষ্ণের জন্মদিনে  অন্যরকম শপথ নেওয়ার কথা ছিল। শ্রীকৃষ্ণ যেখানে জন্মেছিলেন সেই মথুরার কারাগার আমাদের প্রাণের ধন। সব মুসলমানের যেমন জীবনের একমাত্র লক্ষ্য জীবনে অন্তত একবার মক্কায় হজ করতে যাওয়া। 

তেমনই প্রত্যেক কৃষ্ণভক্তের উচিত ছিল জীবনে একবার ভগবানের জন্মস্থানে যাওয়া। যাবেন কোথায়? যে কারাগারে তার জন্ম হয়েছিল সেটাইতো এখন অন্যধর্মের দখলে। হাজার হাজার বৈষ্ণব অথবা কৃষ্ণভক্ত জন্মাষ্টমীতে দুহাত তুলে নেচে নেচে কাদতে পারেন। কিন্তু কৃষ্ণের জন্মস্থান উদ্ধারের কোন চেষ্টা করতে পারেন না। 

কৃষ্ণভক্তদের এগুলো শুনতে খারাপ লাগবে, কারণ এটাই নির্মম সত্য। এর মধ্যে ভণ্ডামি নেই। রসের গল্প নেই। এদের পাল্লায় পড়েই ভক্তের ভগবান ভণ্ডের ভগবান হয়েছে। পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত ভক্তির সাইনবোর্ড। কারও সরু টিকি কারও মোটা টিকি। এদের জিজ্ঞাসা করুন—ভগবান কৃষ্ণের পূতঃ পবিত্র জন্মস্থান অন্যের দখলে গেল কেন। আপনারা তার ভক্ত হয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন না কেন। অমনি ভক্ত বলবে এসবই তো তেনার লীলা। উত্তর একেবারে রেডি। সত্যের মুখোমুখি হলে এমনই হয়। লীলা কি দাদ হাজা চুলকানি নাকি। যখন খুশী যেখানে খুশী হবে। ভক্তদের হবে, ভগবানের হবে, ভক্ত না হয়ে ভণ্ড হলে এমনই হয়।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৈশোর আর যৌবনকে আরও নীচে নামিয়ে এনেছি। সমগ্র যুবসমাজের কাছে হাসির খোরাক করে তুলেছি ভগবানকে। যাত্রা-নাটক-সিনেমা- আড্ডা-ঠেক সর্বত্র এখন কৃষ্ণকে নিয়ে ফাজলামো হয় দোষ যুবকদের নয়। কৃষ্ণভক্তদের। কৃষ্ণের কৈশোর আর যৌবনকে আমরা গত ৫০০ বছর ধরে এমনভাবে তুলে ধরেছি যেন কৃষ্ণ একটা লুমপেন। 

যার চরিত্র বলে কিছু ছিল না। যার প্রধান কাজ ছিল মেয়েদের সঙ্গে স্ফুর্তি করা। স্নানের ঘাটে মেয়েদের কাপড় চুরি। পরের বউকে নিয়ে টানাটানি। লুকিয়ে তার সঙ্গে ক্রীড়া। হ্যা এভাবেই উপস্থাপিত করেছি কৃষ্ণকে। যা সত্যের একেবারে বিপরীত।

চরম এবং চূড়ান্ত মিথ্যাকথাগুলিকে শ্রীকৃষ্ণের জীবনে ঢুকিয়ে দেওয়া ভগবানের লীলা বলে এই কাজকে সমর্থনও করা হয়। ছোট থেকে বড় এখন, সবাই আমরা সেই প্রভাবে প্রভাবিত। পথে ঘাটে স্কুলে কলেজে সর্বত্র এসব নিয়ে হাসিঠাট্টা। আমরা শুনি। কৃষ্ণভক্তরাও শোনে। হজম করতে হয়। 

কারণ ভণ্ডামি ঢাকতে এসব হজম করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। কোন ছেলে যদি তার বান্ধবীদের সঙ্গে গল্প করে অমনি আমরা বলি—কিহে তুমি তো কলির কেষ্ট। এগুলো পরিচিত বাক্যবন্ধনী। অনেকেই শুনি। অনেকেই বলি। একবারও ভাবি নাকি বলছি, কেন বলছি। একথা বলে কি আমরা এগুলোই বোঝাতে চাই যে মেয়েদের সঙ্গে বসে গল্প করা ছাড়া আর কোনও কাজ ছিল না।

অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাকে কৃষ্ণভক্ত বলি না। ভণ্ড ভক্তরা বলেন প্রেমময়ের লীলা। স্বর্গে কি অপ্সরার অভাব ছিল। মর্তে আসতে হলো মেয়েদের সঙ্গে গল্প করার জন্য। কিছুতেই সত্য স্বীকার করব না। আমাদের হাড়ে মজ্জায় শিরায় শিরায় এই ন্যাকামি চলছে দীর্ঘকাল ধরে। তাই সিনেমা নাটক গান সর্বত্র কৃষ্ণের কৈশোর যৌবনকে নিয়ে চূড়ান্ত ছ্যাবলামো চলছে। বিকৃতভাবে গাওয়া হচ্ছে ভজ গৌরাঙ্গ। 

সিনেমায় গোঁফধারী কৃষ্ণ কুঞ্জবনে বসে বসে সিগারেট যুঁকছে আর রাধাকে চুমো খাচ্ছে। এসব দেখে কোনও কৃষ্ণভক্ত প্রতিবাদ করেনা।

কারণ নপুংসকেরা প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। লাগাতার ভণ্ডামো মানুষকে কাপুরুষ করে তোলে। নিজেদের এই বীর্যহীনতা আর মিথ্যাচারিতাকে সমর্থনের জন্য হাজার যুক্তি দিয়ে থাকে। আসলে সত্যের মুখো মুখি হতে হলে সাহসী হতে হবে। বীর্যবান হতে হবে। নির্ভীক হতে হবে। আমরা অসৎ। 

 

আমাদের বেশিরভাগের চরিত্র দুর্বল। তাই বীর্যবান তেজস্বী কৃষ্ণও আমাদের পছন্দ নয়। আমরা আমাদের ভগবানকেও আমাদের মতো বানিয়ে নিয়েছি। নিজেদের অবদমিত ইচ্ছাগুলো চাপিয়ে দিয়েছি ভগবানের উপর। নিজেরা মেয়েদের চান করা দেখতে গেলে ললাকে ঠ্যাঙাবে। তাই ভগবানকে দিয়ে দেখিয়েছি। পরের বউ এর সাথে প্রেম করলে ধরা পরার ভয়, ভগবানের প্রেম বলে চালিয়ে দিচ্ছি। বয়সকালে একটা মানসিক তৃপ্তিতে পাওয়া যাচ্ছে। ভক্তিও হলো আবার তৃপ্তিও হলো। বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট, আশা করি আমি এখানে কি বলতে চেয়েছি সেটা আর ব্যাখ্যা করা দরকার হবে না।

 

লেখক- মানস ভট্টাচার্য

লেখকে পরবর্তী লেখা পড়তে আমাদের পেজে লাই দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ

আরো পড়ুন…

ভণ্ডের ভগবান ভণ্ডের ভগবান ভণ্ডের ভগবান ভণ্ডের ভগবান ভণ্ডের ভগবান ভণ্ডের ভগবান ভণ্ডের ভগবান ভণ্ডের ভগবান ভণ্ডের ভগবানভণ্ডের ভগবান