বিজ্ঞানে বাঙালি নতুন সাফল্যর জ্যোতির্ময় দুই পালক!

একটা সময় বিশ্ব জগত সভায় বাঙালি তার কর্মের দ্বারাই সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেছিল। কিন্তু মাঝে অনেকটা সময় কেটে গেছে বাঙালি তার পুরানো সেই সম্মান ফিরে পাবার জন্য লড়াই করেছে ঠিকই কিন্তু পুরস্কৃত হতে পারি নাই। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যদি আমরা লক্ষ্য করি অনেক বাঙালি বিজ্ঞানী তাদের নিজ নিজ কর্মধারায় বাঙালিকে সম্মানিত করেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন বাঙালির সেই সাফল্যের খাতায় কোনরকম কালির আচড় পড়ছিল না। সেটা বাঙ্গালী হিসেবে আমাদের জন্য খুবই লজ্জাকর বিষয় হয়ে উঠছিল।  তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাঙালি তার সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবার মত সুসংবাদ নিয়ে এসেছে আজ সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল

বাংলার কৃতিসন্তান রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার ছেলে বিজয় কুমার শীল । বিজয় কুমার শীল বর্তমানে বাংলাদেশ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত আছেন। কে এই বিজয় কুমার শীল? আমরা অনেকেই ইতিমধ্যে তার নাম শুনেছি । তিনি আমাদের কাছে বর্তমানে পরিচিত হওয়ার কারণ হল 2003 সালে সার্স নামক  ভাইরাস নির্ণয় করার জন্য সর্বপ্রথম সিঙ্গাপুরে বসে কিট আবিষ্কার করেন। ওই সময় তিনি প্রথমে তার নিজের নামে পেটান নিয়ে বাজারে নিয়ে আসে। 

পরবর্তীতে তার আবিষ্কৃত কিট চীন সরকারের কাছে বিক্রি করে দেন। তার আবিষ্কার নিয়ে চিন সরকার মারাত্মক সার্স ভাইরাস কে প্রতিহত করতে সক্ষম হন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি বর্তমানে আমাদের সামনে আবার ভয়ঙ্কর  ভাইরাস করোনা ভারাইসের কিট আবিষ্কার করে সারা পৃথিবীকে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। তার আবিষ্কার কিট মাত্র 15 মিনিটে একজন রোগীর করোনা শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। 

তার এই আবিষ্কার কিট অনেকটাই সহজলভ্য, মাত্র 200 টাকার বিনিময়ে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই একজন ব্যক্তির করোনা হয়েছে কিনা সেটা সনাক্ত করা সম্ভব। কিটির দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের মধ্যে থাকায় এটা আরো দ্রুত সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে। যার ফলে এই পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ ভয়ঙ্কর রোগ করোনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়েছে। 

এখন অতি দ্রুত একজন মানুষকে করোনা টেস্ট করে সনাক্ত করা সম্ভব যার কারণে রোগটি ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে লাগু হবে। শুধু একজন বাঙালি বিজ্ঞানী হিসেবে নয় পৃথিবীর এই মহা সংকটের সময় তার এই মহা আবিষ্কার এর জন্য পৃথিবী আজীবন তাকে স্মরণ করবে। সেই সাথে একজন বাঙালি হিসেবে নোবেল কমিটির কাছে আমাদের আর্জি থাকবে এই মহান বিজ্ঞানী কে আগামীতে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করে  সম্মানিত করা হোক।

চিকিৎসা বিজ্ঞানী শুভ রায়

বর্তমান বিশ্বের একটা কঠিন রোগ কিডনি রোগ। বিশ্বের বহু মানুষ এখন এই রোগে আক্রান্ত এই রোগের থেকে মুক্তির কোন উপায় নাই। বেশিরভাগ কিডনি রোগী পুনরায় কিডনি স্থাপন করে অথবা  ডায়ালাইসিস করে বেঁচে আছেন। এই দুটো পদ্ধতি ব্যায়বহুল এবং যন্ত্রণাদায়ক। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো পৃথিবীর মানুষের কাছে  চাহিদা অনুযায়ী কিডনি নাই যেহেতু এর চাহিদা প্রতিনিয়তই বাড়ছে সেহেতু একটা আশঙ্কার জায়গা সবসময় থেকে থাকে কিডনি সঙ্কটের। 

এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে বিশ্বকে উদ্ধার করলেন বাঙালি বিজ্ঞানী শুভ রায়। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কৃত্রিম কিডনি আবিষ্কার করে সারা বিশ্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানে একটা হইচই ফেলে দিয়েছে।বিজ্ঞানী শুভ রায়ের ভাষ্যমতে তার এই আবিষ্কার যেমন কিডনির সহজলভ্য করবে তেমনি যন্ত্রণাদায়ক চিকিৎসা পদ্ধতি হাত থেকে কিডনি রোগীদের মুক্তি দেব। সাম্প্রতিক সময়ে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে বিশ্বের প্রায় প্রতিবছর কুড়ি কোটিরও বেশি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে ব্যয়বহুল এবং কষ্টদায়ক চিকিৎসা পদ্ধতি ডায়ালাইসিস করে বেঁচে থাকে প্রায় 20 লক্ষ মানুষ।

বিজ্ঞানীর এই কাজে সফলতার পরে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ বিভাগ থেকে অনুমতির কাজ চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর এই চিকিৎসক জানান এই আবিষ্কার সারাবিশ্বে কিডনি চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক বড় ধরনের বিপ্লব ঘটাবে। এই কৃত্রিম কিডনি মানুষের দেহে স্থাপন করার ফলে আসল  কিডনির মতন কাজ করবে। রক্ত পরিশোধন, হরমোন উৎপাদন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে বলে তিনি দাবি করেন।

তার উদ্ভাবিত কিডনি থেকে শতভাগ কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায় তার জন্য তিনি দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাঙালি এই চিকিৎসক বিজ্ঞানী এর জন্মস্থান চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। একজন বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে তার এই সাফল্য আমাদেরকে অবশ্যই গর্বিত করে। সেই সাথে বিশ্বের বর্তমানে  ব্যয়বহুল রোগ গুলোর মধ্যে অন্যতম কিডনি রোগের একটা গুরুত্বপূর্ণ সমাধান করতে পারার কারণে নোবেল পুরস্কার  প্রাপ্য হন এই শুভ কামনা করি। বিজ্ঞানে বাঙালি নতুন সাফল্য জ্যোতির্ময় দুই পালক!