লেখাটি একটি গবেষণা মূলক লেখা.............................
“না খাউঙ্গানা খানে দুঙ্গ’’ কথাটি কে বলেছিলেন মনে পাঠক? ভারতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেই এই কথাটি বলেছিলেন মোদীজি। হ্যা, আর তার প্রতিফলন আমরা গত ৪.৫ বছরে দেখেছি। এই লিখাটি তারা এড়িয়ে যান, যাদের জন্য দুর্নীতির বাজরা এখন হারাম হয়ে গেছে। ১৯৪৭ সালের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দেশের উন্নতির জন্য বড় বাধা হয়ে দাড়িয়ে ছিল দুর্নীতি। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চপদস্থ থেকে নিম্ন পদস্থ সমস্ত কর্মচারীরা পুরো সিস্টেমকে দুর্নীতি দ্বারা ব্যাপক ভাবে ক্ষতি করে চলেছিল। যার ফলে দেশের অগ্রগতির জন্য দুর্নীতি একটি ব্যাপক বাধা হয়ে দাড়িয়ে ছিল। দুর্নীতি এই আখড়াকে ভেঙ্গে দেবার জন্য মোদী সরকার প্রথম থেকেই বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিতে থাকে। যার ফলে দেশের দুর্নীতি বর্তমানে সময়ে অনেক অংশে কমে এসেছে। মোদী সরকার আসার পূবে দেশ দুর্নীতিতে একটি অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। কয়লা দুর্নীতি, বফোর্স দুর্নীতি, 2জি দুর্নীতি, লালুর গো খাদ্য দুর্নীতি, তারসাথে মেয়ে-জামাই এর টাকা পাচারের কথা না হয় বাদ দিলাম। গত ৪.৫ বছরে কোনো দুর্নীতিই সামনে আসেনি। যদিও রাহুল বাবা (পাপ্পু) রাফাল কে দিয়ে অনেক জল ঘোলা করে ছিল। এর মানে আমি বলছি না যে দুর্নীতি দেশ থেকে পুরো পুরি শেষ হয়ে গেছে। এখনো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম বেশি দুর্নীতি চলছে। আর সেই ছোট খাট দুর্নীতির মূল থেকে তুলে ফেলতে চাই মোদি।
ফেলার জন্য মোদী সরকার নিয়েছে অপারেশন ব্ল্যাক আউট এর মত ব্যবস্থা নিয়েছে। যারফলে সরকার তৈরি করেছে এক নতুন আইন। এইনতুন আইন এ থাকছে যারা ঘুষ নিবে এবং যারা ঘুষ দিবে উভয়ের জন্য কঠোর সাজার ব্যবস্থা। এখানে সরকারের বক্তব্য যারা ঘুষ নেয় এবং দেয় তারা উভয়ই সমান অপরাধী।তাই তাদের উভয়ের জন্য থাকছে কঠিন সাজার ব্যবস্থা। ইত মধ্যে সূত্রের খবর অনুযায়ী দুইসংসদে আইনটি পাস হয়ে গেছে। সাজা হিসাবে দোষীকে বা দোষীদের কমপক্ষে ৩-৭ বছর জেল হতে পারে। তবে মজার বিষয় হলো যদি কোন তৃতীয়পক্ষ এই ঘুষ দেয়া বা নেয়ার সাথে জড়িত থাকে, তবে সেই তৃতীয় পক্ষকে সমান সাজা দেয়াহবে। তবে অনেকেই এই আইনের বিরোধিতা করছে।এ আইনে আরো রাখা হয়েছে মামলার শুরুর দিনথেকে দুই বছরের মধ্যে এই মামলার নিষ্পত্তি করতেই হবে। তাই দেখা যায়, বর্তমান মোদী সরকার দুর্নীতি বিরুদ্ধে এক ধরনের জিহাদ ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ দুর্নীতি দমনের সরকার জিরো টলারেন্সনীতি গ্রহণ করেছে। এই দুর্নীতি দমনের জন্য প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে বড় যে দুটি পদক্ষেপ ছিল তা হলো আধার লিংক এবং নোট বন্দির।
অনেকেরমনে প্রশ্ন আজ মোদী সরকার গত ৪.৫ বছরে কি করেছে। সম্ভবত এই প্রশ্নটি যতটা নাসাধারণ মানুষের তার থেকে বেশি বিরোধীদের। সেদিন মোড়ের দোকানে এক দাদু চিৎকার করেবলছে মোদী গত ৪.৫ বছরে কি ছিঁড়লো? সেদিন দাদুকে তার প্রশ্নের যে উত্তর গুলোদিয়ে ছিলাম আজ সেগুলো আমি আপনাদের বলছি। আসুন দেখা যাক সেদিন দাদুকে কি বলেছিলাম-
পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী বাঁধ
“সর্দারসরোবর বাঁধ” পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী বাঁধ। যাহা কংক্রিটব্যবহারের দিক দিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম। আর দেশের দিক থেকে প্রথম। যা গুজরাতে নর্মদা নদীর উপরে শোনগড়,নবগাও অঞ্চলে অবস্থিত। এই বাঁধটি হচ্ছে আমেরিকার কলম্বিয়া নদীর ওপর গ্র্যান্ড কুলি বাঁধের পরেই বিশ্বেরবৃহত্তম বাঁধ। এই বাঁধে থেকে বিপুল পরিমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। যাহা গুজরাট সহ মধ্যপ্রদেশ,মহারাষ্ট্র, এই তিনটি রাজ্যের বিপুর পরিমান বিদ্যুৎ চাহিদা মিটাছে। বাঁধটি নাম রাখা হয়েছে লৌহ পুরুষ সর্দার প্যাটেলের নামে।
দেশের বৃহত্তম দীর্ঘ সড়ক সেতু
দেশের সবচেয়েবৃহত্তম দীর্ঘ সেতু “ভূপেন হাজারিকা সেতু”। পুরো নাম ভূপেন হাজারিকা সেতুবা ঢোলা-সাদিয়া সেতু। এটিদক্ষিণ এশিয়ার তথা ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ সড়ক সেতুর, যার দীর্ঘ ৯.১৫ কি:মি। লোহিতনদীর উপর তৈরি এই সেতু অসম এবং অরুণাচল প্রদেশকে জুড়েছে। যার ফলে অরুণাচলের সাথে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো মজুত হল।স্বাধীনতার পর থেকে চীনের ভয়ে কোন সরকারী এই সেতু করার সাহস পায়নি। যেটা মোদীসরকার তার আমলে মাত্র ৩ বছরের মধ্যে করে দেখিয়েছে।
বগীবিল সেতু দীর্ঘ সড়ক ও রেল সেতু
“বগীবিলসেতু” যেটি দেশে তথা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় রেল এবং সড়ক সেতু। ভূপেন হাজারিকা সেতুরপরে ব্রহ্মপুত্রের উপর দ্বীতিয় সেতু। যেটির উদ্বোধন ২০১৮ এর ২৫ ডিসেম্বর করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর দীর্ঘ৪.৯৪ কি: মি। এই সেতুর মাধ্যমে আসাম ও অরুণাচল প্রদেশকে এক সাথে রেল এবং সড়ক দ্বারা জুড়ে দিয়া হয়েছে। ১২০ বছর পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে সেতুটির। এই সেতুর ফলে রেলের মাধ্যমে অরুণাচলে সেনাবাহিনী তাদের রসদ খুব তাড়াতাড়ি পাঠাতে পারবে। যেটা দেশকে আরো শক্তিশালী করবে।
পৃথিবীর উচ্চতম রেল সেতু
উত্তরজম্মু-কাশ্মীরের পার্বত্য অংশের মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তুলার জন্য তৈরি হয়েছে এইউচ্চতম রেল সেতু। আইফেল টাওয়ারের থেকেও এই সেতুর উচ্চতা ৩৫ মিটার বেশি। চেনাবনদীরওপরতৈরিহওয়াবিশ্বেরসর্বোচ্চ উচ্চতম রেল সেতু কাশ্মীরের জীবনযাত্রায় ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সেতুটি ১ দশমিক ৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৩৫৯মিটার উঁচু। আশার কথা এইসেতুটি ইস্পাতের দ্বারায় তৈরি করছেন ভারতের প্রকৌশলীরা।এই সেতুর ফলে দেশের নিয়ন্ত্রিনে উত্তরাঞ্চলীয় জন্মু ও কাশ্মীরের কে আনা সহজ হয়েছে।অপর দিকে অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সমৃদ্ধ পার্বত্য এলাকার দেখতে ভ্রমন পিপাশুদের সহজহয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি
বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের। যে মূর্তি সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের যেমন সম্মানিত করেছে সেই সাথে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ‘স্ট্যাচুঅব ইউনিটি’ দেখেতে প্রতি বছর প্রায় ২৫ লাখ পর্যটককে আকৃষ্ট করবে বলে ধারনা করাহচ্ছে। যার ফলে স্থানীয় অর্থনীতির সমৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়বে।
ওআরওপি পেনশন প্রকল্প
ফৌজিদের ওয়ান র্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী অথবা বায়ুসেনার কোন পদ থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে অবসর নেওয়া যেকোন অফিসার এবং সেনাকে একই হারে পেনশন হল ‘এক পদ এক পেনশন বা ওআরওপি।এই প্রকল্প চালুর ফলে প্রায় ২০ লক্ষের বেশি অবসর প্রাপ্ত জওয়া উপকৃত হয়েছেন। প্রকল্প চালুর পর ১ মে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকার ১০৭৯৫ টাকা অবসর প্রাপ্ত জওয়ানের বকেয়া মিটিয়ে দেয়। এই ওআরওপি জন্য বহু জওয়া আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল।
জন ধন যোজনা
সকলের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা প্রধানমন্ত্রী জন-ধন যোজনা । দেশের প্রতিটি পরিবারকে ব্যাংকিং পরিষেবার আওতায়আনতে এই যোজনা। এই প্রকল্পটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলো মধ্যে একটি। যারমাধ্যমে দেশের প্রতিটি গরিব মানুষ ০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ পেয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩১ কোটি মানুষ এই প্রকল্পটি মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেছে। কমসময়ে সর্বাধিক সংখ্যক হিসাব খোলার রেকর্ড করেছে এই প্রকল্প দ্বারা দেশে। ভবিষ্যৎ আর্থিক স্বাধীনতার জন্য এই জনধন যোজনা সাধারণ মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর ফলে দেশের সাধারণ মানুষের জীবনের মান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।“জন ধন যোজনা” সাথে জড়িত আরো যে সকল যোজনা সরকার নিয়েছে।প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতিবীমা যোজনা , অটলপেনশন যোজনা, প্রধানমন্ত্রীমুদ্রা যোজনা ইত্যাদি।
প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা
LPG গ্যাস পরিষেবা জন্য প্রধানমন্ত্রীনরেন্দ্র মোদীর নিয়েগুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হল উজ্জ্বলা যোজনা। ১ মে ২০১৬ সালে এই যোজনার যাত্রা শুরু হয়।যাহার ফলে দরিদ্র সীমার নিচে থাকা পরিবারের মহিলাদের মুখে হাসি ফুটেছে। ধোঁয়ার দূষণজনিত রোগ ব্যাধি থেকে রক্ষা পেয়েছে গরিব বাড়ির মহিলারা। গরিব মানুষের জন্যনিখরচায় রান্নার গ্যাসের এই প্রকল্প মানুষর জীবন যাত্রার মান পাল্টে দিয়েছে। প্রথমমাত্র ১৮ মাসের মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি পরিবারকে এই প্রকল্পের আওয়তায় এসেছে।
মুদ্রা যোজনা
আপনি ব্যবসা করবেন চিন্তা করছেন? কিন্তু ব্যবসার জন্য টাকা কোথায় পাবেন? , ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর, – প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদী দেশ জুড়ে ‘মুদ্রা যোজনা’ চালু করে দেশে। দক্ষ তরুণ এবং ছোট, মাঝারি ব্যবসা বাড়ানোর জন্য নরেন্দ্র মোদির সরকার মুদ্রা পরিকল্পনা (পিএমএমওয়াই)-এর শুরুকরা হয়। এই যোজনা শুবিধা পাবে তারাই যারা ব্যাংক গুলির নিয়ম সম্পূর্ণ ভাবে পূরণ করতে না। যারজন্য তার এতো দিন কোনও ঋণ পায়নি। কর্পোরেট নয়, এমন সংস্থাএবং ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্রতম পুঁজির ব্যবসায়ীদের দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হবে। এই যোজনা ফলে দেশের বেকার যুবকদের নতুন নতুন কর্মসংস্থান সুযোগ তৈরি হয়েছে।
লম্বা সুড়ঙ্গ
দেশের তথা এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। চীনকে চাপে রাখতে এবং লাদাকের সাথে সহজ যোগাযোগ স্থাপনে লক্ষ্য এই সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গ তৈরি হলে লাদাখ খুব দূরত্ব পৌঁছানো সম্ভব হবে।
কিসন গঙ্গা হাইড্রোপাওয়ার
পাকিস্তানের প্রতি ভালোবাসার কারণে যেটা গত কংগ্রেস সরকার শুরুই করতে পারেনি, সেটাই মেীদির হাত ধরে শুরু হয়েছে। যার ফলে দেশের বিদ্যুৎ খাতে ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নতুন করে যোগ হবে। তার সাথে গঙ্গার জলে সঠিক ব্যবহার হবে। অবশ্য পাকিস্তান সরকার এই প্রকল্প বন্ধ করার জন্য অনেক কাঠ খোড় পুড়িয়েছিল যেটা কোন কাজে আসেনি।
কৃষিভূমি হেলথ
ভূমিস্বাস্থ্য পত্র বা হেলথকার্ড এই ফলে প্রতিটি কৃষক তার জমি পরিমান অনুযায়ী সরকার থেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতাপেয়ে থাকে। ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী এটি চালু করে। এর ফলে কৃষকরা তাদের ভূমির স্বাস্থ্য এবং উর্বরতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকছে। কৃষিও কৃষক বাঁচাতে ভূমি ব্যবস্থাপনার আমূল সংস্কার শুরু হয়েছে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে।
ফসল বীমা যোজনা চালু
“ফসলবীমা যোজনা”চালুর প্রথম বছরে কৃষকদের ৬৬২৪.৬৫ কোটি রুপি দাবি পরিশোধ করেছে ভারতের বীমা কোম্পানিগুলো।প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি পূরণে বাবদ এই বীমার মাধ্যমে সরকার কৃষকের সাহায্যকরছে। কৃষক দের স্বার্থ রক্ষার তাগিদে ১৩ই জানুয়ারী ২০১৬ সালে ফসল বীমা যোজনা চালু হয়। এইবীমা কৃষকদের জন্য বিশেষ উৎসাহব্যঞ্জক উদ্যোগ।
ইউনিভার্সাল একাউন্ট নম্বর UAI
“ইউনিভার্সাল একাউন্ট নম্বর UAI” ইউনিভার্সাল একাউন্ট হোল্ডারদের জন্য ১ জানুয়ারি থেকে ইউনিভার্সাল একাউন্ট নম্বর বা ইউএনএ বাধ্যতামূলক। এর ফলে কয়েক কোটি শ্রমিকদের ইপিএফ খাতা চালু করে ফান্ড ট্রান্সফার করেছে যারফলে কোনো দুর্নীতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবেনা।
মেক ইন ইন্ডিয়া
বর্তমান সরকারের একটি শিল্প উৎসাহব্যঞ্জক উদ্যোগ মেক ইন ইন্ডিয়া। মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্দেশ্য হল,বহুজাতিক বিদেশি সংস্থা কে ভারতে তাদের পণ্য উৎপাদন করতে উৎসাহিত করা। আর তারীলক্ষ্যে ২০১৪ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। এরফলে ভারত বর্তমান বিশ্বে বৈদেশিক বিনিয়োগ এক পীঠস্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে। যার হাত ধরে ভারত মোবাইল উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। মেক ইন ইন্ডিয়া নামে এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল নির্দিষ্ট খাতে বিপুল পরিমাণ বিদেশি লগ্নি আকৃষ্ট করা। নিম্ন লিখিত খাত গুলোর উপরে মেক ইন ইন্ডিয়া গুরুত্ব দিয়েছে।
অটোমোবাইল
অটোমোবাইল কম্পোনেন্ট
বিমানচালনা
বায়োটেকনোলজি
রাসায়নিক পদার্থসমূহ
নির্মাণ
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ
তথ্য প্রযুক্তি ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়া বিষয়ক ব্যবস্থাপনা
চামড়া
মিডিয়া ও বিনোদন
খনন
তেল এবং গ্যাস
ফার্মাসিউটিক্যালস
বন্দর ও নৌপরিবহন
প্রতিরক্ষা বিষয়ক উৎপাদন
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি
ইলেকট্রনিক সিস্টেম
রেলপথ
নবায়নযোগ্য শক্তি
সড়ক ও জনপথ
বস্ত্র ও গার্মেন্টস
তাপ শক্তি
পর্যটন ও আতিথেয়তা
অনাময়
মহাকাশ গবেষণা
সোলার এনার্জী উৎপাদন
“সোলার এনার্জি উৎপাদন” দেশে যাতে সৌরশক্তি উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি করা যায় তারলক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে যাতে দেশে ১৭৫গিগাওয়াট অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব হয়। তার জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যেমন- সৌর উদ্যান, স্মার্ট সিটি প্রজেক্ট, সৌর প্রতিরক্ষা ইত্যাদি। গত কংগ্রেস সরকার ২০১৩-১৪ সালে সোলার এনার্জি উৎপাদন রেখে গিয়েছিল ৩৩৫০GWS। বর্তমানে তা গিয়ে দাড়িয়েছে ২৫৮৭২ GWS। ৬০টি সৌর শহর তৈরি হচ্ছে। যার বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করবে সৌরশক্তির মাধ্যমে।
সোলার ট্রেন
বিশ্বেরএক নম্বর দূষণ স্থান দিল্লি ছাড়া পেলেও দেশের অন্য অনেক শহর এখন এই তালিকার দশেরমধ্যে রয়েছে। আর এই দূষণ কমাতে প্রয়োজন জীবাশ্ম জ্বালানি উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমানো। আর তার লক্ষ্যে দেশের মোদি সরকার চালু করেছে “সোলার ট্রেন”। ট্রেনটির পুরো ছাদ জুড়ে রয়েছে সোলার প্যানেল | সূর্যের আলো থেকে এনার্জি নিয়েই এই ট্রেন চলবে। যার ফলে দূষণ হবে না। শুধু ট্রেন চলবে না, ট্রেনের ভিতরের আলো, পাখা ইত্যাদি চলবে। ভবিষ্যতের জ্বালানি ব্যবসায়ী জোটে ভারত নেতৃত্ব দিবে এই সোলার এনার্জি মাধ্যমে। যাহা সারা বিশ্বে ওপে,ক’কে ছাড়িয়েযাবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশ্বের তৃতীয়
দেশে বর্তমানে ৬৭৮০ মেগাওয়াটবা ৬.৭৮ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ পরমাণু কেন্দ্র থেকে উৎপাদিতহয়ে থাকে এই পরিমান ৬৩ গিগাওয়াটে উন্নীত জন্য সরকার আরোনতুন ১০ প্রকল্প হতে নিয়েছে। আগামী ২০৩২ সালে মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রা তে পৌছানো যাবে বলে বলা হচ্ছে যদি এর ধারাবাহিকতা থাকে। বর্তমানে মোদি সরকারের নতুন ২৫টিবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার, ফলে দেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশ্বের তৃতীয় স্থানেচলে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার
“প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার” মাধ্যমে মাটির বা অস্থায়ী বাড়ি যাদের আছে এবং দারিদ্র সীমার নীচে থাকা প্রত্যেকেই পরিবার পাকা বাড়ির সুবিধা পেয়ে থাকে। গত ৪ বছরে ২ কোটি পরিবার তাদের নিজের বাড়ি পেয়েছে। ২ কোটি গৃহহীনকে পাকা বাড়ি দিয়েছে আগামী২২ সালের মধ্যে সরকারের লক্ষ্য দেশে সকলকে পাকা ছাদের নিচে আনা।
স্বচ্ছ ভারত
“স্বচ্ছভারত” অভিযানে সাড়া দিয়েছে দেশ, নির্মিত হয়েছে কোটি কোটি শৌচাগার। দেশের ৪০৪১টি শহরের সড়ক এবং পরিকাঠামোকে পরিষ্করণেরকরা করা হয়েছে। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ গান্ধীর জন্মদিনে সূচনা হয়েছিল ভারত সরকার দ্বারা প্রচলিত একটি জাতীয় প্রকল্প স্বচ্ছ ভারত। ২০১৪ সালের ১৫ই আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র স্বচ্ছ ভারত অভিযানের যাত্রা ঘোষণা করেন। ২০১৯ সালের ২রা অক্টোবরে গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকীর মধ্যেএই প্রকল্প সম্পন্ন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সংকীর্ণ রাজনীতির উর্দ্ধে এবং জাতীয়তাবাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে স্বচ্ছ ভারত সফল করা ডাক দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী।
আয়ুস্মান ভারত
২০১৮-১৯সালের বাজেট পেশের দিন আয়ুষ্মান স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্পের ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ২৫ সেপ্টেম্বর দীন দয়াল উপাধ্যায়ের জন্ম দিবসের ২০১৮ আয়ুস্মান ভারত যাত্রা শুরু। এই প্রকল্পটি ন্যাশনাল হেলথ প্রোটেকশন মিশন, প্রতিটি পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা বীমা সুবিধা দেওয়া হবে। এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বীমা প্রকল্প। প্রাথমিক ভাবে প্রায় ১০.৭৪ কোটি পরিবার অর্থ্যাৎ প্রায় ৫০ কোটি মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
খাদ্য সুরক্ষা যোজনা
কেন্দ্রীয় প্রকল্প ২ টাকা কিলো দরে চাল প্রায় ৬ কোটি ১ লাখ মানুষ উপকৃত হচ্ছে।এই রাজ্যেও ২ টাকা কিলো, চাল ও গম কেন্দ্রীয়খাদ্য সুরক্ষা যোজনা চলছে। যেটা খাদ্যশ্রীর ২ টাকা কিলো দরের চালের প্রকৃত মুল্য ৩২.৬৭ টাকা। এর মধ্যে ২৯.৬৭ টাকা নরেন্দ্র মোদি সরকারের অনুদান এবং ২ টাকা দেয় জনতা আর মাত্র ১ টাকা দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার।
প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনা
১২ টাকা দিয়ে ২ লক্ষ টাকার দুর্ঘটনাজনিত এবং বিকলাঙ্গতা বীমা পরিকল্পনা। বছরে মাত্র ৩৩০ টাকায় বিনিময় ২ লক্ষ টাকার জীবন বীমা। পরিবারের একমাত্র বা প্রধান আয় করা ব্যক্তি যদি আচমকা দুর্ঘটনা পড়ে, তবে সেই পরিবার যাতে তলিয়ে না যায় বরং উঠে দাঁড়ানোর পারে, তার জন্যই এই বীমা।
অটল পেনশন যোজনা
২০১৫-১৬-বাজেটে অটল পেনশন যোজনাযাত্রা শুরু। মানুষেরগড় আয়ু আগের থেকে বেড়েছে। কিন্তু মানুষ বেশি দিন বাঁচলে আবার একটি সমস্যা আর তাহলো বেশি দিনের জন্য রসদ যোগাতে হয়। এই সকল প্রবীণ মানুষ গুলোকে যাতে কাজে না যেতে হয় তার জন্য অটল পেনশন যোজনা। সরকার এই প্রবীণ মানুষ গুলোর জন্য মাসে ১০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পযর্ন্ত পেনশন পাওয়ার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা
দেশেরকন্যা সন্তানদের ভবিষ্যৎকে আর উজ্জ্বল ও বিকশিত করার জন্য মোদি সরকার এই যোজনাচালু করেছে। এই যোজনা ‘বেটি বাঁচাও ও বেটি পড়াও’ যোজনার সাথে লিং করা হয়েছে। এই যোজনার দ্বারা মোদি সরকার দেশের কন্য সন্তানদের শিক্ষার হার বাড়াতে এটি অন্যতম প্রচেষ্টা। “বেটি বাঁচাওবেটি পড়াও” কন্যা সন্তানের জন্মহার দিন দিন হ্রাস পাওয়া এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির কার্যকর মোকাবেলায় জন্য এই যোজনা। এই প্রকল্প মূল লক্ষ্য হল কন্যা সন্তানের জন্য কল্যাণমূলক পরিষেবা প্রদানের দক্ষতা বৃদ্ধি তথা সচেতনতা সৃষ্টি। ছেলে এবং ও কন্যা শিশুর মধ্যে অসম অনুপাতের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এবং মহিলাদের ক্ষমতায়ন জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির জন্য এই যোজনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
মোদি সরকারের সাফল্য পর্ব ২য়
পাঠক যদি আপনার মনে হয় এই লেখাটি যে তথ্য আছে তা সাধারণ মানুষের জানা উচিৎ তবে আপনার একটি শেয়ারই পারে সেটা। যদি আপনাদের কারো মনে হয় যে এই লেখাটিতে কোন বিষয় যোগ করার প্রয়োজন বা বাদ গিয়েছে এমন কি ভূল হলে, তবে কমেন্ট করে জানাবেন দয়া করে।
এই পোষ্টের দ্বিতীয় পর্ব দু-দিনের মধ্যে নিয়ে আচ্ছি…….. চোখ রাখন।
লেখাটি একটি গবেষণা মূলক লেখা
লেখক-অভিরুপ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
তথ্যসূত্র-