বঙ্গ বাঙ্গালী রঙ্গে বঙ্গ, তাই বাঙ্গালীর জাতির ইতিহাস পুরোটাই আত্মঘাতী।

আত্মঘাতী বাঙ্গালী

ইতিহাসে আত্মঘাতী জাতির নাম যদি খোজ করা হয়, তবে বধাই বাঙ্গালীর নাম সর্বপ্রথম আসবে। বাঙ্গালীর জাতির ইতিহাস পুরোটাই বিছিন্নতার ইতিহাস। যদি বাঙালীর পরিক্রমণে বের হন, সেই নীরদ চন্দ্র চৌধুরীর ‘আত্মঘাতী বাঙালী’ থেকে ‘লোক রহস্যের বাবু বৃত্তান্ত’ বঙ্কিম চন্দ্রের সব খানেই দেখবেন বাঙ্গালী এক আত্মবিস্মৃত জাতি। এদের দেখে স্বয়ং স্রষ্টা বোধহয় মাঝে, মাঝে অবাক হন। এরা জন্ম সূত্রে কিছু পাক আর না পাক, একটা বিষয় পরিপূর্ণ ভাবেই পেয়ে থাকে তা হল ঘৃনা, বিদ্বেষ, লাঠালাঠি, আর কলহ পূর্ণ মগজ। তবে দেশের বাইরে  অর্থৎ বিদেশিদের সাথে বাঙ্গলীর সম্পর্ক মধুর এবং খুবী উৎসুক পূর্ণ। যদিও এর কিছু সুপ্ত বাসনা পূর্ণ কারণ আছে। অপর দিকে নিজ জাতির সাথে বিরোধপূর্ণ আচরণ করতে এরা‍ খুবি পারদর্শী । এবার পাঠক আপনাদের মনে হতে পারে যে লেখক মনে হয় বিদেশিদের পছন্দ করে না। না, যে কোন জাতির সাথে প্রীতি বিনমিয় বা সৌহার্দ পূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা দোষের কিছু নয়। দুঃখের বিষয় ভয়টা কোথাই জানেন? ঐ সকল বৈহির জাতির সাথে সম্পর্কের আড়ালে বাঙ্গালী জাতি আপন সংস্কৃতি কে ঘৃনা করতে শুরু করেছে। যার ফলে তার আজ নিজ সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে,

বিদেশি সংস্কৃতির প্রতি ঝুকে পড়ছে। এখানে অবাক হবার কিছুই নেই কারণ এর ধারাবাহিকতা অনেক আগ থেকেই শুরু হয়ছে। একটা সময় বাঙ্গালীর কাছে লণ্ডন ছিল তীর্থক্ষেত্র, যদিও সময়ের সাথে সেই তীর্থক্ষেত্রটার পরিবর্তন হয়ে, হয়েছে গ্রীণকার্ড। সমাজে মান-আলা হতে হলে অবশ্যই আপনাকে গ্রীণকার্ড ধারী হতেই হবে। বষ্কিমচন্দ্রের বলে গেছেন, বাঙ্গালী হল  মাতৃভাষা বিরোধী, পর ভাষা পারদর্শী জাতি। তিনি আরো বলছেন, এই বাঙালীর সহজাত প্রতিভা সহজেই প্রভাবিত হয় অন্য জাতির নিষ্ঠীবন পরিতৃপ্তিতে। তাই দেখা যায় বাঙ্গালী যদি ইংরেজী, আরবি এবং হিন্দী বলতে বা বুঝতে  না পারে তবে বড়ই ব্যর্থতা। তাই বলা বাহুল্য এরা সব সময় মুখস্ত বিদ্যায়র ডিগ্রী ধারি, নকলে পারদর্শী, ঈর্ষান্বিত এবং পরশ্রীকাতরতায়ার বলে বলিয়ান। তাই বাঙ্গালী আজ পুরোটাই ‘দূর্বলের কাছে অত্যাচারী সবলের কাছে বিনীত’, অসম্ভব রকমের মিল পাবেন কাঁকড়া প্রজাতির সাথে এদের । বস্তুত বাঙ্গালী স্বভাব বা চরিত্র সহধর্মীর কাছে মুখে হাসি আর ব্যাক পাটে ছুরি।

বঙ্গ বাঙ্গালী রঙ্গে বঙ্গ

আধনিক এই পৃথিবীথে বাঙ্গালী আর  বাঙ্গালী থাকতে চাই না। এর প্রভাব যতটা না অপেক্ষিত অল্প শিক্ষিত বাঙ্গালীদের মধ্যে তার থেকে অধিক শিক্ষিত বাঙ্গালীর ভিতর। আধনিক এই যুগে সবাই এখন একটা গ্লোবাল ভিলেজের মাধ্যে আছে। তার ফলে বাঙ্গালীর চোখে মুখে একটাই স্বপ্ন গ্রীণকার্ডের। এর জন্য বাঙ্গালী তার সব ঐতিহ্য সংস্কৃতি ছাড়তেও কোন দিধা বোধ করবে না। তবে এই গ্লোবাল ভিলেজটা সুদূর আমেরিকাতে। এই গ্রীণকার্ডের পাবার জন্য  অন্য কোন ক্ষেত্রে মিল থাক আর নাই থাক, এই ক্ষেত্রে দুই বঙ্গের বাঙ্গালীর মানুষকতা ১০০% মিল। যদি কেউ এর বিরুদ্ধে কথা বলে তবে মনে হয় যেন বঙ্গ বাঙ্গালী রঙ্গে বঙ্গ হয় যায়। সে হিন্দু হোক আর মুসলিম। যার ফলে আজ মেধাবী বাঙ্গালী দেখেতে আমাদের সুদূর আমেরিকার পানে চেয়ে নীরবে অশ্রুপাত করতে হয়। কি মনে পরে মধু কবির সেই আত্ম বিলাপ কথা গুলো, ” বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে দুগ্ধস্রোতরূপি তুমি মাতৃভূমি স্তনে”  আবার ” পরধন লোভে মত্ত করিনু ভ্রমণ পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি।” অথচ এই বাঙ্গালী দু চোখ মিলিয়া কখন দৃঢ়তর প্রত্যয়ে আত্মপ্রকাশ করে একবারে জন্য দেখল না কি আছে এই বঙ্গে। জাতীয়তাবোধে কাছে বাঙ্গালী বার বার হুচট খেয়েছে। কখন আরব সাম্রাজ্য কাছে আবার কখন ইংরেজদের কাছে। তার ফলে বাঙ্গালী আজ আত্ম পরিচয়হীন একটা জাতিতে পরিণত হয়েছে। বাঙ্গালী আজ অনেক উন্নত করেছ কিন্তু যা হারিয়ে ফেলেছে তা হয়তো কোন দিন ফিরে পাবে না।

অস্তিত্ব শেষে

ইংরেজি, আরবি, শিক্ষিত তুমি হতে পার, কিন্তু তুমি কখনই ইংরেজ, আরব হতে পারবে না। এইটাই চির সত্য। ককিল হবার জন্য কাক যতই পালক পরিবর্তন করুক না কেন, কাক কাকিই থাকবে। কোন কাক ককিল হতে পারবেনা।কি বিশ্বাস হয় না? ঘরের কোনের মধুসূদন দত্ত কথা মনে নাই? ব্যাচারা নিজেকে ককিল রুপে দেখার জন্য কি না করেছিল। ফল সরুপ কি পেলে? স্বপ্ন দেখা ভাল, তবে এমন কোন স্বপ্ন না দেখাই উচিত যাতে নিজের অস্তিত্ব শেষে হয়ে যায়। এক জন গুজরাটি বা কানাডিয়ান যদি ভালো বাংলা বলতে বা পড়তে পারে, তবে কি সে বাঙ্গালি হয়ে যাবে? কখনোই না, সে সব সময় গুজরাটি বা কানাডিয়ানি থাকবে। তেমনি তুমি বাঙ্গালি যতই পশ্চিমা বা মধ্য প্রাচ্যের কালচার নামের ডানা নিজের মধ্যে ধারণ করণ না কেন তুমি বাঙ্গালীই থাকবে। সত্যিকার অথে তোমার কোন লাভই হবে না। বরং তুমি তাদের চোখে বাঙ্গালিই থাকবে। বড্ড বেশি দেরি হয়ে যাবে এখনি মোহভঙ্গ কর আর না হয় তো সবশেষে তোমার অবস্থান মধু কবির মতনই হবে। পৃথিবীর যত মানুষই তার আপন বৃত্তকে অপমান করে রং চং পরিবর্তন করে নিজেকে ময়ুর প্রমাণ করার জন্য ছুটেছে তাদের ফল তেমন একটা শুভকর নয়।

বাঙ্গালী আজ বিচ্ছিন্ন

এখনো পর্যন্ত কোন মনীষী বা ব্যাক্তি বাঙ্গালীকে তার আপন জাতীয়তাবোধে দীক্ষিত করতে পারেনি। কারণ আর কিছুই না, জাতীয়তাবোধে মূল শিকড় তো শুধু ভাষা ওদিয়ে হয় না। জাতীয়তাবোধের জন্য সংস্কৃতি, ভাষ উভাই সমান প্রযোজন। আরো অন্য কারণ আছে খণ্ডি মাতৃদেহ এবং ধার করা কালচার নিয়ে কখনই জাতীয়তাবোধের তৈরি করা য়ায় না। আর এই কারণেই আজ বাঙ্গালী তার আপন সত্তা থেকে আজ বিচ্ছিন্ন। হাজার বছরের বাঙ্গালী কখনোই বা কোন কালেই এক সাথে থাকতে পারেনি। বাঙ্গালী সমাজ সব সময় ছিল শ্রেণী বিভক্ত এবং অসাম্যের পূর্ণ। এর কারণে যারাই জাতিয়বোধের কথা বলেছে তার কোন ভাবেই কোন সময় সফল হতে পারেনি। যার ফলে পরবর্তী প্রজন্ম  একটা বিভেদের অভিশাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেই যাবে। আর তার ফলে কি হবে সব সময় বাঙ্গালি অন্য কোন শক্তির কাছে বশ্যতা শিকার করে, ঐ শক্তির ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি অনুকরণ করে নিজ জাতির কাছে নিজকে শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে একটা আত্মপ্রসাদ লাভ করবে মাত্র। হ্যাঁ, এটাইি আমি গর্বিত বাঙ্গালীর আদশ। সর্বপরি এই একটা বিষয়ে বাঙ্গালি অনেকেই পিছনে ফেলতে পারদশী, সে শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, ধনী কি গরীব। রবি কি কম কষ্টে বলেছে,” রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করনি।”

সংস্কৃতির জন্য বড়ই ভয়ংকর

অফিসের গাড়ি ধরার জন্য একটা স্থানে অপেক্ষ করতাম নিয়মিত। সেখানে আমি একা নয় অনেকেই আমার মতন অপেক্ষা করত। তো যার কারণে অনেকের সাথে একটা ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার মধ্যে এক জন ভদ্র লোক ছিল তিনার সাথেই বেশি কথা হত। মজার বিষয় হল ওনাকে কখনোই দেখেনি বাংলাতে কথা বলতে অন্যর সাথে বা মোবাইলে। কিন্তু আমার সাথে পরিষ্কার বাংলায় কথা বলেন। ওনার এই আচারণে আমি বেশ কৌতুহলী হয়ে ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি কি বাঙ্গালী? যে জবাব পেলাম তা, আমাকে বড়ই অবাক করল,”না আমি মুসলিম” আমি এবার বড়ই চিন্তিত হয়ে পড়লাম আর ভাবতে থাকলাম ওনি কি আমার প্রশ্ন বুঝতে পারেনি? আমি তো ওনার ধর্ম কি জানতে চাই নি। তা হলে এমন উত্তর দিলেন কেন? আমি আবার বলাম আপনি মুসলিম ঠিক আছে। আমি জানতে চাইতেছি আপনি মুসলিম হলেও বাঙ্গালি তো? তিনি অনেকটা বিরক্ত হয়ে বলল, আমি বাঙ্গালি হব কেন? মুসলিমরা একটাই জাতি আর তা হল মুসলিম। আপনার মাতৃভাষা কি তা হলে ? উত্তর এল বাংলা। আমি সে দিনই উপলব্ধ করতে পেরেছিলাম কেন মোতাহের হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, “রুচিবান লোক দশের একজন নয়, দশ পেরিয়ে একাদশ।” “ধর্ম্ম সাধারণ লোকের কালচার, আর কালচার শিক্ষিত, মার্জ্জিত লোকের ধর্ম্ম।” ওনার কথাই আমার চরম অপমান বোধ হচ্ছিলো কিন্তু নিজেকে সমলে নি। মানুষ যখন তার আপন শিখড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, তখন বোধাই আপন সত্তাকে হারিয়ে ফেলে এটাই মনে হয় বড় প্রমাণ। সে যত বড়ই শিক্ষিত আর জ্ঞানি হক, সত্য এটাই মানুষ তার নিজ্যতা হারালে তার আপন সংস্কৃতির জন্য বড়ই ভয়ংকর হতে পারে। ঐ দিনের পর ওনার সাথে আর তেমন কথা হয়নি, মাঝে, মাঝে ওনি কথা বলার জন্য কাছে এসেছেন। কিন্তু আমার বাক্যালাপে মতন কোন রুচি হয়নি।

বাংলার যা কিছু নিজস্বী তা এখনো শেষের পথে

আসলে ব্যাপরটা কি হয়েছে জানেন, এক শ্রেণী মানুষ তার আপন সত্তা থেকে বিচ্ছি্ন্ন হয়ে এখন তারা না পারছে নিজ সত্তাতে ফিরতে, আর না পারছে পুরটাই ত্যাগ করতে। তাই এনাদে কাছে ‘বাঙালি’ বিষয়টা হিন্দুযানী বলেই মনে হয়। কারণ বাংলার যা কিছু নিজস্বী তা এখনো হিন্দুরা ধরে রেখেছে। বাকিরা তাই বাংলাকে হিন্দুর সাথে ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ এলে সামাজিক মিডিয়াতে বাঙ্গালি পরিচয় প্রমানে ধুম পড়ে যায়, সে সাথে ঘৃনাও চলে। আজ এই গুটি কয় এক মানুষের কারণে ‘বাঙালি’ শব্দটা নিদারুন ভাবে বলাৎকার হয়েছে চলেছে। আজ এই পরিস্থির জন্য দায়ী আমরা শিক্ষিতরাই, দেশ ভাগ আর শ্রেনী বিভক্ত সমাজের কথা বলে এড়িয়ে যেতে পারি না। একটু খেয়াল করে দেখুন তো, সাহিত্য জগতে কখনো কি বলা হয় হিন্দু সাহিত্যিক বা হিন্দু লেখক। যদি কেউ বলে থাকে তবে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। কিন্তু মুসলিম সাহিত্যিক বা মুসলিম লেখক এটা অহর, অহর শোনা যায়। এটা আমাদের কাছে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। একবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ঢাকাতে যাবার সময় ফেরি তে একজন যুবকের সাথে পরিচয় হয়। তার সাথে অনেক কথাই হয়, কথার এক পর্যায় যুবকটি সুনীলকে বলেন, পশ্চিম বাংলার হিন্দু লেখকদের মধ্যে আমার আপনার লেখা খুব ভালোলাগে। সুনীল লিখেছেন, সারা জীবন সেকুলার নিয়ে লিখা-লিখির পরেও আমাকে শুনতে হল আমি হিন্দু লেখক। পাঠক, আপনাদের কাছে কি এক বারের জন্য মনে হয় না এই মুসলিম সাহিত্যিক বা মুসরিম লেখক কথা গুলো কারা আনল বা কিভাবে আসল? এই শব্দ গুলি তো আপনা-আপনি আসেনি আবার সাধারণ মানুষও আনেনি, তবে আনল কে? হ্যাঁ, পাঠক এখানেই শস্যের মধ্যে ভূত। কবি, সাহিত্যিক মানেই মনে হবে সেকুলা বা ধর্মনিরপেক্ষ কিন্তু বাস্তবতাটা একটু ভিন্ন। শুধু হিন্দু লেখক বা কবিরাই হয় ধর্মনিরপেক্ষ। যদিও মুসলিম সমাজ থেকে কেউ, কেউ ধর্মনিরপেক্ষ নিয়ে কাজ করেছে। তাদের মধ্যে কবি নজরুল হতে পারে অন্যতম। কিন্তু বর্তমান মুসলিম সমাজ নজরুলকে যতটা না একজন ধর্মনিরপেক্ষ বা সেকুলার কবি বলে, তার থেকে ঢেল একজন মুসলিম কবি বলতে বেশি ভালবাসে। যদিও ঐ সময়ে মুসলিম সমাজ নজরুলকে কাফের বলতে ছাড়িনি। সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসনকে কেউ সাহিত্যিক মীর মশাররফ বলেনা, বলে মুসলিম সাহিত্যিক মীর মশাররফ। পাঠক এখন আপনাদের মনে হতে পারে আমি বোধাই সাম্প্রদায়ীক তাই এমন ভাবে বলছি। আদেও কি এমনট ভেবে আপিনি এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবেন? সত্যকে কি অশিকার করতে পারবেন? আসলে সাহিত্য জগতে এই শব্দগুলোর সংযুক্ত করেছে আপনা আমার প্রিয় কোন না কোন মুসলিম বুদ্ধিজীবী বা লেখকরা। আগেই বলেছি সাধারণ মানুষ বা অন্য পেশার কেউ এই শব্দ যোগ করেনি।

ডিজিটালয় বাঙ্গালী

আসুন আর একটা উদাহরণ দিয়, আপনারা যদি লক্ষ্য করেন, তবে দেখবেন ইতিহাসের সকল জাগায় বলা আছে ইংরেজরা ভারতবর্ষকে ২০০ বছর শাসন করেছে। কি তাই তো? কিন্তু কোথাও বলা হয় না আরবরা ভারতবর্ষকে ৮০০ বছর শাসন করেছে। বলা হয় ‍মুসলিমরা ৮০০ বছর শাসন করেছে। অপর দিকে কোথাও বলা হয় না, খ্রিস্টানরা ভারতবর্ষকে ২০০ বছর শাসন করেছে। কি পাঠক ঠিক বলাম তো? এবার ভাবুন ইতিহাসে আরব শব্দটা জাগায় মুসলিম শব্দটা কারা কিভাবে এবং কি উদ্দশ্যে যোগ করেছে। নিচুই সাধারণ মানুষ এটা করেনি, তা হলে করেছে কারা? ভবুন, ভবুন আপনার ভাবার মাঝেই লুকিয়ে আছে আপনি ভবিষ্যতে ইতিহাসে থাকবেন, না হারিয়ে যাবেন। এখনো আপনার আমার আনেক প্রগতিশীল উচ্চশিক্ষিত বন্ধু আছে। যারা সারাদিন সামাজিক মিডিয়া গুলিতে কথার ফুলঝুড়ি সাজিয়ে চলেছ। তাদের এ সব নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নাই। মাথা ব্যাথা না হওয়া স্বাভাবিক। কারণ সে তো ভাল আছে, সমাজের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নাই সারা দিন কথা চলতেই থাকে ফোনে, চ্যাটে , নেটে, ডেটে, স্কাইপেতে। আজ বাঙ্গালির কালচারে’ দূর্গাপূজা, বিবাহ, সিঁদুর খেলা, নববর্ষ, নবান্ন, মেলা, হোলি, বসন্ত উৎসব, ২১শে ফেব্রুয়ারীর, ১৯ মে এগুলো তথা কথিত প্রগতিশীল কাছে সেকালের।

তাই তারা এটাকে মদ পাটির দ্বারয় ডিজিটালয় করেছে। যে পরিচয়টা হওয়া উচিৎ ছিলো ভাষা, সংস্কৃতি দ্বারায় তা আজ ধর্ম দ্বারায় নির্ধারিত হয়ে বাঙালি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। মানুসের যে পরিচয়টা উচ্চ-নীচ, শ্রেনী-বর্ণ, ধর্ম-জাত, পূর্ব-পশ্চিম, নারী-পুরুষ সব কিছুর উদ্ধে উঠে এক সাথে চলা পথা দেখায় আজ তা আমাদের থেকে বহুদূরে। যারা নিজেদেরকে বাঙ্গালী বলতে লজ্জা পাই এবং যারা বাঙ্গলী বলতে গভবোধ করে উভায়ের জন্য এটা অপমান কর। ঐ সকাল বন্ধুদের বলতে চাই কখনো কি আপনার সন্তানকে ২১ শে ফেব্রুয়ারীর ও ১৯ মে এর কথা বলেছেন? বলেছেন, পৃথিবীর মধ্যে আমরাই শুধু একটা জাতি যারা মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল? যেখানে ছিল না হিন্দু-মুসলিম শুধু ছিল বাঙ্গালী। যে দিন ঐ মানুষ গুলো তাদের পরিচয় দেওয়ার আগে দু-বার চিন্তা করেব না আমি আগে মুসলিম পরি বাঙ্গালি সে দিনই বাঙ্গালি তার হারানো মসনদ আবার ফিরে পাবে। এর পরেও যদি আপনাদে বাঙ্গালি আর ধর্মীয় পরিচয়ের মাঝে সংঘর্ষের দেখা যায় তবে ধরে নিবেন এ জন্মে হয় তো মানব হয়ে গেলেন, কিন্তু ‘বাঙালি’ আর হওয়া হল না। অনেকটা রবি ঠাকুরে চিন্তার বিপরীত।