প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে ভারতের সম্পর্ক: ১৯ জুন বিবিসি বাংলা নিউজ করেছিল ভারতের সাথে প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের অবনতি বিষয় নিয়ে। সেই সংবাদের সূত্র ধরে বাংলাদেশের অজস্র ভূইফুরা নিউজ পোর্টাল অজস্র নিউজ করেছে। প্রতিটি নিউজ পোর্টাল এমনভাবে নিউজ তৈরি করেছে যাতে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে ভারত প্রতিবেশী হিসেবে তার প্রতিবেশীদের সাথে খুব অন্যায় করে চলেছে।
যেহেতু বাংলাদেশের একটা বড় সংখ্যক লোক সেই ৪৭ এর আগে থেকে ভারত বিদ্বেষী ছিল তাদেরই বর্তমান প্রজন্ম নিউজ গুলো লুফে নিয়েছে। এখানে আমি ভারতবিদ্বেষী বলতে বুঝাতে চেয়েছি যারা দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিকে বিশ্বাস করত। প্রায়ই অনেকে বলে থাকে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুরাষ্ট্র। আমার মনে হয় এটা পৃথিবীর সবচাইতে হাস্যকর এবং অবাঞ্ছিত কথা। বাংলাদেশ ভারত কখনোই বন্ধু রাষ্ট্র ছিল না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মনগড়া বক্তব্য দিয়ে এই জিনিসটা বারবার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেও বাংলাদেশের মানুষ সেটা কখনোই হতে দেয়নি বা দেবেনা।
কি আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না? আসুন দেখি কয়টা তথ্য, আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা সাতচল্লিশ সালে ভারতবর্ষের সাথে থাকবে না বলেই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তানের মাধ্যমে। তো ধরে নেয়া যায় ৪৭ সালে বাংলাদেশ ভারত কোন বন্ধু রাষ্ট্র ছিল না। এই 47 সালে নোয়াখালী দাঙ্গায় প্রায় 50000 হিন্দু কে গণহত্যা করা হলো। এই গণহত্যা পাকিস্তানে কেউ এসে করে নাই।
এই বাংলার মাটির সন্তান রাই করেছিল। ১৯৫০ সালের বরিশাল দাঙ্গায় অজস্র হিন্দু হত্যা করা হয়েছিল। সেটাও কিন্তু পাকিস্তানের লোক এসে করে নাই। ১৯৬৪ সালের খুলনা দাঙ্গা অজস্র হিন্দু হত্যা করা হয়েছিল, সেটাও কিন্তু পাকিস্তানিরা করে নাই। ৭১ সালে গণহারে যে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল তার বেশিরভাগই ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের। এই হিন্দু সম্প্রদায় কে চিনিয়ে বা হত্যা করার পিছনে পাকিস্তানের যতটা না ভূমিকা ছিল তার থেকে এই বাংলার মাটিতে সন্তানদের বেশি ভূমিকা ছিল।
৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বর্তমান 2020 সাল পর্যন্ত ছোটখাটো অনেকগুলো সাম্প্রদায়িক হামলা হিন্দুদের উপর করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখিত 92 সালে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা কে কেন্দ্র করে এবং 2001 সালে নির্বাচন পরবর্তী সময় হামলা। উপরে উল্লেখিত এই ঘটনা গুলি বাইরের কেউ এসে করে নাই প্রত্যেকটা ঘটনার সাথে বাংলাদেশের মানুষই সরাসরি জড়িত। কেন হামলা করা হয়েছে? কারণ এদেশে হিন্দুদের না হিন্দুদের দেশ হচ্ছে ভারত।
কিন্তু এই সময় দু’দেশের ক্ষমতায় যে সরকার ছিল তারা কিন্তু বলে গেছে তারা বন্ধু রাষ্ট্র। যদি বন্ধু রাষ্ট্র হয় তাহলে এত দাঙ্গা-হাঙ্গামা হলো কিভাবে? সুতরাং এখানে একটা বিষয় সম্পূর্ণ পরিষ্কার যে আসলে বন্ধুরাষ্ট্র নয় দু দেশের সরকার প্রধানরা এক ধরনের অভিনয় করে গেছেন। 90 দশকে ভারত থেকে যদি চাল না আসতো তাহলে বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে থাকতে। এই বিষয়টা হয়তোবা বর্তমান প্রজন্ম জানে না।
ভারত ওই সময় বাংলাদেশকে যে ধরনের সাহায্য করত এর পিছনে যতটা না ছিল বন্ধুত্ব উদ্দেশ্য তার থেকেও বেশি ছিল রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক উদ্দেশ্যে। কারণ ভারত চাইনি তার দুই পাশে দুই পাকিস্তান সৃষ্টি হোক। কিন্তু বিধিবাম এ ধরনের আগুন চাপা দিয়ে বেশিদিন টিকে থাকা সম্ভব না।
71 সালে মুক্তিযুদ্ধের পরে অস্ট্রেলিয়ার একজন সাংবাদিক পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কে প্রশ্ন করেছিল আপনারা বাংলাদেশের যুদ্ধ করতে গিয়েছেন কিন্তু এত নারী ধর্ষণ করেছেন কেন? তার প্রতি উত্তরে তিনি বলেছিলেন আমরা জানি যত বেশি বাংলাদেশি নারীর মধ্যে পাকিস্তানি বীজ ডুকিয়ে দেয়া যাবে একটা সময় এরাই পাকিস্তানের হয়ে কথা বলবে। কারণ সন্তান কখনো বাপের বিরুদ্ধে যায় না।
ঠিক সেটাই এখন ঘটে চলেছে, বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম 30 লক্ষ বাঙ্গালী হত্যা এবং 2 লক্ষ নারী ধর্ষণের কথা ভুলে গিয়েছে বা তাদেরকে ভুলেয়ে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের যদি কোন রাষ্ট্র ক্ষতি করে থাকে তার তালিকা করা হয় তার প্রথম সারিতে আসে পাকিস্তান। দ্বিতীয় সারিতে আসে চীন। পাকিস্তানের বিষয়ে অনেকেই জানেন কিন্তু চীনের বিষয় অনেকেই জানেন না। চীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হওয়ার আগ থেকেই পাকিস্তানের পক্ষে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে ছিল এটা আমরা সবাই কম বেশি জানি। যেটা জানি না সেটা হল মায়ানমার থেকে যে 12 থেকে 15 লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এই প্রবেশের পিছনে চিন এর সবচাইতে বড় হাত রয়েছে।
এই বিষয়টা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী থেকে সকল ধরনের মিডিয়া কম বেশি জানে। কিন্তু তারা সেটা প্রকাশ করে না বা সামনে আনে না। কেন আনে না সেটা পরে আসছি। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে বাংলাদেশের যদি নতুন কোন শত্রুরাষ্ট্র হয়ে থাকে সেটা হলো সৌদি আরব। অনেকেই এই কথাটি শোনা মাত্রই জ্বলে উঠবেন। দাঁড়ান সে জায়গায় আমি আসছি।
বাংলাদেশে প্রতি বছর অজস্র নারী সৌদি আরবে কাজের উদ্দেশ্যে জান। কিন্তু সৌদি আরবের ধর্মীয় আইন অনুযায়ী যেসব নারীরা বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে কাজ করতে যান তারা মূলত দাসী হিসেবেই যায়। আর সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী দাসীকেযেকোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা সম্ভব।
যার ফলে প্রতিবছর হাজার হাজার বাংলাদেশি নারী নির্যাতিত হয়ে পেটে সন্তান নিয়ে বাংলাদেশের ফিরছে। এই বিষয়টা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী মহল থেকে সকল মিডিয়ায় জানে। কিন্তু তারা এটা প্রকাশ করে না। যদিও মাঝেমধ্যে কিছু মিডিয়া নির্যাতনের খবরগুলো কমবেশি প্রকাশ করে থাকে।
কিন্তু এমন পর্যায়ে চর্চা হয় না যে জনসাধারণ প্রতিবাদ করবে। আদৌতে জনসাধারণও এটা চাইনা যে তারা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কথা বলবে। অনেকের আমার এই বক্তব্যে আপত্তি থাকতে পারে আপনাদেরকে বলব দয়া করে গুগোল এ গিয়ে লিখুন সৌদি আরবে বাংলাদেশি নারী নির্যাতন। আশা করি উত্তর পেয়ে যাবেন। আমি আমার এই লেখার ভিতরে ভিতরে বিভিন্ন সূত্র দিয়ে দিচ্ছি।
এবার আসি প্রতিবেশী দেশ ভারত, যাকে বলা হয় বন্ধু রাষ্ট্র। আদৌ যেটা সম্ভব না। কারণ বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নাগরিক মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে তারা একদিন গজনেহীনের মাধ্যমে ভারত বর্ষ দখল করবে। সেই সুরে সুর মিলিয়ে বাংলাদেশের অনেক মৌলভী অনেক বক্তব্য দিয়েছে সেটা আমরা ইন্টারনেটের কল্যাণে বর্তমানে দেখতে পাই। নিশ্চয়ই আপনার মনে এখন প্রশ্ন যাচ্ছে যে বাংলাদেশের যে সীমান্ত হত্যা হয় সেটা নিয়ে কেন কিছু বলছেন না।
হ্যাঁ দাদা, আমি সেই কথাই আসছে। আমার কাজের সূত্রে বাংলাদেশ বর্ডার সাইটে কমবেশি প্রায়ই যাওয়া পড়ে। তো এই বিষয়টা নিয়ে আমার মনে কিছু কৌতূহল ছিল। সেই প্রথম থেকেই আমি আসলে বিষয়টা নিয়ে অনুসন্ধান করতে থাকি।
অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে আমি আমার উত্তর পেয়ে যায়। আসলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে একটা মোটা সংখ্যক লোক আসে গরু নিতে। তারা এখান থেকে গরু কিনে নিয়ে যায়টা আসলে আপত্তিকর বিষয় না। মূলত এরা গরু কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় মাঠের ভিতর দিয়ে পাশে যে গরু পায় সেটা কেউ নিয়ে যায়। যদি ওই গরুর মালিক সেটা দেখে ফেলে তাহলে প্রতিবাদ করলে ওইখানেই হত্যা বা নির্যাতন করা হয়।
বাকি অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুণ…..