পবিত্র জেরুজালেম প্রতি দূর্বলতা
পৃথিবীর বুকে টিকে আছে এমন একটি নগরী যার পরতে পরতে মিশে আছে লক্ষ হাজার মানুষের রক্তের ফোটা। এক অকল্পনীয় সংখ্যক মানুষের দেহাবশেষ দ্বারা তৈরি হয়েছে এই নগরীর ভিত্তি প্রস্তুত। লাখ লাখ মানুষ হত্যা মধ্য দিয়েই কালে কালে বিভিন্ন রাজা বাদশাহরা এই নগরী নিজেদের কর্তৃত্ব এনেছে, আবার হারিয়ে ফেলেছে। এক অজানা ভালোবাসা থেকেই তৈরি হয়েছে এই নগরীর প্রতি সাধারণ মানুষের এবং রাজা বাদশাদে দূর্বলতা। এই ভালোবাস এবং দুর্বলতা কারণে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিতে পিছপা হয়নি। যুগে যুগে রাজা বাদশা সাধারণ মানুষ সকলেই ছুটেছে এই নগর নিজের করে পাবার জন্য। মজার বিষয় এই নগরী যেদিন থেকে প্রতিষ্ঠিতা লাভ করেছে সে থেকে আজ অবদি এই নগরীর চাহিদা কোন ভাবেই কমে নি, উল্টো দিন দিন বেড়েই চলেছে। কবি, লেখক, শিল্পীরা তদের নিজ নিজ স্থান থেকে এই নগরীকে নিয়ে কলম তুলির আচড়ে তৈরি করেছে এক অসাধারণ ক্যানভাস। যাহা সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যায় নি বরং দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। তাই কবির কল্পনা এবং শিল্পির তুলির আচড়ে মিশে আছে এই নগরী সব জানা অজানা গল্প কাহিনীল চিত্র।
জেরুজালেম কেন বিখ্যাত
সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো যুগে যুগে মানুষের আলোচনার কেন্দ্রে থাকা এই নগরীর মানুষকে কতটা দিয়েছে সেটার থেকে বড় কতটা নিয়েছে। এই নগরী কালে কালে এত বেশি উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে যে, পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোন নগরী আছে বলে আমার মনে হয় না। বিস্ময়কর বিষয় হলো এই নগরী সৃষ্টির পর থেকে অন্তত ৫২ বার বিভিন্ন শাসক দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছে। নগরটি ভাগ্য কুষ্টি ঘাটলে দেখা যায় প্রায় ৪৪ বার নগরটি দখল-পুনর্দখলে খেলা চলছে। বিভিন্ন সময় আশেপাশের দেশ বা জাতি দ্বারা অন্তত ২৩ বার অবরোধের সম্মুখীন হয়েছে। শুধু যে আক্রমণের শিকার বা দখল-পুনর্দখল চলেছে তাই নয় অন্তত দুই-বার সম্পূর্ণ মাটি সাথে মিসে গিয়েছে। বিস্ময়কর বিষয় হলো এই নগরী এখনো বর্তমান, যার বয়স কাল প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছরের বেশি । যদি আলোচনা জন্য বলি এই নগরী টিকে আছে তবে বোধায় সেটা বলা ভূল হবে। নগরী জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। বর্তমান সময়ে এই নগরীকে বলা হয় স্রষ্ট্রার আবাসস্থল, যাহা ২টি দেশের রাজধানী এবং ৩টি ধর্মের মানুসের প্রার্থনালয়। কি পাঠক, এবার তো বুঝতে পেরেছেন আমি কোন নগরীর কথা বলছি? যে নগরী নিয়ে বিশ্ববাসীর এখনো উন্মাদনার শেষ নাই। যার ইতিহাস ঘটলে শুধু রক্তের হোলি ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না, যার প্রতিষ্ঠা লাখ মানুষের হত্যার মধ্য দিয়ে। নামটি তার জেরুজালেমের।
জেরুজালেম দখল
ইতিহাস থেকে জানা যায় এই নগরী প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১১০০ খ্রীষ্টপূর্ব । যার প্রতিষ্ঠাতা ছিল তৎকালীন বাদশাহ ডেভিড (দাউদ) । তবে এই নগরীকে সুসজ্জিত করেছিলেন বাদশাহ ডেভিড এর পুত্র সলোমন (সোলায়মান) । সুসজ্জিত এই নগরীর ইতিহাস বড়ই মর্মান্তিক এবং ট্রাজেডি পরিপূর্ণ তা আমরা উপরে কম বেশি আলোচনা করেছি। বাদশাহ ডেভিড (দাউদ) ছিলেন ইহুদী (বনি ইসরাইল) । প্রথম দিকে এই নগরীকে কেন্দ্র করে রোমান এবং পারসিকদের সাথে ইহুদীদের দ্বন্দ্ব সূত্রপাত শুরু হয়। প্রথম দিকে এটা ছিল ইহুদী বনাম রোমানদের দ্বন্দ্ব। সময়ের সাথে সাথে তা গিয়ে দাড়ায় ইহুদী বনাম খ্রীষ্টানদের দ্বন্দ্ব। রোমানরা মূলত খ্রীষ্টান ছিল, রোমানরায় প্রথম রোমানিয়া জাতিয়বাদ থেকে এই দ্বন্দ্বকে ইহুদী এবং খ্রিস্টান ধর্মের দ্বন্দ্বের রূপ দেয়। ক্রমাগত রোমানদের আক্রমনের কারণে জেরুজালেম একটা সময় ইহুদীদের থেকে দখল করে নেয় রোমানরা অর্থাৎ খ্রিস্টানরা। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে ইহুদিরা জেরুজালেম ক্ষমতা থেকে দূরে থাকতে বাধ্য হয়। মুসলিমরা জেরুজালেম প্রবেশের পূর্বে প্রায় ৫০০ বছর রোমানরা ইহুদীদের জেরুজালেমে প্রবেশ করতে দেয়নি। তাই দেখা যায় এই নগরীর নিয়ন্ত্রণ রোমানরা ধরে রেখেছিল প্রায় ৫০০ বছর । রোমান শাসনের শেষ ভাগে এসে জেরুজালেম মুসলিমরা দখল করে নেয়। ওমর বিন খাত্তাব (হযরত ওমর) দ্বারা প্রথম মুসলিমরা জেরুজালেম দখল করে। ওমর বিন খাত্তাব (হযরত ওমর) জেরুজালেম দখল করায়, প্রায় ৫০০ বছর পর ইহুদিরা জেরুজালেম প্রবেশের অনুমতি পায়।
জেরুজালেম সংকট
জেরুজালেম জয়করার পর হযরত ওমর (রা 🙂 কে খ্রিষ্টান পাদ্রী সফ্রোনিয়াস পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাসএ প্রার্থনা করা কথা বলে। খ্রিষ্টান পাদ্রী সফ্রোনিয়াস তখন বায়তুল মুকাদ্দাস এর দায়িত্বরতছিলেন। তবে সেই সময় হযরত ওমর (রা 🙂 খ্রিষ্টান পাদ্রীর সফ্রোনিয়াস এর পবিত্র বায়তুলমুকাদ্দাস এ প্রার্থনা করার পক্ষে সম্মতি হন নাই। ওমর(রা:)এর ধারণা ছিল যদি সেজেরুজালেমের পবিত্র যদি ঐ স্থানে নামাজ পড়ে তবে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত এই স্থানে মুসলিমরাপরবর্তীতে প্রার্থনা করবে। যার কারণে মুসলিমরা খ্রিষ্টান এবং ইহুদিদের মতো এটাকে পবিত্র স্থান মনে করবে। যদিও পরবর্তীতেবিভিন্ন ইসলামী ইতিহাস বিদদের দাবী ওমর(রা :)সেখানে নামাজ আদায় করেছিল। আর সেই বিশ্বাসেরউপর ভিত্তি করে জেরুজালেম ইহুদি, খ্রিষ্টানদের সাথে মুসলমানদের পবিত্র স্থান রূপ নেয়।হযরত ওমর (রা:) জেরুজালেম দখলের পর প্রায় ৪০০ বছর মুসলিমরা জেরুজালেম কে শাসন করে।মুসলিম শাসনের চারশ বছর পর আবার জেরুজালেম খ্রীষ্টানদের দখলে আসে। খ্রীষ্টানদের দখলথেকে পুনরায় সুলতান সালাহউদ্দিন মুসলিমদের পক্ষে জেরুজালেম দখল করে। কিন্তু সেই দখলদারীত্ব বেশি দিন সুলতান সালাহউদ্দিন বা মুসলিমদের হাতে থাকে নাই। মুসলিমদের দখলেরকিছু দিনের মধ্যে পুনরায় সুলতান সালাউদ্দিন কে পরাজিত করে খ্রিষ্টানরা জেরুজালেমদখল করে নেয়। উল্লেখ্য বিষয় হলো হযরত ওমর (রা:) ইহুদিদের প্রতি যথেষ্ট উদারতার পরিচয় দিয়েছেন কারণ খৃষ্টানদের সময় ইহুদিদের জেরুজালেম প্রবেশের কোন অধিকার ছিল না। ওমর(রা 🙂 জেরুজালেম দখলের পর ইহুদিরা জেরুজালেমে প্রবেশ করতে পার তো। খ্রীষ্টানদের সাথে ইহুদিদের ক্যাচাল লাগার মূল কারণ ছিল ঈসা (আ:)বা যীশু খ্রীষ্ট হত্যা। যীশু খ্রিস্ট কে হত্যা করেছিল ইহুদিরাই। ক্ষমতার এই পালা বদলখেলা চলতেই থাকে খ্রীষ্টান আর মুসলিমদের মধ্যে। তবে এই সময়ের মধ্যে ইহুদীদের কোন খেলছিল না।
ইসরাইল রাষ্ট্রের স্বপ্ন দ্রষ্টা কে
৭০০ সাল থেকে ১০৯৯ সাল পর্যন্ত জেরুজালেম মুসলমানদের দখলে থাকে। এই সময় খ্রিস্টান এবং ইহুদিরা বেশির ভাগি জেরুজালেম আশেপাশে থাক তো। ১০৯৯ সালে জেরুজালেম পুনরায় আবার খ্রিষ্টানদের দখলে চলে যায়। দীঘ ৭৮ বছর পর অথাৎ ১১৮৭ সালে আইয়ুবীয় রাজবংশ জেরুজালেম দখল করে পুনরায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করে। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে জেরুজালেম মিশরের মালিক সুলতান দখল করে নেয়। তার ফলে জেরুজালেম মিশরীয় শাসকদের অধীনে চলে আসে। দীঘ দিন পর খ্রিস্টাব্দ ১৫১৭ দিকে জেরুজালেম উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। তবে ৭০০ শতাব্দী পর থেকে ইহুদিরা সারা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে পালিয়ে বসবাস করতে থাকে। ১৫শ শতাব্দীর শেষ দিকে এসে ইহুদিরা ইউরোপে পা রাখতে শুরু করে। ১৫ শতকের পর থেকে একটা মোটা সংখ্যক ইহুদী ইউরোপ এবং আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বসবাস করতে থাকে। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এর মাধ্যমে এই এলাকা উসমানীয় সাম্রাজ্যের হাত থেকে ব্রিটিশ শাসকদের হাতে চলে আসে। এই ব্রিটিশ শাসনের যাত্রার মধ্য দিয়ে দীঘ উসমানীয় শাসনের অবশান হয়। এই ভূখণ্ড ব্রিটিশরা তাদের অধীনে অধীনস্থ করে নাম রাখে মেন্ডেটরি প্যালেস্টাইন। ব্রিটিশ শাসনের অধীনে এই ভূখণ্ড আসার পর থেকেই ইহুদীরা পুনরায় আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে তাদের নিজস্ব একটি দেশের জন্য। ব্রিটিশ সরকারের কাছে ইহুদিরা তাদের স্বপ্নের দেশ প্রতিষ্ঠা করে দেবার জন্য বার বার আবেদন করতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতা ১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস বালফোর জেরুজালেমকে কেন্দ্র ইহুদী জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে। আর্থার জেমস বালফোর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন ইহুদি রাষ্ট্রের জন্মের সত্যিকারের স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। এরপর আর্থার জেমস বালফোর এই ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যে হাজারে হাজারে ইহুদী ইউরোপ থেকে তাদের স্বপ্ন দেশ গড়ার উদ্দেশ্য জেরুজালেমে আসতে থাকে। কিন্তু সেই কাংখিত ইহুদিরা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঐ সময় অনেক সমস্যা সম্মুখীন হতে হয় ইহুদি এবং ব্রিটিশ সরকারকে। এদিকে ১৯২৩ সালে তুরস্কের নামক দেশের জন্ম হলে ইহুদিরা তাদের নিজেদের দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক ভাবে উদগ্রীব হয়ে ওঠে। যার দরুন ঐ সমস্থ উদগ্রীব ইহুদি নেতারা তাদের ইহুদি ভাইদের প্রতি আহবান জানায় তারা যেন ব্রিটেন, ফ্রান্স, আমেরিকা, জার্মানি, কানাডা, নরওয়ে, পোল্যান্ড, গ্রীস এবং সুইজারল্যান্ড থেকে এসে ঐ ভূখণ্ডে বসবাস স্থাপন করে। ঠিক এই সময় ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করে যদি ইহুদিরা তাদের নিজ মাতৃ ভূমিতে ফিরে আসতে চাই , তবে ব্রিটিশ সরকার ইহুদিদের জন্য ঐ ভূখণ্ড ছেড়ে দেবে। যার ফলে দেখা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ ইহুদি তাদের নিজস্ব দেশ গড়ার লক্ষ্যে ফিরে আসে ঐ ভূমি।
ইসরাইল সেনাবাহিনী
ইহুদীরা ‘হাগানাহ’ নামের একটি বাহিনী গঠন করে ১৯২১ সালের দিকে। এই ‘হাগানাহ’ বাহিনীর পরবর্তী সময়ে ইহুদীদের জন্য নিজস্ব রাষ্ট্র তৈরিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রথম দিকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পর এই ‘হাগানাহ’ বাহিনীই পরবর্তী সময়ে এসে আধা-সামরিক বাহিনী তে রূপান্তরিত হয়। ইসরায়েল জন্মের পর হাগানাহ বাহিনী ইসরাইলের মূল সামরিক বাহিনী তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির কিছু দিনের মধ্যে বেশ সংখ্যক ইহুদি তাদের নিজ দেশ গঠনের উদ্দেশ্য ইউরোপ থেকে ঐ ভূখণ্ড পাড়ি জমায়। যার ফলে ঐ মানুষ গুলোর একটা মোট সংখ্যক মানুষ হাগানাহ বাহিনীতে যোগদান করে। লক্ষ্য যদি ভবিষ্যৎ যুদ্ধের প্রয়োজন পড়ে তবে তারা যেন ইহুদিদের হয়ে যুদ্ধ করতে পারে। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৪৯৮ সালে জাতিসংঘে ইহুদিদের জন্য একটটি নতুন দেশ গড়ার লক্ষ্যে ১৮১ নম্বর প্রস্তাব সংগৃহীত করা হয়। জাতিসংঘের এই প্রস্তাবের মাধ্যমে ঐ ভূমির মালিকনা ৪৫% মুসলিম তথা ফিলিস্তিনিদের, ৫৫% ইসরায়েল তথা ইহুদিদের দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য এই ৫৫% ভূখণ্ডের মধ্যে প্রায় ১৮% মুসলিম এবং ৩% অন্যান্য ধর্মের মানুষের বাস করে। ১৯৪৮ সালের ১৪ ই মে এই সিদ্ধান্ত মধ্য দিয়ে ইহুদিদের স্বপ্নের দেশ ইসরায়েলের জন্ম হয়। সেই স্বাধীন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ডেভিড বেন গুরিয়ন। এই ডেভিড বেন গুরিয়ন দায়িত্বভার গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রায় ২০০০ হাজার বছর পর ইহুদিরা তাদের নিজস্ব একটা ভূমির মালিক আনা বুঝে পায়। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বর্তমান রাশিয়া সব প্রথম ইসরাইলকে ১৯৪৮ সালের ১৭ মে স্বীকৃতির মধ্য দিয়েই স্বাধীন স্বীকৃত দেশ হিসাবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ায় বর্তমান ইসরায়েল। আর এরই ধারাবাহিকতায় ইউরোপের দেশগুলো একে একে স্বীকৃতি দিতে থাকে ইসরায়লকে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দেয় তুরস্ক ১৯৪৯ সালের মার্চ মাসে।
রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাস
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সংকটের মধ্যে লুকিয়ে আছে এই ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাস। তাই দেখা যায় মধ্যপ্রাচ্যের যে কোন ধরনের রাজনীতি সাথে ওতপ্রোতভাবে ইসরায়েলে নাম চলে আসে। ইসরাইলের জন্মের পর থেকে বিভিন্ন আরব রাষ্ট্র এক সাথে মিলিত হয়ে ইসরাইলের উপর আক্রমণ করেছে। তবে সেই আক্রমণকে ইসরায়েলে সামরিক বাহিনী কঠিন ভাবে প্রতিহত করে নিজেদের কে বিশ্বের বুকে একটা শক্তিধর রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। ইসরায়েল স্বাধীনের পর থেকে কয়েকবার আরব রাষ্ট্র গুলো দ্বারা যে আক্রমণের শিকার হয়েছে তা আমাদের পরবর্তী পোস্ট গুলো ধারাবাহিক ভাবে জানতে পারবেন। ইসরাইলকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বর্তমান বিশ্বের প্রায় ১৬১ দেশ কিন্ত বাকি ৩১টি দেশ স্বীকৃতি দেয় নি। যে দেশ গুলো মূলত মুসলিম দেশ তবে ইসরায়েলের প্রতিবেশী দুই দেশ জদান এবং মিশর বেশ আগেই ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। মজার বিষয় বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান সহ যে ৩১ দেশ ইসরায়েলকে স্বী কৃতি দেয়নি তাদের কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই ইসরায়েলের সাথে। তবে প্রতিবেশী দুই আরব দেশের সাথে ইসরায়েল শান্তি চুক্তির মাধ্যমে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ইসরাইলের জন্মের পর প্রথমে নাম হিসাবে বলা হয় ইরেটস অথবা জুডিয়ার কথা এই শব্দ গুলো মূলত ছিল হিব্রু ভাষার । তবে অনেক আলোচনার পর নাম রাখা হয় ‘স্টেট অব ইসরায়েল’। ইসরায়েল নাম রাখার মূল কারণ হল ইসরায়েল শব্দটি হিব্রু এবং আরবী উভয় ভাষায় ব্যবহৃত হয়। আর তার জন্যই ইসরাইল নামটি রাখার সিদ্ধান্ত সব সাকুল্যে গৃহীত করে।