গান্ধারী অভিশাপ

গান্ধারী অভিশাপ: আজও একটু শান্তির খোঁজে গান্ধারীর গান্ধার দেশের মানুষ।

গান্ধারী অভিশাপ: আজও একটু শান্তির খোঁজে গান্ধারীর গান্ধার দেশের মানুষ ছুটে চলেছে। গান্ধার সাম্রাজ্য এখনও আফগানিস্তানে রয়েছে এবং এটি এখন কান্দাহার নামে পরিচিত। আজ গান্ধার একটি বড় অংশ উত্তর পাকিস্তানে এবং কিছু অংশ পূর্ব আফগানিস্তানে।

আফগানিস্তানের অবস্থা আজকাল খুবই খারাপ। কিন্তু আজ যে আফগানিস্তান দেখছেন তা কখনোই এরকম ছিল না। অনেক গবেষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, মহাভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের খুব গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

মহাভারতের ইতিহাস আফগানিস্তানের পেশোয়ার উপত্যকা এবং কাবুল নদী উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত। ২০০১ সালের নভেম্বরে এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছিল যে হাজার হাজার বছর আগে মহাভারতের সাথে আফগানিস্তানের বিশেষ সম্পর্ক ছিল।

শাকুনীর  রাজ্য 

রাজা সুবল 5500 বছর আগে এখানে রাজত্ব করেছিলেন। তার মেয়ের নাম ছিল গান্ধারী যিনি হস্তিনাপুরের রাজা ধৃতরাষ্ট্রের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। গান্ধারীর ভাই ছিলেন শকুনি এবং তার পিতার মৃত্যুর পর গান্ধার রাজ্য ক্ষমতায় আসেন।

গান্ধারী ছিলেন দুর্যোধন সহ 100 ছেলের মা, যারা কৌরব নামে পরিচিত। কিছু লোক এটাও বিশ্বাস করেন যে মহাভারতের যুদ্ধের পর পাণ্ডবদের পরাজয়ের পর কৌরব বংশের অনেক মানুষ গান্ধারে বসবাস শুরু করে।পরে তারা ধীরে ধীরে ইরাক ও সৌদি আরবে চলে যান। তার পর বৌদ্ধধর্ম ছড়িয়ে পড়ার,

জেনে নিন মহাভারতের সাথে আফগানিস্তানের সম্পর্ক কি, গান্ধার কিভাবে কান্দাহার হয়ে গেল
গান্ধার সাম্রাজ্য এখনও আফগানিস্তানে

পাওয়া গেছে মহাভারত আমলের বিমান

এর পর মৌর্য সাম্রাজ্যের রাজারা গান্ধার শাসন করেন। ৭০০ সালে পর আরব আক্রম শুরু হয় যার ফলে সেখান থেকে বৌদ্ধ ও সনাতনী আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যায়। পরে, মোহাম্মদ গজনীও এখানে আক্রমণ করেছিলেন।   11 শতকে গজনী এটি দখল করে।

২০০১ এর পর আফগানিস্তানে যা ঘটেছিল তা ইতিহাস। সে সময় মার্কিন সেনাবাহিনী ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পেতে আফগানিস্তানে প্রচারণা চালাচ্ছিল। এখানে কান্দাহারে, আমেরিকান সৈন্যরা একটি গুহার মধ্যে একটি বড় প্লেন দেখতে পেল। যখন এই বিষয়ে গবেষণা করা হয়েছিল, তখন বলা হয়েছিল এই বিমানটি 5000 বছরের পুরনো। ধারণা করা হয় যা মহাভারতে সময় কালের। লেখাটি এখানে পড়ুন।

 মাত্র ৭০০ বছর আগে এর উত্তরাঞ্চলে গান্ধার মহাজনপদ ছিল, যা ভারতীয় মহাভারত এবং অন্যান্য গ্রন্থে উল্লেখ আছে। মহাভারতের কৌরবদের মা গান্ধারী এবং তাদের মামা শকুনি গান্ধার ছিলেন এই রাজ্যের মানুষ।

গান্ধারীর ক্রোধ ও কৃষ্ণকে অভিশাপ প্রদান

কৃষ্ণের বাক্যে কিয়ৎকাল প্রকৃতিস্থ থাকার পর গান্ধারী তার সম্মুখেই নিজ বস্ত্রে মুখ আবৃত করে বিলাপ করতে থাকেন। শতপুত্রহারা গান্ধারী তার স্বামী, কুন্তী ও পুত্রবধূদের সাথে রণভূমিতে আসেন এবং দিব্যচক্ষে রণভূমির ধ্বংসলীলা দেখে পাণ্ডবদের অভিশাপ দিতে চান। এসময় ব্যাসদেব তাকে শান্ত করেন এবং ভীম তার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাই।

এরপর গান্ধারী সক্রোধে যুধিষ্ঠিরের দর্শনাভিলাষী হন। কম্পিত কলেবরে যুধিষ্ঠির এসে কৃতাঞ্জলিপুটে গান্ধারীর শাপ নিতে প্রস্তুত হন ও বলেন তিনিই তার পুত্রহন্তা এবং তার অভিশাপের যোগ্য। এই বলে যুধিষ্ঠির গান্ধারীর পাদস্পর্শ করতে অবনত হলে গান্ধারী তার চক্ষু আবরণের অন্তরাল থেকে যুধিষ্ঠিরের আঙ্গুলের অগ্রভাগ দেখতে পান। যুধিষ্ঠিরের নখ গান্ধারীর ক্রোধে কুৎসিত হয়ে যায়।

শক্তি থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধ নিবারণ না করায় গান্ধারী কৃষ্ণকে এই বলে অভিশাপ দেন পতিসেবা ফলে অর্জিত পূণ্যের বলে আমি তোমাকে অভিশাপ দিচ্ছি যে আজ থেকে ছত্রিশ বছর পর তুমিও পুত্র, বন্ধু ও স্বজন হারিয়ে বনমধ্যে অতি অপকৃষ্ট উপায়ে নিহত হবে এবং যাদবনারীগণও কুরু ও পাণ্ডব পক্ষীয় নারীদের মত ক্রন্দন করবে। কৃষ্ণ হাসি মুখে এই অভিশাপ গ্রহণ করেন এবং তা যথাকালে কার্যকর হয়।

গান্ধারী শুধু ভগবান কৃষ্ণ কে নয়, অভিশাপ দিয়েছিল তার ভাই শকুনি কেও, “গান্ধার নরেশ আমার ১০০ পুত্র মারা গেছে তোমার কু বুদ্ধিতে”, তোমার গান্ধার দেশ কোনদিন শান্তি থাকবে না !

গান্ধারী অভিশাপ থেকে স্বয়ং ভগবান শ্রী কৃষ্ণ নিজেকে রক্ষা করতে পারেন নি। হাজার হাজার বছর ধরে অভিশাপের বেড়া জালে আটকে থাকা সে দিনের গান্ধার আজকের আফগানিস্থান। আজও একটু শান্তির খোঁজে গান্ধারীর গান্ধার দেশের মানুষ। ৫০০০ বছর আগের অভিশাপ আজও যেন জ্বলন্ত সত্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে।

এর শেষ কোথায় সেটা কারোর জানা নাই। শুধু সময় ও কালে প্রতিক্ষায় এই যাত্র ছুটে চলেছে শান্তির খোঁজে গান্ধারীর গান্ধার দেশের মানুষ।

আর পড়ুন….