এক্সপ্রেসওয়ে : বিশ্বের সবচেয়ে বড় এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হচ্ছে ভারতে। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নিতিন গডকরি ঘোষণা করেছেন যে সরকার বিশ্বের দীর্ঘতম হাইওয়ে অর্থাৎ দিল্লি-মুম্বই এক্সপ্রেস হাইওয়ে নির্মাণ করছে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে গডকরি বলেন, “এক্সপ্রেসওয়েটি ১৩৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এবং জওহরলাল নেহেরু পোর্ট ট্রাস্ট (জেএনপিটি) পর্যন্ত যাবে, কিন্তু এখন, আমরা এটিকে নরিমন পয়েন্টে নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা করছি।”
তাঁর মতে, প্রকল্পটি ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে শেষ হবে এবং ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এক্সপ্রেসওয়ে থাকবে। ১৩৮০ কিমির এই এক্সপ্রেসওয়ে ২০১৯ সালে বানানো শুরু হয় এবং ২০২২ সালের মার্চ মাসে এটি বানানো সম্পূর্ণ হবে।।
বর্তমানে এই এক্সপ্রেসওয়ে টি ৮টি লেনের তৈরি করা হচ্ছে কিন্তু এর পাশে এত পরিমান জায়গা রাখা হয়েছে যাতে করে আরও চারটি লেন বাড়ানো সম্ভব হয়।।
মজার বিষয় এই যে ১২ লেন এর মধ্যে দুটো ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির কথা মাথায় রেখে ইলেকট্রিক বাহনের জন্য তৈরি হচ্ছে। যেখানে বাহন গুলি অটোমেটিক চার্জের মাধ্যমে চলতে পারবে।। এই এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করতে ভারত সরকারের খরচ হচ্ছে প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা।।
চারটি রাজ্য দিয়ে যাবে এই এক্সপ্রেসওয়ে।। হরিয়ানা -৮০কিমি, রাজস্থান-৩৮০ কিমি, মধ্যপ্রদেশ-৩৭০ কিমি, গুজরাট-৩০০ কিমি, মহারাষ্ট্র -১২০ কিমি।।
এক্সপ্রেসওয়ে এর বিশেষত্ব গুলি:-
১. এক্সপ্রেসওয়ের মাঝে কোন টোলপ্লাজা নেই।। শুরুতে এবং শেষে আপনি নির্দিষ্ট টোল কেটে যেতে পারবেন ,মাঝে কোথাও থামতে হবেনা।।
২. এক্সপ্রেসওয়েটির দুপাশে প্লাজা নির্মিত হবে।। যেখানে থাকবে অত্যাধুনিক ফুড কোর্ট থেকে শুরু করে ট্রাক এবং বিভিন্ন গাড়ি পার্কিংয়ের অত্যাধুনিক ব্যবস্থা।। এছাড়াও থাকবে রিসর্ট,রেস্টুরেন্ট।।
৩. থাকছে বিপদের কথা মাথায় রেখে হেলিপোর্ট এম্বুলেন্স সার্ভিস এর ব্যবস্থা। ড্রোনের মাধ্যমে পুরো এক্সপ্রেস ওয়েটি নজরদারির মধ্যে থাকবে এবং কোথাও কেউ বিপদগ্রস্ত হলে তাকে হেলিপোর্ট এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হবে।।
৪. প্রায় কুড়ি লক্ষ গাছ লাগানো হচ্ছে এই পুরো এক্স প্রেসওয়েটির দুপাশে এবং মাঝে।
৫. এটি এশিয়ার প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে যেখানে পশুদের জন্য দুটি পুল নির্মিত করা হয়েছে। একটি রাজস্থানের মুকুন্দরা ও অন্যটি মহারাষ্ট্রের মাথেরণ।।
এই স্থান গুলির অভয়ারণ্য থেকে যখন পশুরা বের হবে তখন যেন তারা এমন ভাবেই পুলটি কে অতিক্রম করতে পারে যেন তাদের কোনো কৃত্রিমতা উপলব্ধ না হয় ঠিক এই কথা মাথায় রেখে পুল নির্মাণ করা হয়েছে।।
এশিয়ার মধ্যে পশুদের জন্য এই ধরনের ফুট ওভারব্রীজ প্রথম এবং এইস্থানে এক্সপ্রেস ওয়েটি মাটির নিচ থেকে এমনভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যাতে পরিবেশ এবং পশুদের ব্যালেন্স কোন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।।
৬. এটি তৈরির ফলে ভারতে প্রতি বছরে প্রায় 300 মিলিয়ন লিটার জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমবে।। যার ফলে পরিবেশ দূষণ ও কমবে।।
৭. এই এক্সপ্রেসওয়েটির কাজে প্রায় 50 লাখ man days work এরকম এম্প্লয়মেন্ট সৃষ্টি হয়েছে।। New India Vision এর অন্যতম এই নিদর্শনের জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই NHAI দপ্তর কে, ভারত সরকারের সফলতম মন্ত্রী নীতিন গদকরিজীকে।। ধন্যবাদ ভারতমালা প্রজেক্টের কান্ডারী প্রধানমন্ত্রী মোদিজিকে।।
কলমে
৮. প্রকল্পের অধীনে দুটি আইকনিক আট লেনের টানেলও নির্মাণ করা হবে।
“এই মহাসড়কটি রাজস্থান, গুজরাট এবং মধ্যপ্রদেশের উপজাতীয় জেলাগুলির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে এই এলাকার উন্নয়ন হবে। মানুষের জন্য অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।”
এক্সপ্রেসওয়ে দিল্লির শহুরে কেন্দ্রগুলিকে করিডরের দিল্লি-ফরিদাবাদ-সোহনা অংশের পাশাপাশি জেওয়ার বিমানবন্দর এবং জওহরলাল নেহরু বন্দরের সঙ্গে মুম্বাইয়ের একটি প্রবাহের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে।
এই মহাসড়কটি রাজস্থান, গুজরাট এবং মধ্যপ্রদেশের উপজাতীয় জেলাগুলির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এটি এই অঞ্চলগুলির জন্য একটি উন্নয়ন হবে এবং মানুষের জন্য অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। দিল্লি-ফরিদাবাদ-সোহনা সেকশনের পাশাপাশি জেওয়ার বিমানবন্দর এবং জওহরলাল নেহেরু বন্দর মুম্বাইয়ে স্পুরের মাধ্যমে মুম্বাইয়ের সাথে সংযুক্ত হবে।
এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প শুরু
এই হাইওয়ে প্রকল্পটি 2018 সালে শুরু হয়েছিল এবং এর অধীনে 09 মার্চ 2019 এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। প্রকল্প সমাপ্ত হওয়ার পর, এই এক্সপ্রেসওয়ের কারণে, জয়পুর, আজমির, কিষানগড়, চিত্তগড়, কোটা, উদয়পুর, উজ্জয়িন, ভোপাল, ইন্দোর, ভদোদরা, আহমেদাবাদ এবং সুরাতের মতো দেশের অনেক অর্থনৈতিক কেন্দ্রের মধ্যে চলাচল আরও ভালো হবে।
এই এক্সপ্রেসওয়ে 1380 কিমি দীর্ঘ। এর নির্মাণের জন্য, রাজ্যগুলিতে 15 হাজার হেক্টরেরও বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
আর পড়ুন…….