এত কাছে ভগবান, তবু কেন অধরা

এত কাছে ভগবান, তবু কেন অধরা – সনাতন সদানন্দ দাশ।

এত কাছে ভগবান, তবু কেন অধরা – সনাতন সদানন্দ দাশ

“এত কাছে রয়েছো তুমি
আরো কাছে তোমাকে যে চাই…”
জ্ঞান হওয়ার পর থেকে গ্রামে দু’জন ধর্মগুরুকে অত্যন্ত নিকট থেকে দেখেছি। গ্রাম সম্পর্কে দাদু হয়, এরকম একজন ধর্মগুরু ও তার স্ত্রীর সঙ্গে ছোটবেলা আমার যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। গ্রামের দু’জন বংশানুক্রমিক ধর্মগুরুকে টপকে গিয়ে বিস্ময়কর জনপ্রিয়তা অর্জন করে, আমার এক জ্ঞাতিভাই। কেবল যদি জনপ্রিয়তার কথা বলি, সেটা তার প্রতি অবিচার করা হবে। হঠাৎ করে ঐ গুরুদেব ভগবান-এ পরিনত হয়ে যায়। গুরুদেবের কল্যাণে হতদরিদ্র জ্ঞাতি-পরিবারটি রাতারাতি সম্পদশালী হয়ে ওঠে।

 

শিষ্যরা পালা করে গুরুদেবের দু’হাতের পালস ধরে বসে থাকে। গুরুদেব যখন সমাধিস্থ হয়, তখন তার হাতের পালস চলে যায়। শিষ‍্যরা বিশ্বাস করে- ‘গুরুদেব পরমেশ্বরে বিলীন হয়ে গেছে’। শিষ্যরা অঝোরে কান্না শুরু করে দেয়,”বাবা কৃপা করুন, এই অসহায় পাতোকদের ছেড়ে চলে যাবেন না।”

গুরুদেব ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকায়। তার দু’হাতের পালস ফিরে আসে। অন্তরীক্ষে তর্জনী তুলে গুরুদেব মুচকি হাসে, “তোদের কান্নায় আমার বারবার ফিরে আসতে হচ্ছে রে! ওরে অধম পাপী-তাপীরা, তোদের ফেলে আমি কি চলে যেতে পারি বল! অধঃপতিত মানবজাতিকে উদ্ধার করতেই না আমার যুগে যুগে এই নররূপ ধারণ- মর্ত‍্যলোকে আগমন…”

 

গুরুদেবের স্পর্শে ছাই হয়ে যায় চিনি। একি যে-ই সে-ই গুরুদেব! সাক্ষাৎ ভগবান! বিষ্ণুর স্বঘোষিত একাদশ অবতার। দূর-দূরান্ত থেকে বহু ধনী ও উচ্চশিক্ষিত লোক এসে গুরুদেবের পদপ্রান্তে গড়াগড়ি যায়। উকিল, অধ্যাপক, সরকারি কর্মকর্তা, ধনী ব্যবসায়ী- এমনকি একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি পর্যন্ত এসে, জরুরী কাজ ফেলে তার ফাইফরমাশ খাটে। কথায় বলে, বাড়ির গরু চটানের ঘাস খায় না। কিন্তু ওই ধর্মগুরুর এমন মহিমা, আমাদের পরিবার এবং গ্রামের আর মাত্র তিনটি পরিবার বাদে, এলাকার ছোট বড় নির্বিশেষে সবাই গুরুদেবকে ‘বাবা’ বলে সম্মোধন করত। এবং সবাই গুরুদেবের নামে অদ্ভুত অলৌকিক সব কল্পকাহিনী প্রচার করে বেড়াতো।

গুরুদেব আমার থেকে বছর ছ’য়েকের বড়। ছোটবেলা থেকে সে আমাকে যথেষ্ট স্নেহ করত। গুরুদেব কখনো আউটডোর গেইমসে অংশগ্রহণ করত না। আমরা যখন মাঠে ফুটবল ও হাডুডু খেলতাম- গুরুদেব দর্শক হিসেবে উপস্থিত থেকে, বাইরে থেকে আমাদের প্রেরণা ও পরামর্শ দিত। তবে সে বর্ষার দিনে, আমার সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা লুডু খেলতো। তার দাবা খেলার নেশা ছিল। সে আমাকে দাবা খেলা শেখানোর চেষ্টা করেছিল, আমার ঐ খেলা ভালো লাগেনি।

 

পঞ্জিকায় গুরুদেবের ছবি ও উৎসবতিথি স্থান পাওয়া কিংবা সে ভগবান-এ পরিণত হওয়ার অব‍্যবহিত পরে, ১৯৯৯ সালে তার সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে- একটি মাঝারি শহরে তার বিরাটাকৃতির আশ্রম-এ, আমি পরপর দু’দিন গিয়েছিলাম। কিন্তু দু’বারই গুরুদেবের স্মার্ট তরুণী সেবিকারা নিরস বদনে জানায়, ভগবান ধ্যানমগ্ন। প্রথম দিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বসে থাকা সত্ত্বেও হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। পরের দিন ভোরবেলা গিয়ে সেবিকাদের বুদ্ধিদীপ্ত ইঙ্গিত উপলব্ধি করতে পেরে, গুরুদেবের ধ‍্যানভঙ্গের অপেক্ষায় বসে না থেকে, ফিরে এসেছিলাম; কেননা আমি বুঝতে পেরেছিলাম – আমার উপস্থিতিকালীন সময়ে গুরুদেবের ধ্যান ভাঙবে না। এবং এরপরে গুরুদেবের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।

গুরুদেবের পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার আমাকে অনুরোধ জানানো হয় যে, আমি যেন গুরুদেবের বিরুদ্ধে কিছু না লিখি, অথবা লোকসমক্ষে তার কোনও বিরূপ সমালোচনা না করি। কারণ তারা ভাল করেই জানে, গুরুদেব যে অলৌকিক ক্ষমতাবলে শিষ্যদের বশীভূত করে রেখেছে, সেই সমস্ত জাদুর কৌশল আমার নখদর্পণে। গুরুদেব ছাই দিয়ে চিনি বানিয়েছে, আমি ছাই দিয়ে রসগোল্লা বানিয়ে দেখিয়েছি।

 

যে সমস্ত গরীব শিষ‍্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া অবিবাহিতা স্মার্ট-সুন্দরী কন্যা আছে, তারা গুরুদেব কর্তৃক অদেশপ্রাপ্ত হয়ে- কন‍্যাদের পড়াশোনায় স্থায়ী ব্যাঘাত ঘটা সত্ত্বেও,তারা গুরুদেবের সেবার উদ্দেশ্যে মেয়েদের আশ্রমে পাঠাতো। বিনিময়ে মেয়েদের পিতামাতারা টুকটাক বকশিশও পেত। গরীব মানুষ, যা পায়- সবই সংসারের কাজে লাগে। সর্বোপরি গুরুদেব দয়ার অবতার। কিন্তু বিপত্তি বাধে, ক্ষমতাসীনদলের এক গুণ্ডা প্রকৃতির ছাত্রনেতা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না যে, তার অপরূপা সুন্দরী প্রেমিকা, মাসের-পর-মাস আশ্রমে থেকে গুরুদেবের সেবা করুক। ছাত্রনেতা একাধিকবার আশ্রমে গিয়ে গুরুদেবের কাছে অনুরোধ জানায়, যেন সে তার প্রেমিকাকে ছেড়ে দেয়। মেয়েটি অতিরিক্ত মেধাবী ও সুন্দরী না হলে হয়তো গুরুদেব ছেড়েও দিতো।

 

বিশাল শিষ্য-উপস্থিতিতে গুরুদেব একদিন ওই ছাত্রনেতাকে ভয় দেখায় ― সে যদি বাড়াবাড়ি করে, তাহলে গুরুদেবের অভিশাপে তার প্রথমে জপ বন্ধ হয়ে যাবে, তাতেও যদি সে সংযত না হয়, তাহলে রক্তবমি করে সে মারা যাবে। ছাত্রনেতা তখন গুরুদেবকে অলৌকিক ক্ষমতা দেখানোর চ‍্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। শিষ্যবৃন্দ উত্তেজিত হয়ে উঠলেও, যখন তারা দেখতে পায়- আশ্রমের বাইরে ছাত্রনেতার বেশ কয়েকজন মুসলিম বন্ধু, আগ্নেয়াস্ত্র-হাতে অবস্থান করছে, তখন শিষ‍্যদের গুরুভক্তি চুপসে যায়; তারা প্রমাদগুনে ঐ ছাত্রনেতার কাছে ক্ষমা চাইতে থাকে।

শেষ পর্যন্ত অপদস্ত হয়ে গুরুদেব মেয়েটিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এরপর থেকেই গুরুদেবের আশ্রমে শিষ্য ও ভক্ত সমাগমে ভাটা লাগে। গুরুদেব দূরবর্তী এলাকায় গিয়ে আশ্রম স্থাপন করে, শিষ্য জোটানোর চেষ্টা করে। দেখতে দেখতে বেশ কিছু শিষ্য জুটেও যায়। কিন্তু অজ্ঞাত শত্রুরা সেখানে রটিয়ে দেয়, সেই ছাত্রনেতা কর্তৃক প্রেমিকা উদ্ধারের কাহিনী এবং তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে, শিষ্য-হৃদয়ে এমন প্রভাব বিস্তার করে, অল্প দিনের মধ্যেই গুরুদেবের নতুন আশ্রমে আর মাছিও পড়ে না।

 

প্রথম জীবনে গুরুদেব ঢাকা শহরে টিউশনি করতো। তখন সে এক মুসলিম ছাত্রীকে প্রেম নিবেদন ও অধিক কিছু করেছিল। দুষ্ট লোকেরা বলে, গুরুদেব ছাত্রীটিকে প্রেগনেন্ট করে ফেলেছিল। গুরুদেব ধর্মান্তরিত হতে চাওয়া সত্ত্বেও ছাত্রীটির বাড়ির লোকেরা, কাষ্ঠখণ্ড দিয়ে পিটিয়ে গুরুদেবের ঠ‍্যাং দু’টো ভেঙে দিয়েছিল। সেই ঘটনার সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়ায় কিনা জানি না, গুরুদেবের ঠ‍্যাং দু’টো ক্রমাগত শক্তি হারিয়ে একদম শুকিয়ে যায় এবং গুরুদেব স্ট্রোক করে অকালে মৃত্যুমুখে পতিত হয়।

আরেকটি ঘটনা ―
আমার থেকে বেশ কয়েক বছরের ছোট নিকটতম প্রতিবেশী একটি ছেলে, চরম দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়া শিখতে পারেনি। কিশোর বয়সে তার মায়ের থেকেও অধিক বয়সী এক প্রতিবেশী বিধবা নারীর সঙ্গে সে অসামাজিক যৌন-সম্পর্কে জড়িয়ে যায় – যাকে সে ঠাকুমা বলে ডাকতো। সে এমন সম্পর্ক; মহিলার দাদা, সেই অসমবয়সী যুগলকে সদলবলে গণধোলাই দিয়েও বিচ্ছিন্ন করতে পারে নি। অল্প বয়সে বিয়ে দিয়েও ঐ ছেলেটিকে পথে আনতে না পেরে, অভিভাবকরা নবপরিণীতা স্ত্রী সহ ছেলেটিকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে দেয়।

 

এরপর দীর্ঘদিন গ্রামের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই। ঘটনাচক্রে ২০১৪ সালে ছেলেটির ছোট ভাইয়ের সঙ্গে দেখা। তার মুখ থেকে এবং গ্রাম থেকে পশ্চিম বঙ্গে আসা আরও কয়েকজনের মারফত যা শুনলাম ― সেই ছেলেটি খালি হাতপায়ে সস্ত্রীক পশ্চিমবঙ্গে এসে, একটি প্রত‍্যন্ত গ্রামে মামার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। অলস স্বভাবহেতু সে তেমন আয়-রোজগার করতে পারছিল না। একসময় এক কান দু’কান করে গ্রামব‍্যাপী প্রচার হয়ে যায় যে, সদ‍্য বাংলাদেশ থেকে আসা অপদার্থ ছেলেটির কিশোরী-স্ত্রী, স্বপ্নযোগে মনসা দেবীকে পেয়ে গেছে ― “তিনি এখন স্বয়ং মা মনসা। ওনার কৃপায় কি না হয়! এই কথা যে বললাম,কারো কাছে প্রকাশ করা উচিত হবে না। যত গুপ্ত তত পোক্ত…”

এই সংবাদ হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে পড়তে থাকে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। প্রণামী হাতে আশীর্বাদ নিতে, অথবা মানতের উপঢৌকন নিয়ে মেয়েটির আশ্রয়স্থানে লোক সমাগম দিনকে দিন বাড়তেই থাকে। ভক্তদের ভিড় সামলাতে, গ্রামটিতে খেলার মাঠ-সদৃশ্য ফাঁকা জায়গা সহ প্রাসাদোপম বসতগৃহ ও জাঁকজমকপূর্ণ মন্দির বানানো হয়েছে। মেয়েটি জাতিতে নমঃশূদ্র। হলে কি হবে, অগণিত বয়োজ্যেষ্ঠ বামুন-কায়েত গিয়ে তার পাদুকায় এমনভাবে কপাল ঘষে, যাকে বলে ছালবাকল উঠে যাওয়ার উপক্রম। মেয়েটির অলৌকিক ক্ষমতার বাহবা দিতেই হয়, কেননা সে হিন্দুজাতির হাজার হাজার বছরের অমানবিক ভেদ-বৈষম্য-অস্পৃশ্যতাকে কান ধরে উঠবস করাতে পেরেছে।

 

মেয়েটির প্রতি কেবল মনসা দেবীর কৃপাই নয়, তার প্রতি ভাগ্যলক্ষ্মীও যথেষ্ট সুপ্রসন্ন। সে নিকটস্থ শহরে ‘মা মনসা প‍্যালেস’ – নাম দিয়ে, সুবৃহৎ ও দৃষ্টিনন্দন সুপারমার্কেট কাম রেস্ট হাউস নির্মাণ করেছে। চমকপ্রদ ব্যবসায়ীক দূরদৃষ্টি। এলাকার উঠতি বয়সী ছেলেমেয়ে এবং পরকীয়ায় আসক্ত প্রাপ্তবয়স্ক জুটিরা, একান্তে সময় কাটানোর জন্য – এত অধিক সংখ্যায় এসে রেস্ট হাউসটিতে ভিড় জমায়, নির্ধারিত গলাকাটা ভাড়ার চেয়েও তিন থেকে চার গুণ অতিরিক্ত অর্থ খরচ করার পর, তাদের ভাগ্যে রূম জোটে। কেন খরচ করবে না, এত নিরাপদ জায়গা আর পাবে কোথায়। দেবী-মাতার ভয়ে প্রশাসন, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল, এমনকি সর্বগ্রাসী ক্লাবের দাদারা পর্যন্ত রেস্টহাউসটির দিকে চোখ তুলে তাকাতে সাহস পায় না। দেবী-মাতার কলকাতায় ফ্ল্যাট কেনা আছে, বাড়ি কেনারও চিন্তাভাবনা চলছে। তবে তার মূল ব্যবসায় যথেষ্ট মন্দা চলছে। গ্রামের নতুন প্রজন্ম শিক্ষিত হয়ে যাচ্ছে। ঘরে ঘরে টেলিভিশন, টাচ মোবাইল। নানা জায়গায় ধর্মগুরুদের অপকর্ম-কেলেঙ্কারি, মানুষ ঘরে বসেই জেনে যাচ্ছে। দেবী-মাতার আখের গোছানো হয়ে গেছে, আর চিন্তা কি!

 

শেষ কথা ―
ভারতবর্ষ পৃথিবীর অপ্রতিদ্বন্দ্বী ভগবান তৈরির ফ্যাক্টরি। এজন্য প্রতিটি হিন্দু গর্বিত। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, ভগবানদেরই যত সুখ-সমৃদ্ধি, ভক্তদের কপালে করোলা ভাজা। যে কারণে পৃথিবীর সমস্ত ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে হিন্দুরাই সবচেয়ে দরিদ্র ও অনুন্নত। একজন স্বনামধন্য ভগবানের জ্ঞতিভাই হয়ে, ঈশ্বর প্রাপ্তির সহজতর কৌশলটিও যদি ফাঁস করে না দেই- সেটা কেমন দেখায়। বগলের নিচে শক্ত কিছু রেখে চেপে ধরুন, দেখবেন হাতের পালস বন্ধ হয়ে গেছে। যাচাই করে দেখেছেন কি, যে ঈশ্বরপ্রাপ্তি কত সহজ! তাহলে এই সমস্ত গুরুদেব নামক ভগবানদের পিছনে এত সময় ও অর্থের অপচয় করছেন কেন? খ্রিস্টান ও মুসলমান ধর্মগুরুরা বাইরে থেকে তাদের সমাজে লোক আনতে পারে। পক্ষান্তরে হিন্দু ধর্মগুরুরা বাইরে থেকে লোক তো আনতে পারেই না, উল্টো তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে হিন্দুরা অন্য ধর্মে চলে যাচ্ছে। যার ফলে দেশে দেশে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।

 

লেখক পরিচিতি
সনাতন সদানন্দ দাশ
সনাতন ধর্মের বৈজ্ঞানিক ভাষ‍্যকার

লেখকে পরবর্তী লেখা পড়তে আমাদের পেজে লাই দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ

আরো পড়ুন…