পাঠক, এই লেখাটি একটি গবেষণা মূলক লেখা। লেখাটি ধারাবাহিক চলবে, পরবর্তী পোস্ট পাবার জন্য আমাদের ফেজবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন, যাতে পোস্ট করলেই আপনারা পেয়ে যান………….।
প্রথম পোস্ট দেখেতে এখানে ক্লিক করুন।
কমিউনিজম চাপিয়ে দেয়া শুরু
প্রথম পোস্টের পরে…………
চীন সাম্প্রতিক সময়ে উইঘুরদের উপর কিছু নীতিমালা নতুন করে সংশোধিত করেছে যার ফলে কিছু ক্ষেত্রে উইঘুর নিষেধাজ্ঞা অনেকটাই শিথিল হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পরেও যে যে ক্ষেত্রে এখনো নিষেধাজ্ঞা বলবোদ তা এবার আমরা দেখব। যে কোন ধরণে আরবীয় ধর্মীয় শিক্ষা পুরো পুরো ভাবে নিষিদ্ধ। চীন সরাকার এমন ভাবে কঠোরতা আরোপ করেছে যাতে বেশির ভাগ মানুষ হজ করতে না যেতে পারে, কিছু সংখ্যক যেতে পারে মাত্র। যারা সরকারি কর্মচারীরা তারা কোন ভাই রোজার মাসে রোজা পালন করতে পারবে না। শুক্রুবার নামজ সময় ইমাম সাহেব খুৎবায় কোন বিষয় আলোচনা করবে তা সরকার ঠিক করে দিয়ে থাকে। যে কোন ধরণে আরব্য পোশাক অথৎ ইসলামি পোশাক যেমন বোরখা, হিজাব সম্পূণ ভাবে নিষিদ্ধ। বাচ্ছাদের নাম রাখার ক্ষেত্রেও রহয়েছে বেশ কড়াকড়। কোন ধরনের আরবীয় নাম রাখা চলবে না। বাচ্ছাদের নাম রাখতে হবে অবশ্যই চীনা নাম। অথৎ নাম কি হবে বাচ্ছার তাহা বলে দিবে চীনা সরকার। দিনের পাঁচ বার নামাজ পড়ার উপরও বিধীনিষেদ্ধ এনেছে। যে কোন খোলা স্থানে নামাজ পড়া চলবে না। যদি কেউ ইসলামের সুন্নত দাড়ি রাখতে চায় তবে তার বয়স অবশ্যই ৫০ বছরে উপরে হতে হবে। সাধরনত ভারত, বাংলাদেশে মুসলিমরা একে অন্যকে দেখলে সালামা দিয়ে থাকে তবে জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুরা সেটা দিতে পরবে না। যে সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উইঘুদের আছে সকল প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আর যেখানে কোন ধমীয় নেতা ভাষণ দেওয় সেখানেই বিশেষ ক্যামেরা দ্বারায় নজরদারি করে থাকে। উইঘুদের কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বা ধর্মীয় দিনে একত্রে আসা এবং যাওয়া চলবে না। সেই সাথে নামাজও পড়তে পরবে না। রোজার মাসে প্রশাসনের লোকেরা প্রতিটি রাস্তার মোড়ে টহলদারি করে থাকে। ঈদের দিন নামাজ পড়ার আগে প্রশাসন প্রত্যেকের পরিচয়পত্র দেখে তবেই নামাজের অনুমতি দিয়ে থাকে।

গত অক্টোবার মাসে চীন সরকার জানিয়েছে তাদের বিভিন্ন বন্দী শিবিরে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ আটোক আছে। যদিও চীন সরকার বলেছে এই শিবির মূলত উইঘুদের বিভিন্ন প্রশিক্ষন দেবার জন্য খুলেছে। তবে যতদূর জানা যাচ্ছে এখানে ১০ লক্ষর অধিক মানুষ আটোক রহয়েছে। যার মধ্যে উইঘুরদের অনেকটা চীনা সরকারে প্রতি আনুগত্য আনার জন্য বিভিন্ন ধরণে নির্যাতন মূল ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। যেটা কে চীন সরকার বলছে প্রশিক্ষন। প্রথমে দিকে সরকারী কমীদের জন্য রোজা রাখা নিষিদ্ধ থাকলেও এখন সকল ছাত্র-ছাত্রীদের কেউ এটা মেনে চলতে হচ্ছে। কোন ধমীয় বই বা আরবী কোন বই প্রকাশ করা যাবে না। আর যদিও কেউ প্রকাশ করতে চায় তবে অবশ্যই সরকারে অনুমতি নিতে হবে। সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে উইঘুরদের বহুদূরে বা অন্য প্রদেশে পাঠিয়ে দেওয়। যাতে করে তারা আলাদা হয়ে যায়। নারীদের চাকরির ক্ষেত্রে একই ধরনে সমস্যা রহয়েছে। এই অঞ্চলে পাকিস্তানির বিভিন্ন উগ্রপন্থীদের আনা গোনার কথা জানা যায়।
যার কারণে পাকিস্তানিদের এই অঞ্চলে হোটেলে থাকার উপর বিশেষ নজরদারি করে থাকে। পুরো চীনে সকলে জন্য সামাজিক মিডিয় ব্যবহারে ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম আছে, যদি সরকারের বিরোরী কোন লিখা বা কথা পোস্ট করা হয় তবে সেটা থেকে আপনার সোস্যাল ক্রেডিট রেটিং কমে যাবে। যার কারণে আপনি ঋণ পাবেনা, দেশের মধ্যে চলাচলে উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে এমন কি জেলও হতে পারে। আর এই নিয়ম গুলো উইঘুরদের উপর ব্যাপক ভাবে কার্যকর হয়ে থাকে। যত সময় পর্যন্ত উইঘুরদের বয়স ১৮ বছর না হবে, তত সময় তারা কোন মসজিদে যেতে পারবে না। কোরান, হাদীস সহ কোন ধরণে ইসলামী জ্ঞান চর্চা করতে পারবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বাধ্যতামূলক রাজনৈতিক সাপ্তাহিক ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে। সশস্ত্র পুলিশ যে কোন সময় স্থানিয় মাদরাসাগুলোতে ইচ্ছা মতন হানা দিয়ে থাকে। নারীর হিজাব এবং পুরুষের দাড়ি রাখা নিষিদ্ধ, যদি কোন ট্যাক্সিচালক বোরকা পরা মহিলাকে উঠায় তবে মোটা টাকা জরিমানা হবে। চাকরি চলে গেছে শুধু নামাজ পড়ার জন্য এমন অনেক উদাহরণ সেখানে রহয়েছে। ২০০৯ সালের দাঙ্গার পর থেকে চীন সরকার বেশ কিছু উইঘুর মুসলিমকে বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দিয়েছে। যারা ঐ দাঙ্গার পর চীন সরকারে নীতির কঠোর সমালোচনা করেছিল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল চীন সরকারে এই নীতির জন্য কঠোর সমালোচনা করেছে। মিডিয়া নীতি চীন সরকারে খুব কঠোর যার কারণে এই নিউজ গুলো খুব কম আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে আসে।

চীন সরকার ভালোই জানে কিভাবে ট্যাকা কমাতে হয়
চীনা কম্যুনিস্ট সরকার ভালোই জানে কিভাবে ট্যাকা কমানোর পথ বেল করতে হয়। এক দিকে রাখাইন আর এক দিকে জিনজিয়াং । ঠিক মায়নমারে রাখাই রাজ্যর মতো চীন ও পাকিস্তান মিলে এই অঞ্চলে তৈরি করছে অর্থনৈতিক জোন। তার বড় উদাহরণ যদি পেতে হয় তবে আপনাকে যেতে হবে জিনজিয়াং এর কাশগড় নগরীতে সেখানে মসজিদ এবং উইঘুরদের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙ্গে তৈরি হচ্ছে পর্যটনদের জন্য বিভিন্ন ধরনে পর্যটন কেন্দ্র। এর ফলে ঐ অঞ্চলে থেকে হাজার হাজার উইঘুরদের দেশের বিভিন্ন প্রদেশে আবাসিক কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এই পাঠিয়ে দেবার জন্য কোন ভাবেই উইঘুরদের কোন জিজ্ঞাসা বা শুনার প্রযোজনী বোধ করে না চীন সরকার। জিনজিয়াং প্রদেশ প্রচুর পরিমানে খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধি চীন সরকার তাই ঐ অঞ্চলে ফাকা করতে চাই। মজার বিষয় হল যদি বলি চিন সরকার উইঘুরদের ফাকা করে সম্পদ আহরণ করতে চাই, তবে সেটা বলা ভূল হবে। কারণ সেখানে বাইরে থেকে হান উপজাতিরা এনে উইঘুরদের সংখ্যালঘু করে দিচ্ছে। এর পিছনে চিন সরকারে অভিমত তারা তাদের বিভিন্ন ধরনে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের যাতে কোন ধরণে সন্ত্রাসী দ্বারয় আক্রান্ত না হয়। পকিস্থান ও চিন মিলে মূলত ঐ অঞ্চলে বিশাল ইকনমিক করিডোর (CPEC) তৈরি করছে।
- যে ইতিহাস হয়নি জানা, টিপু সুলতান কি ইতিহাসের নায়ক, না খলনায়ক?
- রোহিঙ্গা কারা ? কোথা থেকে এসেছে এরা? কেনই বা আজ এদের এমন পরিস্থিতি?
পাঠক, আলোচনার প্রথমেই বলেছিলাম এই অঞ্চল কোন ছোট অঞ্চল না। বর্তমান সৌদি বা ইরানের মতই একটি অঞ্চল। ঘি, দুধের লোভ কে সামলাতে পারে বলেন, অর্থাৎ প্রাকৃতিক সম্পদ, তাই চীনের কাছে এটা অনেকটা লোভনীয় বলাই যেতে পারে। এখানে রহয়েছে প্রচুর পরিমানে খনিজ তেল যেটা চীনের কাছে খুবই গুরুত্বপূণ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা আছে সেটা হল মধ্য এশিয়ার তেলের পাইপ লাইন এবং অথনৈতিক করিডোর। তাই এই অঞ্চল প্রতি সব সময় কমিউনিস্ট দুই ভাই রাশিয় এবং চীনের দরদ বরাবর ছিল। এখান থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ইনকাম হবে। ভূলে গেলে চলবে না জিনজিয়াং চীনা শব্দ যার অর্থ নতুন সীমানা। এ থেকে বুঝতে কষ্ট হয় না চীন আসলে এখানে কি করতে চাই। তাই এই অঞ্চলে উইঘুরদের ওপর নির্যাতন অনেকটা সহী কাজ হয়ে উঠেছে। বেশি তো আর বলতে পারি না কারণ জুকের্বার্গ সহ শত শত বামাতি, জামাতি আবার অনুভূতিতে আঘাত পেতে পারে।
বিশ্ব মিডিয়া আজ চুপ
উইঘুরদের এই নির্যাতন দেখে, মুসলিম জাহানের বড় বড় দেশ, বিশেষে করে পাকিস্থান, তুরস্ক, সৌদি মতো দেশ মুখে কুলুপ এটে আছে, যেন তার কিছুই জানে না। মুসলিম জাহানের নয়নের মনি চীনের পরবর্তী গোলাম পাকিস্থান এবং তুরস্ক এমন ভান করছে যেন উইঘুরদের উপর কোন কিছুই হয়নি। আর মুসলিম বিশ্বের বড় বড় ধর্মীয় নেতার? তিনারও ঘুম দিচ্ছে কারণ এটা চীন যে! এবার একটা বিষয় আপনাদের কাছে পরিষ্কার করছি কোন উম্মার, চুম্মা বিষয় না, পাকিস্থান যেমন বালুচদের উপর নির্যাতন করছে চীন তেমন উইঘুরদের উপর। পাকিস্তানের কোন বালুচী যদি উইঘুরদের সাথে সম্পক রাখে তবে তাদের উপর নির্মম নির্যাতন নেমে আসে। বালুচী আর উইঘুর উভায়ে তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে সেখানে চীন এবং পাকিস্তানের ভূমিকা একই। ইসলাম কোন দিন বিপদে পড়ে না, পড়ে সেই জাতি যারা ইসলামে ছায়া তলে শান্তি খোজে। তার বড় প্রমাণ তো বিশ্বে অহর অহর আছে। বালুচী আর উইঘুর অঞ্চলে কোন আইনের বালাই নাই. যেটা আছে তা সোজা কথা ফাঁসি বা নিখোঁজ।

তথ্যসূত্রের খোজ করছেন? নিচেয় পাকিস্তানের পত্রিকার লিং দিলাম মিলেয়ে নেবেন। গত দীঘ দিন ধরে উইঘুর অঞ্চলে চীনে যে ভয়াবহ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে দেখুন তো মুসলিম উম্মার উনমাদনা চোখে পড়ছে কি না? কোন প্রতিবাদ দেখেছেন? কোন বামাতি বুদ্ধিজীবী কে দেখেছেন মোমবাতি হাতে মিছিল করতে? বা কোথাও কোন বক্তব্য রেখেছে। নবীজীর বা ইসলামে বিভিন্ন সমালোচনা করলে সারা বিশ্ব মুসলিম উম্মা এবং বুদ্ধিজীবীরা যে উনমাদনা শুরু করে সেটা কি দেখেছেন উইঘুরদের জন্য? বিশ্ব মানবাধিকার সংগঠন গুলোও আজ চুপ। আর মিডিয়ার কথা তো বাদিই দিলাম এরা তো সব সময় একপক্ষীয় আচারণ করে থাকে। এদের কাছে পূর্ব তিমুরের বিচ্ছিন্নতাকামীরা হতে পারে স্বাধীনতা কামী, কিন্তু পূর্ব তুর্কিস্তানের বিচ্ছিন্নতাকামীরা হতে পারে না। বিশ্বের অর্থনীতির পরাশক্তি এখন চীন আর চীনের সবচেয়ে বড় বাজার হল এই সকল ইসলামি দেশ। কিন্তু তার সারা দিন ইসলাম উম্মার কথা বলে মুখে ফেনা তুলে দিলেও এই জাগায় কবি নিরব।
পাঠক, এই লেখাটি একটি গবেষণা মূলক লেখা। লেখাটি ধারাবাহিক চলবে, পরবর্তী পোস্ট পাবার জন্য আমাদের ফেজবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন, যাতে পোস্ট করলেই আপনারা পেয়ে যান………….।
[kkstarratings]
প্রথম পোস্টে দেখেতে এখানে ক্লিক করুন।
তথ্যসূত্র :
১। https://apnews।com/0db368402a214799921a05743b7acff7
২। একদম সহি কাগজের সূত্র ও দিলাম https://www।dawn।com/news/1408257
৩। একটু ধনতান্ত্রিক দুনিয়ার তবে পৃথিবীতে সমাদৃত কাগজের সূত্র https://www।washingtonpost।com/world/asia_pacific/former-inmates-of-chinas-muslim-re-education-camps-tell-of-brainwashing-torture/2018/05/16/32b330e8-5850-11e8-8b92-45fdd7aaef3c_story।html?noredirect=on&utm_term=।a5cf703f9545
৪। একই খবর আরো একটি কাগজে https://www।nytimes।com/aponline/2018/05/16/world/asia/ap-as-china-xis-era-mass-internment।html
৫। একটু এনডিটিভি সূত্র https://www।ndtv।com/world-news/were-brainwashed-tortured-former-inmates-of-chinas-muslim-reeducation-camps-1853220
৬। নির্বাসিত উইঘুরদের নিজেদের ওয়েব সাইট থেকে http://www।uyghurcongress।org/en/?cat=228
৭। এই ইউটিউবের ভিডিও তে দেখুন মানুষটির স্বাক্ষাতকার https://www।youtube।com/watch?v=rYHWMUE-a60
৮। https://www.dawn.com/…/chinas-uighur-muslims-struggle-under…
৯। http://www.huffingtonpost.com/…/an-outsiders-inside-look_b_…
১০। https://www.dawn.com/news/1204443