শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক

শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে ভারত – কৃত্তিবাস ওঝা

শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে ভারত। বিজেপির ‘আত্মনির্ভর ভারত’- প্রকল্পের আওতায়, গত দুই বছরে ভারতের অস্ত্র রপ্তানি বেড়েছে ৭০০ শতাংশ। বিগত (২০১৮-২০১৯) অর্থবছরে ভারত ১.৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিদেশে রপ্তানি করেছে ।

 

ভারত কমবেশি ৩০টি দেশে অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী রপ্তানি করেছে। দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য থাইল্যান্ড,মালয়েশিয়া,ইন্দোনেশিয়া,তুরস্ক,শ্রীলঙ্কা,বাংলাদেশ,মিশর,কেনিয়া,জার্মানি,বেলজিয়াম,বাতসোয়ানা,কেনিয়া, ইসরাইল,চিলি,নাইজেরিয়া, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার,ওমান এবং আমেরিকা।

 

ভারতের লক্ষ্য, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্ব-অস্ত্র রপ্তানি বাজারের অন্তত ১২% দখল করা। ‘আত্মনির্ভর ভারত’- বিনির্মাণের স্বার্থে, ভারত সরকার ১০১টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইফেল, ক্ষেপণাস্ত্র, কামান,হালকা হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে ভারী পণ্যবাহী কার্গো বিমান।

 

শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক: অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে দীর্ঘদিন বিশ্বে এক নম্বরে ছিল ভারত। এখনও দুই নম্বরে। ভারতের বেশির ভাগ অস্ত্র আমদানি করা হয় রাশিয়া থেকে। ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসে, ঘোষণা দিয়েছে – তারা ভারতকে শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশ থেকে শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক রাষ্ট্র-এ পরিণত করবে।

 

এই লক্ষ্যে তারা বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে ভারতে এসে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে জয়েন্টভেঞ্চারে অস্ত্র উৎপাদনের আহ্বান জানায়। এই ডাকে সাড়া দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, ফ্রান্স, রাশিয়া প্রভৃতি দেশ- ভারতে এসে প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ বিনিয়োগ করেছে।

‘মেক ইন ইন্ডিয়া’- প্রকল্প ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে, প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ করার জন্য ভারতীয় সংস্থাগুলিকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে টাটা, মহীন্দ্রা, রিলায়্যান্স, আদানির মতো বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী।

শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক

প্রতিরক্ষা শিল্পে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা শিথিল করার পর, ঐ কোম্পানিগুলো গাঁটছড়া বেঁধেছে বিভিন্ন নামজাদা বহুজাতিক প্রতিরক্ষা কোম্পানির সঙ্গে। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত লকহিড কোম্পানি, ভারতের স্বনামধন্য টাটা কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এখন থেকে – আমেরিকার পরিবর্তে ভারতের মাটিতে, সেই বহুল আলোচিত F-16 যুদ্ধবিমানসহ, অন্যান্য অত‍্যাধুনিক জঙ্গিবিমান উৎপাদন করবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে, ভারত যে শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশ থেকে,ধীরে ধীরে অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হতে চলছে, এজন্য কংগ্রেস প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা পি চিদাম্বরম, বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রোশ গোপন রাখতে পারেননি।

 

 

শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক: বিগত দিনে বিদেশ থেকে বেপরোয়া অস্ত্র আমদানি করে, কংগ্রেস সরকার তথা গান্ধী-নেহেরু পরিবার, বিশাল পরিমাণ কমিশন লুটে নিয়েছে। তারমধ্যে রাজীব গান্ধীর সেই কুখ্যাত ‘বোফোর্স কেলেঙ্কারি’ অন্যতম। আন্তানিয়া মাইনো(সোনিয়া গান্ধী)-র ইটালিয়ান পিতৃকুল ও তাদের ঘনিষ্ঠরা এই জঘন্য প্রতিরক্ষা কেলেঙ্কারি থেকে দু’হাতে আর্থিক ফায়দা লুটেছে।

বিদেশ থেকে অস্ত্র আমদানি করে, ঘুষ-কমিশন প্রভৃতি দুর্নীতি ও লুটপাট করার জন্য, কংগ্রেস সরকার ভারতে প্রতিরক্ষা সামগ্রী নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিজেপি সরকারের ‘আত্মনির্ভরশীল ভারত’-প্রকল্পের আওতায় ভারত নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে – পৃথিবীর শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক রাষ্ট্রে পরিনত হলে, কংগ্রেস যদি ফের ক্ষমতায় ফিরেও আসে, তাহলে আর তাদের অস্ত্র আমদানি করে নিজেদের পকেট ভারী করার সুযোগ থাকবেনা। যেকারণে কংগ্রেসের এত রাগ।

 

 

কংগ্রেস তথা গান্ধী-নেহেরু পরিবার কখনোই ভারতের স্বার্থের কথা চিন্তা করে না। কংগ্রেস ও গান্ধী-নেহেরু পরিবার সব সময় ব্যস্ত থাকে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি নিয়ে। তাছাড়া কংগ্রেস ও সেক‍্যুলার দলগুলো পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের এমনভাবে আশ্রয়, প্রশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে – যাতে তারা অবাধে বংশবিস্তার করে, সুদূর ভবিষ্যতে ‘ভারত’-কে পরিনত করতে পারে ‘গ্রেটার পাকিস্তান’-এ।

 

 

ভারতের জনগণ এখন যথেষ্ট শিক্ষিত ও সচেতন হয়েছে; তারা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে পাকিস্তানের পদলেহন করার ঘোরতর বিরোধী। ইতালীয় খৃস্টান সোনিয়া গান্ধী, তার বিষাক্ত নখদন্ত বিস্তার করে, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে – হিন্দু জাতিকে দাবিয়ে রাখার আইনগত ভয়ঙ্কর ফাঁদ পেতেছিল। ভারতীয় জনগণ ভয়কে জয় করে, সোনিয়া গান্ধীর ন্যাক্কারজনক ষড়যন্ত্রের মুখে এমন লাথি মেরেছে, কংগ্রেস পরপর দু’টি লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী দলের মর্যাদা হারিয়েছে।

 

 

লেখক-কৃত্তিবাস ওঝা,ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক।
লেখকের আরো লেখা……